ঈদুল ফিতর: আমাদের জাতীয় জীবনে এর প্রভাব

এস.এম রুহুল আমীন: ঈদুল ফিতর শব্দটি আরবি। শব্দটি মিলেমিশে একাকার হয়ে গেছে আমাদের ভাষা ও সমাজ সংস্কৃতির সাথে। ঈদুল ফিতর একটি যৌগিক পরিভাষা যা ঈদ ও ফিতর শব্দের সংমিশ্রণে গঠিত। ঈদ শব্দের শাব্দিক অর্থ বার বার ফিরে আসা। অবশ্য ঈদ শব্দটি এখন আমাদের সমাজে আনন্দ বা উৎসব অর্থে প্রসিদ্ধি লাভ করেছে। পবিত্র কুরআনুল কারীমের সূরা আল মায়িদার ১৪৪ নম্বর আয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে। মহান আল্লাহ তা’য়ালা এখানে বলেন, “মারইয়াম পুত্র ঈসা বললো, হে আল্লাহ, হে আমাদের রব আসমান থেকে আমাদের জন্য খাবারপূর্ণ দস্তরখান বা মায়িদা নাজিল করুন, এটা হবে আমাদের, আমাদের পূর্ববর্তী ও পরবর্তীদের জন্য ঈদ বা আনন্দ উৎসব। আর আপনার পক্ষ থেকে হবে এটি একটি আয়াত বা নিদর্শন।”

অপরদিকে ফিতর শব্দটি ফিতরাত বা স্বাভাবিক অবস্থা অর্থে ব্যবহৃত হয়। আবার কোনো কিছু শেষ করা অর্থেও ব্যবহৃত হয় এই ফিতর শব্দটি। আবার কারো কারো মতে ফুতুর থেকে শব্দটির উৎপত্তি যার অর্থ নাস্তা। সুতরাং যৌগিকভাবে ঈদুল ফিতরের শাব্দিক অর্থ দাঁড়ায় রমজান মাসের সিয়াম শেষ করে সকাল বেলার নাস্তা গ্রহণ করার মাধ্যমে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসার আনন্দ বা উৎসব।
ঈদ যেভাবে এলো: ৬২২ ঈসায়ী সালে আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মাদ সা. মক্কা থেকে মদীনায় হিযরত করলেন। হাদীসের ভাষ্যকার ও ঐতিহাসিকদের মতে, সেখানে গিয়ে তিনি দেখলেন। জাহেলি রসম অনুযায়ী সেখানকার লোকেরা বছরের নির্দিষ্ট দু’টি দিনে অশ্লীলতায় পরিপূর্ণ নাচ-গান, জুয়ার আসরসহ বিনোদনের নামে পুঁতিগন্ধময় আনন্দ উৎসব করছে। মহানবী সা. অংশ গ্রহণ না করলেও এর আগে মক্কায় দেখেছেন হাজার হাজার বছরের ঐতিহ্যমন্ডিত ‘উকাজ মেলা’। মহানবী সা. জিজ্ঞেস করলেন, হে মদীনার লোকেরা তোমরা এসব কি করছো? তারা জবাব দিলেন, আমরা বছরে দু’দিন “নওরোজ ও মেহেরজান” উৎসব পালন করছি। মহানবী সা. সংস্কারের মনোভাব নিয়ে মুসলিম উম্মাহর জন্য প্রবর্তন করেন “ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহা”। যেখানে রয়েছে আনন্দ উৎসবের সাথে সাথে মহান আল্লাহ তা’য়ালার স্মরণ। এভাবেই ইসলামের ইতিহাসে যুক্ত হলো অপবিত্র “নওরোজ ও মেহেরজান” এর পরিবর্তে বৈধ আনন্দ উৎসবের নতুন সংস্কৃতি “ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহা”।
