যুদ্ধ প্রস্তুতিতে রাশিয়া-ইউক্রেন

Ukrainইউক্রেনের ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট ওলেকসান্ডার তুর্চিনফ বলেছেন, রাশিয়ার পার্লামেন্টে সামরিক হস্তক্ষেপের প্রস্তাব অনুমোদনের পর দেশটির সামরিক বাহিনীকে পুরো প্রস্তুত অবস্থায় রাখা হয়েছে।
ওদিকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ওবামার সঙ্গে এক টেলিফোন আলাপে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চল ও ক্রাইমিয়ায় সহিংসতা ছড়িয়ে পড়লে নিজ স্বার্থ সংরক্ষণের অধিকার মস্কোর রয়েছে।
তবে ইউক্রেনের প্রধানমন্ত্রী আর্সেনি ইয়াতসেনিউক বলেছেন, তার সরকার মনে করে মস্কো সামরিক হামলা চালাবে না।
তিনি বলেন, ইউরোপিয়ান ও আমেরিকার সহযোগীদের সঙ্গে তাদের কথা হয়েছে এবং রাশিয়ার প্রধানমন্ত্রী দিমিত্রি মেদভেদেভের সঙ্গেও কথা বলার পর তিনি জানিয়েছেন সেনা পাঠানোর বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।
এর আগে ইউক্রেনে রুশ সেনাবাহিনীকে কাজে লাগানোর জন্য প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের এক অনুরোধ অনুমোদন করেছে রুশ পার্লামেন্টের উচ্চ কক্ষ। রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় অবশ্য বলছে, এর অর্থ এই নয় যে ইউক্রেনে রুশ সৈন্য মোতায়েন আসন্ন।
ক্রাইমিয়ায় শান্তি ফিরিয়ে আনতে ওই অঞ্চলের নতুন প্রধানমন্ত্রী সের্গেই আকসিওনভের সাহায্যের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এই অনুমোদন চান রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এর আগেই ইউক্রেন কর্তৃপক্ষ অভিযোগ করে, ক্রাইমিয়ায় ৬ হাজার সেনা মোতায়েন করেছে রাশিয়া।
রাশিয়ার সংসদের উচ্চকক্ষের অনুমোদনের পর ইউরোপসহ আন্তর্জাতিক মহলে উত্তেজনা বিরাজ করছে।
রাশিয়ার রাষ্ট্রপতি ভ্লাদিমির পুতিনের ভাষায়, ইউক্রেনের পরিস্থিতি স্বাভাবিক করবার জন্যই সেনা হস্তক্ষেপের প্রয়োজনীয়তা বোধ করছেন তিনি।
সংসদের অনুমতি পাওয়ার খবর ছড়িয়ে যাওয়ার পর ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা।
সেই আলাপচারিতায় ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে যদি আরো সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে তাহলে রাশিয়া অবশ্যই নিজের দেশের স্বার্থ দেখবে।
ইউক্রেনে রুশ সেনা হস্তক্ষেপের সিদ্ধান্ত হওয়ার আগেই দেশটির নিরাপত্তা বিষয়ক প্রধানের সঙ্গে এক জরুরি বৈঠকের পর সেদেশের সেনাবাহিনীকে সতর্কাবস্থায় রেখেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট তুর্চিনফ।
ইউক্রেনের সশস্ত্র বাহিনীকে যুদ্ধ-সতর্কতা জারি করে সম্পূর্ণ প্রস্তুত রাখার কথা বলেন তিনি।
এ ছাড়া পারমাণবিক শক্তি কেন্দ্র, বিমানবন্দরসহ দেশটিতে কৌশলগত ও অবকাঠামোগত নিরাপত্তা ব্যবস্থাও জোরদার করা হয়েছে।
তিনি জানিয়েছেন, দেশটিতে অগত্যা যদি সেনা আক্রমণ ঘটেই যায়, সেটি সামাল দেয়ার জন্যও আগে-ভাগেই একটি কর্মপন্থাও ঠিক করে রেখেছে দেশটির নিরাপত্তা পরিষদ।
ইউক্রেনের সদ্য ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট ভিক্টর ইয়ানুকোভিচ ক্ষমতায় থাকাকালীন গত নভেম্বরে ইউরোপের সঙ্গে একটি চুক্তি বাতিল করার প্রতিবাদে দেশটিতে যে বিক্ষোভের সৃষ্টি হয়, তারই ধারাবাহিকতায় পতন ঘটে ভিক্টর ইয়ানুকোভিচের।
তাকে ক্ষমতাচ্যুত করার পর থেকেই ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যে সংকট বাড়ছে। এই সংকটকে কেন্দ্র করেই যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মধ্যে স্নায়ুযুদ্ধ যুগের উত্তেজনা আবারো ফিরে আসছে বলেও মনে করা হচ্ছে।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button