ইইউ পার্লামেন্ট নির্বাচনে ভোটগ্রহণ শুরু

ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) পার্লামেন্ট নির্বাচন শুরু হচ্ছে আজ। শেষ হবে ২৬ মে। সদস্যভুক্ত দেশগুলোর জনগণ ইইউ পার্লামেন্টে তাদের প্রতিনিধি নির্বাচন করবে। এর মধ্যে যুক্তরাজ্যে ভোটগ্রহণ হবে ২৩ মে। প্রতি পাঁচ বছর পরপর ইইউ পার্লামেন্টের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। তবে এবারের নির্বাচন ঘিরে যুক্তরাজ্যের পরিস্থিতি অন্য যেকোনো সদস্য রাষ্ট্রের চেয়ে আলাদা।
প্রায় তিন বছর আগে এক গণভোটে যুক্তরাজ্যের মানুষ ইইউ জোট ত্যাগের পক্ষে রায় দিয়েছে। অথচ সেই রায় এখনো বাস্তবায়ন করতে পারেনি দেশটির সরকার। এখন সেই ইইউ পার্লামেন্ট নির্বাচনের জন্য জনগণের কাছে ভোট চাইতে হচ্ছে ব্রিটিশ রাজনীতিকদের। ফলে এবারের নির্বাচনটি যুক্তরাজ্যের ভোটার এবং প্রার্থী সকলের জন্যই এক বিব্রতকর পরিস্থিতির জন্ম দিয়েছে।

এই নির্বাচনের আগেই ব্রেক্সিট বাস্তবায়ন করে নির্বাচনে অংশ নেওয়া এড়াতে আপ্রাণ চেষ্টা করেছিলেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে। কিন্তু তিনি সংসদে ব্রেক্সিট চুক্তি পাশ করাতে ব্যর্থ হয়েছেন। ফলে গত ২৯ মার্চ ইইউ থেকে যুক্তরাজ্য বেরিয়ে যাওয়ার কথা থাকলেও তা পিছিয়ে ৩১ অক্টোবর করা হয়েছে। যে কারণে বাধ্য হয়ে যুক্তরাজ্যকে ইইউ পার্লামেন্ট নির্বাচনে অংশ নিতে হচ্ছে -যা দেশটির ইতিহাসে একটি বড় অঘটন হিসেবে স্মরণীয় হয়ে থাকবে।
ইইউ নির্বাচন ঘিরে প্রধান দুই দলের গৃহবিবাদও নতুন রূপ নিয়েছে। ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ দলীয় সাবেক ডেপুটি প্রধানমন্ত্রী বর্ষীয়ান রাজনীতিক মাইকেল হ্যাসেলটাইন বলেছেন, এবার তিনি নিজ দলীয় প্রার্থীকে ভোট দেবেন না। ইইউতে থাকার পক্ষের কোনো প্রার্থীকে তিনি ভোট দেবেন। এ নিয়ে তুমুল বিতর্কের মুখে গত সোমবার তাঁকে দল থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়। অন্যদিকে বিরোধী দল লেবার পার্টির বর্ষীয়ান রাজনীতিক মার্গারেট হজও একই ধরনের বক্তব্য দিয়ে বিতর্ক ছড়িয়েছেন। তিনি দলীয় নেতা-কর্মীদের কৌশল অবলম্বন করে ব্রেক্সিটবিরোধী প্রার্থীকে বিজয়ী করার পরামর্শ দিয়েছেন। এ কারণে তাঁকে দল থেকে পদত্যাগের দাবি উঠেছে।
জরিপ বলছে, কট্টরপন্থী ব্রেক্সিট পার্টি সবচেয়ে এগিয়ে আছে। তাদের অবস্থান ৩২ শতাংশ। এর পরে ২২ শতাংশ নিয়ে লেবারের অবস্থান। আর ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টি ও লিবারেল ডেমোক্র্যাট দলের সমর্থন ১৫ শতাংশ করে। ইইউ পার্লামেন্টে মোট ৭৫১ জন প্রতিনিধি নির্বাচিত হন। এর মধ্যে যুক্তরাজ্যে থেকে নির্বাচিত হয় ৭৩ জন।
ব্রিটিশ সরকারের তরফ থেকে এখনো দাবি করা হচ্ছে, সরকার দ্রুত ব্রেক্সিট বাস্তবায়নের চেষ্টা করছে। হয়তো নির্বাচনে বিজয়ী যুক্তরাজ্যের প্রতিনিধিদের শপথ নাও নিতে হতে পারে। প্রসঙ্গত, জুলাই মাসের শুরুতে ইইউ পার্লামেন্ট নির্বাচনে বিজয়ীদের শপথ অনুষ্ঠিত হবে।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button