আবুদাউদ ও নাসায়ী শরীফের হাদীসে এসেছে, “হযরত আনাস রা.বলেন, রাসূলুল্লাহ সা. যখন মক্কা থেকে মদীনায় হিযরত করে এলেন, তখন তিনি দেখলেন সেখানকার মানুষ বছরে দু’টি নির্দিষ্ট দিনে খেলাধুলা ও আনন্দ উপভোগ করে। তিনি তাদেরকে জিজ্ঞাস করেন, এ দু’টি দিন কেমন? তারা বলেন, আমরা ইসলাম আগমনের পূর্বে এ দু’টি দিনে, খেলাধুলা, তামাশা ও আনন্দ উপভোগ করতাম। তখন রাসূলুল্লাহ সা.বলেন, আল্লাহ এ দু’টি দিনের পরিবর্তে দু’টি উৎকৃষ্ট দিন নির্ধারিত করে দিয়েছেন। একটি ঈদুল ফিতর এবং অন্যটি ঈদুল আযহা।”
এ থেকেই অনুধাবন করা যায়, মুসলিম উম্মাহর ঈদুল ফিতরের উৎসব নিছক কোনো তথাকথিত উৎসব নয়। এর রয়েছে ধর্মীয়, সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক এবং সাংস্কৃতিক গুরুত্ব ও তাৎপর্য। যার কয়েকটি বিষয়ে সংক্ষিপ্ত আলোকপাত নিম্নরূপ:
ধর্মীয়: ঈদুল ফিতর একটি ধর্মীয় উৎসব। এটি একটি ইবাদাত। যা অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’য়ালার নির্দেশিত ফরজ ইবাদাত পালনের পর। রমজানের পুরো মাসব্যাপী বিশ্বমুসলিমদের সাওম পালনের পরই তারা এ উৎসব পালন করে থাকে। এ উৎসবকে পুরোপুরি উৎসব হিসেবে পালন করতে হলে অবশ্যই তাকে সিয়াম পালন করে আল্লাহর প্রিয় বান্দা হতে হবে। সিয়ামের উদ্দেশ্য সম্পর্কে আল কুরআনের সূরা আল বাকারার ১৮৩ নম্বর আয়াতে আল্লাহ বলেন, “ওহে তোমরা যারা ঈমান এনেছো, তোমাদের জন্য রমজানের সিয়ামকে ফরজ করা হয়েছে, যেমনভাবে ফরজ করা হয়েছিলো তোমাদের পূর্ববর্তী জাতির ওপর। যেনো তোমরা তাকওয়া বা আল্লাহভীতি অর্জন করতে পারো।”
রমজানের মাসকে মুসলিম উম্মাহ যাতে আর ক’টা সাধারণ মাসের মতো মনে না করে। পরিপূর্ণ গুরুত্ব প্রদান করে এইভেবে যে, এ মাসটা হিদায়াতের মশাল আল কুরআন নাজিলের মাস। মহান আল্লাহ সূরা আল বাকারার ১৮৫ নম্বর আয়াতে বলেন, “রমজান মাস! এমাসেই নাজিল করা হয়েছে আল কুরআন। যেটি বিশ্বমানবতার হিদায়াত এবং সত্য-মিথ্যার মধ্যে সুস্পষ্ট পার্থক্যকারী”। সুতরাং এর ধর্মীয় গুরুত্ব কতটুকু তা সহজেই অনুমেয়। ঈদুল ফিতরের দিনে রয়েছে দু’রাকায়াত সালাত আদায়ের বিধান। এ সালাতের গুরুত্ব এতটাই যে, এ সালাতের ঈদগাহে যাওয়ার জন্য মহিলাদেরকেও তাকিদ দিয়েছেন প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মাদ সা.। এমনকি মাসিক অসুস্থতার সময়ও অপবিত্র অবস্থায় শুধুমাত্র খুতবাহ শোনার জন্য এবং উৎসবকে অর্থবহ করে পালনের জন্য।
