তুরস্কে স্থাপিত হয়েছে ইউরোপের সর্ববৃহৎ গাছপালা উৎপাদনকারী কারখানা

তুরস্কের আনাতোলিয়া ভিত্তিক একটি প্রতিষ্ঠান ইউরোপের মধ্যে সবচেয়ে বৃহৎ এবং তুরস্কের প্রথম বৃক্ষ উৎপাদক ফ্যাক্টরী প্রতিষ্ঠা করেছে, এতে বিনিয়োগ করা হয়েছে আড়াই মিলিয়ন ইউরো বা ২.৭৭ মিলিয়ন ডলার। দেশের এই অর্থ গবেষণা ও উন্নয়ন খাতে বরাদ্দকৃত ৫ মিলিয়ন ইউরোর একটি অংশ। ফ্যাক্টরীটি একটি আবদ্ধ এলাকায় মাটি কিংবা সূর্য্যালোক ছাড়াই স্বাভাবিক চাষাবাদের চেয়ে ৯৫ শতাংশ কম পানি ব্যবহারপূর্বক গাছপালা উৎপাদন করবে। প্রথম পর্যায়ে এটা লেটুচ, আরুগুলা, ক্রেস, স্পিনাক, থাইম ও বাসিলের মতো পাতাবহুল সবুজ সবজী জাতীয় গাছ উৎপাদন করবে।

ফার্মিনোভা নামক এই কারখানার পরিচালক ক্যানটেক গ্রুপ, যারা অনেক বছর যাবৎ আনাতোলিয়া অর্গ্যানাইজ ইন্ডাস্ট্রিয়াল জোন-এ খাদ্য সংরক্ষণ, প্রক্রিয়াকরণ ও রেফ্রিজারেশন টেকনোলজী সংশ্লিষ্ট ব্যবসা পরিচালনা করে আসছে। কোম্পানীর চেয়ারম্যান ক্যান হাকান কারাবা জানান যে, তারা ইউরোপে সর্ববৃহৎ সক্রিয় গাছপালা ফ্যাক্টরী স্থাপনের মাধ্যমে একটি উদ্ভাবনী উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন।

তিনি আরো বলেন, বর্তমান সময়ে অব্যাহতভাবে নির্ধারিত মূল্যে স্বাস্থ্যসম্মত খাদ্য সরবরাহ করা অত্যন্ত কঠিন কাজ। কারণ বিশ্বে জনসংখ্যা ক্রমশ: বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং কৃষি ক্ষেত্রসমূহ ক্রমাগত কমে আসছে। তিনি জানান যে, ফ্যাক্টরীটি একটি আবদ্ধ এলাকায় প্রকৃতি ও জীবন্ত সৃষ্টির কোন ক্ষতি না করেই সারা বছর গাছপালা সৃষ্টি করবে। ফ্যাক্টরীটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও শতকরা একশ’ ভাগ তুর্কী প্রোডাক্টস ব্যবহার করবে। প্রথম পর্যায়ে লেটুস, আরুগলা, ক্রেস, স্পিনাক, থাইম ও বাসিলের মতো সবুজ সরজী জাতীয় গাছ এবং দ্বিতীয় পর্যায়ে স্ট্রবেরী এবং মাশরুম উৎপাদন করবে। এরপর উৎপাদন করা হবে টমাটো, কাঁচা মরিচ ও বেগুনের মতো সবজী। কারাকা জানান, তারা ৭ কিংবা ৮টি দেশে বৃক্ষ কারখানা স্থাপনের লক্ষ্যে কাজ করছেন। বিশেষভাবে আফ্রিকায়। চলতি বছর ২ থেকে ৫টি কারখানা এবং আগামী ৫বছরে ১০০টি কারখানা বা ফ্যাক্টরী স্থাপনের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে তাদের। এগুলোর ৯০ শতাংশই বিদেশে স্থাপিত হবে।

ফ্যাক্টরী কনসালট্যান্ট গ্লেন বেরম্যান ও ক্রিস্টিন ঝিমারম্যান লিসল বলেন, বিশ্ব ও এর বাসিন্দাদের পরিবর্তন হয়েছে। কৃষি জমির ওপর প্রভাব ফেলছে এই পরিবর্তন। এই প্রকল্প প্রাকৃতিক ভূমিকে কৃষি ভূমিতে পরিবর্তন রোধ করবে। আনাতোলিয়ার এই ফ্যাক্টরী অত্যন্ত উদ্ভাবনী সম্পন্ন ও ইউরোপে সর্ববৃহৎ বৃক্ষ কারখানা। এটা স্বাস্থ্যকর প্রোডাক্ট উৎপন্ন করবে, যা ক্ষতিহীন ও রাসায়নিকমুক্ত। এটা কসমেটিক্স ইন্ডাষ্ট্রিতে স্বাস্থ্যসম্মত ও উঁচু মানের অবদান রাখবে। এতে অতি স্বল্প সময়ে স্বাস্থ্যসম্মত ও পুষ্টিকর সামগ্রী উৎপাদিত হবে। এটা একটি হাইপার-ইফিশিয়ন্টে পদ্ধতি এবং এতে বিশ্বে সবচেয়ে কম জ্বালানী ও শ্রমিকের প্রয়োজন হবে। এতে ভোজ্য খাদ্য ছাড়াও অন্যান্য প্রয়োজনীয় খাদ্য উপাদন ও সামগ্রী উৎপাদিত হবে।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button