নয়াসড়কে নয়ারূপ

মিসবাহ উদ্দীন অাহমদ: সিলেটের ঐতিহ্যবাহী নয়াসড়ক মোড় নতুন রূপ পেয়েছে। দ্বিতীয় মেয়াদে নির্বাচিত হওয়ার পর পূর্বের দেয়া কথা রেখেছেন সিটি মেয়র অারিফুল হক চৌধুরী। মোড়ে এখন শোভা পাচ্ছে নবনির্মিত চত্বর। যেটিতে নান্দনিক সাজের সাজে জুড়ে দেয়া হয়েছে ইসলামিক ক্যালিগ্রাফি।
ক্যালিগ্রাফিটি অারবি বর্ণমালায় অাল্লাহ্ খচিত হয়েছে। গোলাকার অাকৃতির চত্বরটিতে জুড়ে দেয়া হয়েছে অালোকসজ্জাও। খুব শিগগিরই গোলচত্বরটি অানুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করবে নগরভবন কর্তৃপক্ষ।

এর অাগে সিটি কর্পোরেশনের গত মেয়াদে দায়িত্ব পালনকালে সিটি মেয়র অারিফুল হক চৌধুরী চত্বরটিকে নতুনরূপ দেয়ার কথা জানিয়েছিলেন। মেয়র আরিফুল হক চত্বরটিকে উপমহাদেশের প্রখ্যাত আলেমে দ্বীন মাওলানা হোসাইন আহমদ মাদানীর নামে ‘মাদানী চত্বর’ নামকরণে কথাও উল্লেখ করেন তখন। এরই ধারাবাহিতায় চত্বরটিকে নতুনরূপ দেয়া হলো।

উপমহাদেশের স্বনামধন্য ধর্মীয় ব্যক্তিত্ব হোসাইন অাহমদ মাদানীর সাথে প্রাচীনতম নয়াসড়ক জামে মসজিদের অনেকদিনের স্মৃতি বিজড়িত। মূলত একারণেই তাঁর নামে পয়েন্ট নামকরণ করছে সিলেট সিটি কর্পোরেশন। ইতোমধ্যে এ ব্যাপারে কর্পোরেশনের গত পরিষদে সিদ্ধান্তও নেয়া হয়েছে বলে জানাগেছে নগর ভবন সূত্রে।

চত্বরটি নির্মাণের পূর্বে নয়াসড়ক পয়েন্ট প্রশস্থ করা হয়। এর ফলে পয়েন্টটি এখন পূর্বের চেয়ে অনেক বড় হয়েছে। পাশাপাশি কুমারপাড়া পয়েন্ট থেকে চৌহাট্টা পয়েন্ট রাস্তাটিও প্রশস্থ করা হয়।

মেয়র অারিফুল হক চৌধুরী নামকরণের স্বপক্ষে বলেন- ‘ধর্মের প্রচার প্রসার এবং ইসলামের সাম্য সম্প্রীতির বিকাশে এ অঞ্চলের আলেম উলামা কার্যকর অবদান রেখে চলেছেন। এখানকার ইসলামী মূল্যবোধ বিকাশের ইতিহাসে উপমহাদেশের প্রখ্যাত আলেমে দ্বীন মাওলানা হোসাইন আহমদ মাদানীর নাম এখনো ঘরে ঘরে।’

সিলেটের সঙ্গে ছিল মাওলানা হোসাইন অাহমদ মাদানীর আত্মার সম্পর্ক। সেই ১৯২২ সাল থেকে তিনি সিলেটের সঙ্গে সম্পর্কিত হন। প্রথম দিকে একটানা তিন বছর অবস্থান করেন। পরে ১৯৪৭ পূর্ববর্তী সময়ে প্রতিবছর রমজান মাসে সিলেট আসতেন। তাঁর কেন্দ্র ছিল নয়াসড়ক জামে মসজিদ। আজও এই প্রখ্যাত বুজুর্গের স্মৃতি সিলেট নগরীতে সজীব রয়েছে।

মেয়র অারিফুল হক চৌধুরী বলেন, ‘সিলেটে ধর্মপরায়ণ মুসলিমসমাজ সকলেই মাওলানা মাদানীর পবিত্র আবেগের প্রতি সম্মান পোষণ করেন। তাই তাঁর স্মৃতি সংরক্ষণে নয়াসড়ক পয়েন্টকে মাদানী চত্বর নামে চিহ্নিত করতে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।’

এছাড়া সিলেটের ঐতিহ্যের স্মারক ও প্রাচীনতম নয়াসড়ক জামে মসজিদকেও নতুনরূপে সাজাতে চায় সিটি কর্পোরেশন। এ লক্ষ্যে গ্রহণ করা হয়েছে একটি পৃথক পরিকল্পনা। সিলেট নগরীর বিভিন্ন পাড়া-মহল্লাসহ শহরতলির বিভিন্ন এলাকার মুসল্লিরা এখানে নামাজ পড়তে আসেন। কেননা মসজিদের পূর্বদিকে হযরত মানিক পীর (র.) সিটি গোরস্থান অবস্থিত। একারণে এখানে প্রায় প্রতি ওয়াক্ত নামাজের সময় মুসল্লীদের ভিড় থাকে। একারণে মসজিদটি বিশেষ গুরুত্ববাহী। বিগত রমজান মাসে নয়াসড়কে ৭ শতাধিক মুসল্লী একসাথে ইতিকাফে ছিলেন। তাদের সেবার জন্য নিয়োজিত ছিলেন নগরভবন কর্তৃপক্ষ।

নয়াসড়ক মসজিদে আগত মুসল্লীদের অধিকতর সুবিধা প্রদান করতে, মুসল্লীদের নামাজের স্থান সংকুলানে এবং মসজিদ নতুন করে আরোও দৃষ্টিনন্দনভাবে নির্মাণ করতে আগ্রহী সিসিক। এতে সুমহান শান্তির ধর্ম ইসলাম চর্চার স্মৃতিবাহী আরেকটি নান্দনিক, সুদৃশ্য স্থাপনা নগরীতে যুক্ত হবে বলে।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button