বাংলাদেশে ‘নিখোঁজ’ এর ঘটনায় উদ্বিগ্ন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ

HRWহিউম্যান রাইটস ওয়াচ বলছে, ২০১৪ সালের ৫ই জানুয়ারির নির্বাচনের আগে ও পরে বেশ কয়েকশ’ মানুষ বাংলাদেশে নিহত কিংবা নিখোঁজ হয়েছে।
বাংলাদেশে চলমান অবরোধের মাঝে বিএনপি নেতা সালাহউদ্দীন আহমেদের ‘নিখোঁজ’ হওয়ার প্রেক্ষিতে, অতীতের ঘটনাগুলোসহ সব ধরণের নিখোঁজের ঘটনা তদন্তের তাগিদ দিয়েছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ।
‘বিরোধী দলের সদস্য নিখোঁজের ঘটনা তদন্তে ব্যর্থ হওয়ার ইতিহাস রয়েছে বাংলাদেশের সরকারের। আহমেদ নিখোঁজ হওয়ার ঘটনাটি স্বাধীনভাবে তদন্ত করা প্রয়োজন। যা অবিলম্বেই করা প্রয়োজন,’ বলেছেন হিউম্যান রাইটস ওয়াচের এশিয়া বিষয়ক পরিচালক ব্র্যাড অ্যাডামস।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচ বলছে, একজন প্রত্যক্ষদর্শীর দেয়া তথ্য অনুযায়ী, গত ১০ই মার্চ মিস্টার আহমেদকে সর্বশেষ দেখা গিয়েছিল।
এসময় রাজধানী ঢাকার উত্তরার একটি বাসা থেকে নিজেদেরকে পুলিশের বিশেষ বিভাগের সদস্য বা ডিবি পরিচয় দিয়ে মিস্টার আহমেদকে উঠিয়ে নিয়ে যায় বেশকিছু লোক।
তবে পরিবার এবং তার দলের পক্ষ থেকে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি ইঙ্গিত করা হলেও পুলিশ এবং র‍্যাব উভয় বাহিনীই তা অস্বীকার করছে।
সংস্থাটি বলছে, হিউম্যান রাইটস ওয়াচ এবং অন্য মানবাধিকার সংগঠনগুলোও বাংলাদেশে ২০০৭ সাল থেকে এপর্যন্ত বিভিন্ন সময় ‘নিখোঁজ’ হওয়ার ঘটনাগুলো নথিভুক্ত করেছে।
২০১২ সালে নিখোঁজ হওয়া বিএনপি নেতা ইলিয়াস আলীর ভাগ্যে কি ঘটেছিল, সেটি জানাতেও ব্যর্থ হয়েছে কর্তৃপক্ষ।
সংস্থাটি আরও বলছে, ২০১৪ সালের মে মাসে গণ মাধ্যমের ব্যাপক সমালোচনার মুখে নারায়ণগঞ্জে ৭ জনের হত্যার সঙ্গে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটেলিয়নের সম্পৃক্ততার বিষয়টি খতিয়ে দেখার নির্দেশ দেয়া হয়।
শুরুতে এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করলেও পরে এ ঘটনার সাথে র‍্যাবের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচ বলছে, বাংলাদেশে এবছরের শুরু থেকেই চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে বিভিন্ন সহিংসতায় ১৫০ জনেরও মানুষের প্রাণহানি এবং কয়েকশ’ মানুষ আহত হয়েছে আর এ অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে সারাদেশে ধরপাকড় চালিয়ে বিরোধী দলের হাজার হাজার সদস্যকে আটক করেছে সরকার।
২০১৪ সালের জানুয়ারি মাসের সাধারণ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ক্ষমতাসীনদের সঙ্গে বিরোধীদের দীর্ঘদিন ধরে মতানৈক্যের কারণেই বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিবেশ উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে বলে উল্লেখ করেছে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ।
সংস্থাটি বলছে, নির্বাচনের আগে ও পরে বেশ কয়েকশ’ মানুষ দেশটিতে নিহত অথবা নিখোঁজ হয়েছে।
ব্র্যাড অ্যাডামস বলেছেন, ‘বাংলাদেশের কর্তৃপক্ষ অনেক নিখোঁজ হওয়ার ঘটনা নথিভুক্ত করলেও সরকারের পক্ষ থেকে এমন অনেক ঘটনারই কোনও রকম তদন্তের প্রমাণ নেই।
জনগণের কাছে সরকার অঙ্গীকার করলেও এসব ঘটনায় সম্পৃক্ততার দায়ে নিরাপত্তা বাহিনীর কোনও সদস্যকে ধরা হয়নি।’
‘আহমেদের নিখোঁজ হওয়ার ঘটনাটি আরও বড় একটি নিয়মের অংশ হয়ে উঠেছে। দুর্ভাগ্যবশত, এসব ঘটনায় সরকারের সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ অস্বীকার করা এবং এসব ঘটনা তদন্তে অর্থবহ কোনও পদক্ষেপ না নেয়াটাও নিয়মের অংশে পরিণত হয়েছে,’ বলেছেন হিউম্যান রাইটস ওয়াচের এশিয়া বিষয়ক পরিচালক ব্র্যাড অ্যাডামস।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button