ফিলিস্তিনে হাজারো শিশুর গণহত্যা
২০০০ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর কি করছিলেন সেটা কি আপনার মনে আছে? হয়তো আপনি একটি শিশু ছিলেন তখন। হতে পারে তখনও আপনার জন্মই হয়নি কিংবা আপনি হয়তো তখন দুনিয়ার হৈচৈ কোলাহলে জড়িত ছিলেন।
মোহাম্মদ দোররাহ তখন ১১ বছরের বালক এবং যদি তার একটি নোটবুক থাকতো তবে ঐদিন তার নোটবুকটি লেখায় পরিপূর্ণ হয়ে যেতো, যাতে সে লিখতোঃ ‘আজ আমরা শরণার্থী শিবির ত্যাগ করি এবং আমাদের পরিবারের জন্য একটি নতুন কার কিনতে মার্কেটে যাই। কিন্তু আমরা এরকম একটি গাড়ি পাইনি, আমার পিতার গাড়ি পছন্দ হয়নি।’
কিন্তু এটা সম্ভব ছিল না কারণ ঐদিন যখন তারা কার মার্কেট থেকে বাড়ি ফিরছিলেন সরকারি ইউনিফর্ম পরিহিত ইসরাইলের সন্ত্রাসী সংগঠনের জঙ্গিরা মোহাম্মদ ও তার পিতা জামালকে গুলি করে হত্যা করে। সেটা ছিল ইসরাইলের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও সন্ত্রাসী রাষ্ট্রটির অন্যতম রক্তপিপাসু শাসক এরিয়েল শিরোনের সন্ত্রাসীদের নিয়ে মুসলিমদের পবিত্র মসজিদ আল আকসাকে অপবিত্র করার দিন তিনেক পরের ঘটনা। ইসলামী উম্মার নীরবতা সত্বেও ফিলিস্তিনিরা এর প্রতিবাদে রাস্তায় নেমে এসেছিল। প্রতিরোধ করেছিল অন্যান্য অনেক ফিলিস্তিনির মতো।
মোহাম্মদ দোররাহ ছিল নিজ দেশের শরণার্থী শিবিরে বসবাসকারী একটি শিশু। অন্যান্য অনেক ফিলিস্তিনি পরিবারের মত মোহাম্মাদের পরিবারও ছিল সুশিক্ষিত। মোহাম্মদ ছিল ভালো ছাত্র, সে একজন শিক্ষক কিংবা পুলিশ হতে চেয়েছিল। সে তার প্রাথমিক শিক্ষা গ্রহণ করেছিল শরণার্থী শিবিরে, যেখানে সে তাদের পরিবারের সাথে বসবাস করত।
ঐদিন নিরস্ত্র অবস্থায় থাকা সত্ত্বেও এমনকি কোন বিক্ষোভে অংশগ্রহণ না করা সত্ত্বেও তাদেরকে ইসরাইলী পোশাক পরিহিত সন্ত্রাসীদের গুলি বর্ষণের শিকার হতে হয়েছিল।
বিশ্ব বিখ্যাত ফটোগ্রাফার কেভিন কার্টার হামলার পর ক্যামেরায় ছবি তুলছিলেন। তার ক্যামেরায় ধরা পরে হামলাকালে কীভাবে জামাল দোররাহ হাত বিস্তৃত করে তার শিশু পুত্রকে গুলি থেকে রক্ষার চেষ্টা করেন শেষ মুহূর্তে।