বর্ণবাদবিরোধী আন্দোলনের ইতিহাসে মাইলফলক

জর্জ ফ্লয়েডের হত্যাকারী ডেরেক চৌভিন দোষী সাব্যস্ত

যুক্তরাষ্ট্রের মিনেসোটায় জর্জ ফ্লয়েড হত্যা মামলায় পুলিশ সদস্য ডেরেক চৌভিনকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। ১২ সদস্যের জুরির একটি প্যানেল মঙ্গলবার মামলার রায় ঘোষণা করেন। যুক্তরাষ্ট্র তথা বিশ্বের বর্ণবাদবিরোধী আন্দোলনের ইতিহাসে এই রায় একটি মাইলফলক হয়ে থাকবে।
ফ্লয়েডকে হত্যায় পুলিশ কর্মকর্তা চৌভিনের বিরুদ্ধে আনা তিনটি অভিযোগই আদালতে প্রমাণ হয়েছে। ফলে চৌভিন ৪০ বছর কারাদণ্ডাদেশ পেতে পারেন বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো। চৌভিনকে এখন জেল হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।
গত বছরের মে মাসে সড়কে ফ্লয়েডের ঘাড়ে চৌভিনের হাঁটু গেড়ে বসে থাকার ভিডিও সাড়া বিশ্বে সমালোচনার ঝড় তুলেছিল। তখন ফ্লয়েডকে বলতে শোনা যায়, ‌‘আমি আর শ্বাস নিতে পারছি না’। এরপরই যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বজুড়ে শুরু হয় ব্যাপক বর্ণবাদবিরোধী আন্দোলন।
ফ্লয়েডের মৃত্যুর পর তার পরিবারের করা মামলার তিনটি অভিযোগেই মঙ্গলবার মিনেসোটার হেনেপিন কাউন্টি আদালত চৌভিনকে দোষী সাব্যস্ত করেছেন। এই অভিযোগগুলো হলো ‘সেকেন্ড ডিগ্রি’ অনিচ্ছাকৃত খুন, ‘থার্ড ডিগ্রি’ খুন এবং নরহত্যা।
রায় ঘোষণার পর হেনেপিন কাউন্টি আদালত কক্ষ থেকে হাতকড়া পরিয়ে কৃষ্ণাঙ্গ জর্জ ফ্লয়েডের হত্যাকারী হিসেবে দোষী সাব্যস্ত এবং বহিষ্কৃত পুলিশ কর্মকর্তা চৌভিনকে জেল হেফাজতে নিয়ে যাওয়া হয়। চৌভিনের দাবি, সে তার পুলিশ প্রশিক্ষণের ব্যবহার করেছে।
রায় ঘোষণার পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন জর্জ ফ্লয়েডের পরিবারের সঙ্গে কথা বলেছেন। শিগগিরই তিনি হোয়াইট হাউস থেকে এ নিয়ে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেবেন বলে জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যমগুলো।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ও সাবেক মার্কিন ফার্স্ট লেডি মিশেল ওবামা এই রায়কে স্বাগত জানিয়েছেন। তবে আরও বলেছেন, সতিক্যারের ‌‘ন্যায়বিচার’ শুধু একটি মামলার রায় দিয়ে বিবেচনা করলে হবে না।
জর্জ ফ্লয়েড হত্যাকাণ্ডের পর শুধু যুক্তরাষ্ট্র নয় বিশ্বজুড়ে বর্ণবাদবিরোধী আন্দোলন শুরু হয়। তখন সবচেয়ে বেশি বিক্ষোভ হয়েছে যুক্তরাজ্যে। তাইতো রায় ঘোষণার পরপরই ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনও ফ্লয়েড হত্যাকাণ্ডের রায়কে স্বাগত জানিয়েছেন।
রায় ঘোষণার পর এর প্রতিক্রিয়ায় এক টুইটার বার্তায় ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী লিখেছেন, ‘জর্জ ফ্লয়েডের মৃত্যুতে আমি হতবাক হয়েছিলাম এবং এই রায়কে স্বাগত জানাই। জর্জ ফ্লয়েডের পরিবার এবং বন্ধুদের সঙ্গে রয়েছি আমি।’

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button