সামাজিক: পবিত্র ঈদুল ফিতর পুরোপুরি একটি সামাজিক উৎসব। সামাজিক জীব হিসেবে এদিনে মানুষ একে অপরের খোঁজ খবর নেয়। একে অপরের সুখে দুঃখে শরীক হয়। দলে দলে ঈদগাহে যায়। জামায়াতবদ্ধভাবে সালাত আদায় করে। ভ্রাতৃত্বের বন্ধনকে করে সুদৃঢ়, করে আরো মজবুত। মুসলিম মিল্লাতে তৈরি করে সৌহার্দের সীসাঢালা প্রাচীর আর ঐক্যের স্মৃতিসৌধ। কারণ মহান আল্লাহ তা’য়ালা সূরা আল হুজরাতের ১০ নম্বর আয়াতে বলেছেন, “নিশ্চয়ই মু’মিনরা পরস্পর ভাই ভাই, সুতরাং তোমরা তোমাদের ভাইদের মধ্যে ইসলাহ বা মীমাংসা করে দাও এবং আল্লাহক ভয় করো, যাতে করে তোমরা রহমতপ্রাপ্ত হও।” পবিত্র ঈদুল ফিতরের এ দিনে এ দৃশ্যই যেনো ভেসে ওঠে প্রত্যেকটি মুসলিম হৃদয়ের মানসপটে, ইসলামী সমাজ তথা মুসলিম উম্মাহর মাঝে।
রাজনৈতিক: মানব জীবনের অন্যান্য দিক ও বিভাগের মতো ঈদুল ফিতরের রয়েছে অপরিসীম রাজনৈতিক গুরুত্ব। এ দিনে প্রিয় নবী সা. সালাত আদায় করতে বলেছেন জামায়াতের সাথে তথা সম্মিলিতভাবে। উৎসাহিত করেছেন মসজিদের পরিবর্তে ঈদগাহে সালাত আদায় করতে। কারণ, মুসলিম উম্মাহ এর মাধ্যমে নিবে ঐক্যের শিক্ষা। ভুলে যাবে বিবাদ ও বিসম্বাদ। গড়ে তুলবে ঐক্যের সুদৃঢ় ইস্পাত কঠিন সীসাঢালা প্রাচীর। যে শিক্ষা মহান আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতা’য়ালা দিয়েছেন সূরা আলে ইমরানের ১০৩ নম্বর আয়াতে। মহান আল্লাহ বলেন, “তোমরা সংঘবদ্ধভাবে আল্লাহর রজ্জুকে ধারণ করো বা আঁকড়ে ধরো, পরস্পর বিচ্ছিন্ন হয়ো না।” সূরা আস সফের ০৪ নম্বর আয়াতে মহান আল্লাহ তা’য়ালা বলেন, “নিশ্চয়ই আল্লাহ তাদেরকে ভালোবাসেন, যারা তার পথে সংগ্রাম করে বা চেষ্টা সাধনা অব্যাহত রাখে, যেনো তারা সীসাঢালা প্রাচীর।”
অর্থনৈতিক: ঈদুল ফিতরের অর্থনৈতিক গুরুত্ব ও তাৎপর্য রয়েছে সীমাহীন। এ দিনটিতে বিশ্ব মুসলিম শুধু ব্যক্তিগত আনন্দ আর ভোগ বিলাসে মত্ত থাকে না। এ আনন্দ উৎসবে শরীক করে তাদের ভাই, সমাজে পিছিয়ে পরা মানুষ গরীব ও দুঃখিদেরকে। তারা পালনে ব্যস্ত হয়ে পড়ে ইসলামের সুমহান শিক্ষা ও নির্দেশ সাদকায়ে ফিতর আদায়ের জন্য। কারণ রাসূল সা. বলেছেন, “সাদকাতুল ফিতর আদায় না করা পর্যন্ত সাওম পালনকারী ব্যক্তির সাওম আসমান ও জমিনের মাঝখানে ঝুলন্ত অবস্থায় বিরাজ করে, আল্লাহর কাছে পৌঁছায় না।” বাধ্যতামূলক এ সাদাকা আদায়ের সাথে সাথে এ মাসেই বেশি সাওয়াবের আশায় মানুষ বেশি বেশি যেমন দান করে তেমন আদায় করে থাকে আর্থিক ইবাদাত যাকাতও।
