প্রীতি প্যাটেলের বিরুদ্ধে কর্মীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহারের অভিযোগ

ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ভারতীয় বংশোদ্ভূত প্রীতি প্যাটেলের বিরুদ্ধে অধস্তন কর্মীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহারের অভিযোগে সরগরম ব্রিটেনের রাজনীতি। এই আবহে প্রীতির দুর্ব্যবহারের আরও একটি ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছে। অভিযোগ, সাড়ে চার বছর আগে তার খারাপ ব্যবহারের কারণে এক মহিলা আমলা চাকরি ছাড়তে বাধ্য হন। তিনি প্রায় আত্মহত্যা করতে যাচ্ছিলেন। এই অভিযোগ প্রীতির অস্বস্তি বাড়ানোর পক্ষে যথেষ্ট। বিরোধী দল লেবার পার্টি প্রীতির পদত্যাগ চেয়ে তার বিরুদ্ধে ওঠা দুর্ব্যবহারের অভিযোগগুলির নিরপেক্ষ তদন্ত দাবি করেছে।

যদিও এত বিতর্ক সত্ত্বেও বৃহস্পতিবার আবারও প্রীতির পাশেই দাঁড়িয়েছেন ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। হাউস অব কমন্সে প্রশ্নোত্তর পর্বে তিনি বলেন, ‘স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দারুণ কাজ করছেন। আমি ওর পাশেই থাকব।’ তার বিরুদ্ধে ক্ষোভ জানিয়ে ব্রিটেনের শীর্ষ স্থানীয় আমলার পদত্যাগে ‘দুঃখ’ প্রকাশ করেছেন প্রীতি।

ঘটনাটি ২০১৫ সালের অক্টোবরে। প্রীতি তখন কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী। অভিযোগ, সেই সময় তিনি কাজ ও পেনশন বিভাগের ওই আমলার সঙ্গে চরম দুর্ব্যবহার করে চাকরি ছাড়তে বলেছিলেন। এমনকি, প্রীতি চিৎকার করে ‘এখান থেকে চলে যাও’, ‘আমার সামনে থেকে দূর হও’-এর মতো কথাও নাকি বলেছিলেন ওই আমলাকে।

প্রথম সারির একটি ব্রিটিশ চ্যানেল দাবি করেছে, প্রীতির ব্যবহারে ওই আমলা এতটাই মর্মাহত হয়েছিলেন, যে অতিরিক্ত ঘুমের ওষুধ খেয়েছিলেন এবং তাকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়েছিল। পরে তিনি প্রীতির বিরুদ্ধে ‘বিনা প্ররোচনায়’ শাসানি, হেনস্থা এবং পক্ষপাতের অভিযোগে আইনি পদক্ষেপের হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন। পরবর্তী সময় ওই আমলাকে ২৫ হাজার পাউন্ড ক্ষতিপূরণ দিয়েছিল ব্রিটিশ প্রশাসন।

প্রীতির বিরুদ্ধে দুর্ব্যবহারের অভিযোগ তুলে গত সপ্তাহে পদত্যাগ করেছেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের স্থায়ী সচিব ফিলিপ রুটনাম। তিনি দাবি করেন, প্রীতি তার অধস্তন কর্মীদের সঙ্গে ‘চিৎকার করেন, গালাগালি দেন’ বলে বেশ কিছু অভিযোগ পেয়েছিলেন। রুটনামের অভিযোগ, প্রীতি ভয়ের পরিবেশ তৈরি করেছিলেন।

প্রীতির বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগগুলি সম্পর্কে ব্রিটিশ প্রশাসন বরাবরই বলে আসছে, তারা সরকারি ভাবে কোনও অভিযোগ পায়নি। যদিও ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বিরুদ্ধে ওঠা দুর্ব্যবহারের অভিযোগগুলি সম্পর্কে ‘বিশদে, দ্রুত ও স্বাধীন’ তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে বরিস জনসন প্রশাসন।

প্রীতির বিরুদ্ধে দুর্ব্যবহারের অভিযোগ তুলে গত সপ্তাহে পদত্যাগ করেছেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের স্থায়ী সচিব ফিলিপ রুটনাম। তিনি দাবি করেন, প্রীতি তার অধস্তন কর্মীদের সঙ্গে ‘চিৎকার করেন, গালাগালি দেন’ বলে বেশ কিছু অভিযোগ পেয়েছিলেন। রুটনামের অভিযোগ, প্রীতি ভয়ের পরিবেশ তৈরি করেছিলেন।

প্রীতির বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগগুলি নিয়ে মুখ খুলেছেন ব্রিটেনের ছায়া স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ড্যানি অ্যাবট। তিনি বলেন, ‘মন্ত্রী এবং আমলাতন্ত্র সম্পর্কে জনসাধারণের যে আস্থা রয়েছে, তা পুনরুদ্ধারে মন্ত্রিসভার নেতৃত্বাধীন তদন্তই যথেষ্ট নয়। তার জন্য নিরপেক্ষ তদন্তেরও প্রয়োজন রয়েছে। প্রীতির বিরুদ্ধে আরও অভিযোগ আমরা পেয়েছি। সেগুলির যদি নিরপেক্ষ তদন্ত না-হয়, তা হলে প্রীতি ও সরকার, দু’টির ভাবমূর্তিই ক্ষুণ্ণ হবে।’ তার মতে, তদন্ত চলাকালীন প্রীতির মন্ত্রিত্ব থেকে সরে দাঁড়ানো উচিত।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button