সংস্কৃতি: মুসলিম উম্মাহর জন্য ইসলামে রয়েছে এক অনন্য সংস্কৃতি। তার প্রভাব রয়েছে পবিত্র ঈদুল ফিতরেও। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্যি এক শ্রেণির ধান্দাবাজ কুমতলবে পড়ে থাকা তথাকথিত সংস্কৃতি সেবিরা ভূতের মতো উল্টো চলছে। আবার হতে পারে এটা তাদের অজ্ঞতারই সোনালী ফসল। তারা পবিত্র ঈদের ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য ভুলিয়ে দেয়ার চক্রান্তে সদা তৎপর ও লিপ্ত। স্রেফ চিত্রিত করা হয় উদ্দেশ্যহীন এক আনন্দ উৎসব হিসেবে। ঈদুল ফিতর যে আসে দীর্ঘ এক মাস সিয়াম সাধনার পরিসমাপ্তি, আনন্দময় ইফতার, পরিশুদ্ধ হওয়ার ইবাদাত ইতিকাফ ও সালাতুত তারাবীহসহ বিশেষ ইবাদাত-বন্দেগীর পরিসমাপ্তির মাধ্যমে আল্লাহর ভালোবাসায় সিক্ত হয়ে শুকরিয়ায় মস্তক অবণত বা আত্মসমর্পণের মাধ্যমে বাকি এগারো মাস চলার অঙ্গীকার শানিত করার দিন হিসেবে। তা নিমিষেই ভুলিয়ে দেয়া হয় ধার করা সংস্কৃতির বাহন ঢাক-ঢোল-তবলা-বাঁশি বাজিয়ে, নাচেগানে মাতোয়ারা করার মাধ্যমে। নোংরা ফ্যাশন শো-তে নেমে পড়ে আগামীর ভবিষ্যৎ নতুন প্রজন্ম যুব সমাজ। সিয়াম সাধনার মর্মবাণী ত্যাগের শিক্ষা, সংযম, শ্লীলতা ও মানবতার কল্যাণ সাধনের মনোবৃত্তি দূরে ঠেলে দিয়ে অপবিত্র আমোদ প্রমোদের করা হয় নানা আয়োজন। তুমুল প্রতিযোগিতা শুরু করা হয় রমজানের বার্তাকে পরিহার করার। ধর্মীয় বিধানে আবদ্ধ ঈদুল ফিতর পরিণত হয় ঈদকার্ড বিতরণ, এস এমএস বিনিময় ও ফেসবুক স্টাটাস প্রদান ও জুয়ার আড্ডা খ্যাত মেলা উদযাপনে। বিশিষ্ট সমাজ বিজ্ঞানী প্রফেসর ড. আব্দুর রহমান সিদ্দিকী তাঁর “অভিঘাতের মুখে ঈদ সংস্কৃতি: চাই নবজাগরণ” শীর্ষক প্রবন্ধে ঈদের নামে প্রচলিত অপসংস্কৃতির এক সুনিপুণ চিত্র এঁকেছেন এভাবে, ‘এখন শোনা যাচ্ছে ঈদের নাটক, ঈদের নাচ, ঈদের গান, ঈদের কনসার্ট। ঈদের ফ্যাশন শো, ঈদের রেসিপি, ইত্যাকার বিচিত্র সব বিষয়ের কথা। ঈদের সঙ্গে এ সবের আদৌ কোনো যোগসূত্র নেই। তবুও ঈদ উপলক্ষে এসব হাজির হয় কোটি দর্শকের সামনে। ঈদকে তার আপন মহিমা থেকে হটিয়ে ভিন্নতর এক মাত্রায় উপস্থাপন করা হয়। বিশেষভাবে নবীন প্রজন্মের সামনে ঈদকে একটা হই-হুল্লোড়, রঙ তামাশা, গান-বাজনা, গলাগলি, ঢলাঢলির উপলক্ষ হিসেবে তুলে ধরার চেষ্টায় ব্যস্ত কতক মিডিয়া। তাদের বিবেচনায় ‘ঈদ মানে জোছনা রাতে হাস্নাহেনার গন্ধে’ ফষ্টিনষ্টি করার মাহেন্দ্র সুযোগ। ঈদ যে রমজানের শিক্ষা-সংযম, ত্যাগ ও তৌহিদী চেতনার পরিসীমার মধ্যে সম্পাদ্য একটি ধর্মীয় আচার ও ইবাদাতের অংশ তা ভুলিয়ে দিয়ে নবীন প্রজন্মকে ভিন্ন দিকে ধাবিত করানো হচ্ছে।’
অপসংস্কৃতির এই কালো থাবা থেকে ঈদুল ফিতরকে ফিরিয়ে আনতে হবে তার আপন মহিমায়। দূর করতে হবে শরী’য়াহর বিধিবিধান বহির্ভূত যাবতীয় কুসংস্কার। গ্রহণ করতে হবে ঈদের প্রকৃত শিক্ষা। আল কুরআনের আলোয় জীবন আলোকিত করে মানবতার কল্যাণমুখী সমাজ বিনির্মাণের মানসিকতা তৈরি করতে হবে ঈদের আনন্দ উপভোগের মাধ্যমে। ঈদ যে তাদের জন্য নয় সে অনুভূতিও জাগ্রত করতে হবে আমাদেরকে। যারা সিয়াম পালন করেনি, সিয়ামের শিক্ষা জীবনে বাস্তবায়ন করেনি। করেনি কুরআন অধ্যয়ন, কুরআনের আলোয় আলোকিত করেনি নিজের জীবন।
এ কারণেই ইসলামের দ্বিতীয় খলিফা হযরত উমর রা. ঈদের দিন সকালে কান্না শুরু করে দিলেন। কান্নার কারণ জিজ্ঞাস করলে, তিনি বলেন, আসলেই কি আমার জন্য ঈদ? আমি কি সাওমের হক আদায় করতে পেরেছি? মহান আল্লাহ কি আমাকে রমজানে ক্ষমা করেছেন?
সুতরাং একথা দিবালোকের মতো স্পষ্ট হয়ে যায় যে, রমজানের শুরু থেকে ঈদুল ফিতর পর্যন্ত পুরোটা মাস যে, জীবন চর্চা করার ব্যবস্থা করেছে আমাদের জীবন চলার পথ ইসলাম তা যেনো এক উত্তম সংস্কৃতিরই পরিচায়ক। জীবন ও জগতে মানুষের দৈহিক, আত্মিক, মানবিক, ধর্মীয়, সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সকল ক্ষেত্রেই যে সংস্কার সাধনের সংস্কৃতি, তাই যেনো করে থাকে পবিত্র মাহে রমজান ও ঈদুল ফিতর। কাজেই উত্তম সংস্কৃতির মাস হলো মাহে রমজান। সেই অর্থে প্রশিক্ষণ শেষে আমরা যেমন সমাপনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করি, কিংবা কর্মক্ষেত্রে যোগদানের পূর্বে ওরিয়েন্টেশন প্রোগ্রামের আয়োজন করি, রমজান মাস শেষে ঈদুল ফিতরও যেনো তেমনি একটি অনুষ্ঠানের নাম। তবে নামসর্বস্ব অনুষ্ঠান নয় বরং মুসলমানদের কৃষ্টি-কালচারের পরিচয়, যা দিয়ে লাভ করে অন্যান্য জাতি ও ধর্ম থেকে আলাদা বৈশিষ্ট্যের।
তাই আমাদের অবশ্য কর্তব্য রমজান, সিয়াম ও কুরআনের হক যথাযথভাবে পালন করে তথাকথিত অনুষ্ঠান সর্বস্বতা থেকে মুক্ত করে আমাদের ঈদ সংস্কৃতিকে শরী’য়াহ নির্দেশিত পন্থায় জীবন পরিচালনা করতে পারি তবেই ঈদ ভাস্বর হয়ে উঠবে আপন মহিমায়। বয়ে আনবে আমাদের যাপিত জীবনে অনাবিল সুখ শান্তি ও সমৃদ্ধির সোনালী সোপান।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button