কানাডায় অভিবাসী দ্বৈত নাগরিকরা এখন দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক !

Canada Immigration and citizen ministerসাইফুল্লাহ মাহমুদ দুলাল, কানাডা: কানাডায় অভিবাসী দ্বৈত নাগরিকরা এখন দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক। আগে তা অন্তরালে থাকলেও এখন বিষয়টি নানা ভাবে উন্মোচিত হচ্ছে। এবং অভিবাসীদের মধ্যে নিরব প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হচ্ছে।

ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ  সরকারের  বিতর্কিত বিল সি-২৪ আইনে পরিণত হলেই তা আরও স্পষ্ট হয়ে উঠবে। আর তা হচ্ছে, জঙ্গীবাদ, সন্ত্রাস, বিশ্বাসঘাতকতা বা অন্য কোন গুরুতর অপরাধে অভিযুক্ত হলে তাকে কানাডা থেকে বহিস্কার করা হবে, এমন কি যে সব ইমিগ্রন্টের জন্ম কানাডায় তারাও এই আইনের আওতায় পড়বে। কিন্তু যারা অরিজিনাল কানাডিয়ান তাদের ক্ষেত্রে তা প্রযোজ্য নয়। তাহলে দেখা যাচ্ছে, নাগরিকদের জন্য দ্বৈত আওইন তৈরি হচ্ছে। বৃটিশ কলম্বিয়ার সিভিল লিবার্টিজ অ্যাসোসিয়েশন জানিয়েছে, দ্বৈত নাগরিকরা এখন দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক হয়ে গেল।

সিটিভি নিউজের এই খবর প্রকাশিত হওয়ার পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক প্রচারণা চলতে থাকে। দ্বৈত নাগরিকদেরকে সতর্ক করে দেয়া হয় এই বলে যে, তারা এখন থেকে কানাডার দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক এবং তাদের নাগরিকত্ব সরকার ইচ্ছেমত বাতিল করে দিতে পারে। এমনকি যাদের জন্ম কানাডায় কিন্তু পিতা-মাতা অন্যদেশের তাদের নাগরিকত্বও বাতিল করে দিতে পারে সরকার।

উল্লেক্ষ্য, দ্বৈত নাগরিকদের নাগরিকত্ব বাতিল করার যে নতুন আইনটি করা হয়েছে তার কার্যকারিতা শুরু হয়েছে গত ২৯ মে থেকে। ঐ আইনে বলা হয়েছে দ্বৈত নাগরিকদের কানাডিয়ান নাগরিকত্ব বাতিল করা যাবে, যখন কেউ নাগরিকত্ব লাভের জন্য আবেদনপত্রে মিথ্যা তথ্য দিয়ে থাকে।

সিভিল রাইটস গ্রুপস এবং এ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল মনে করে নতুন এই আইন দ্বৈত নাগরিকদের জন্য বৈষম্যমূলক। এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে দ্বৈত নাগরিকদেরকে যথাযথ আইনী প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যাওয়ার অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হবে এবং  অন্যদিকে ইমিগ্রেশন কর্মকর্তারা স্বেচ্ছাচারী হয়ে উঠতে পারে।

এর মাধ্যমে দ্বৈত নাগরিকদেরকে একঅর্থে ‘লেস কানাডিয়ান’ কাতারে ফেলা হয়েছে এবং কানাডায় জন্ম নেয়া নাগরিকদের চেয়ে কম অধিকারসম্পন্ন করে তোলা হয়েছে।

টরন্টো ভিত্তিক সংবিধান বিশেষজ্ঞ আইনজীবী রোকো গালাতি সিটিভি নিউজের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে জানান, বিল সি-২৪ এর বিরুদ্ধে আদালতে চ্যালেঞ্জ করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন তিনি। আগামী শরৎকালের শেষের দিকে অথবা শীতের শুরুতে বিষয়টি নিয়ে তিনি আদালতে হাজির হবেন।

সি-২৪ বিলের আরেক নাম হলো- ‘কানাডিয়ান নাগরিকত্ব আইন শক্তিশালীকরণ’।  বিলটি গত জুন মাসে রাজ সম্মতি লাভ করে। রানীর পক্ষে বিলটিতে সই করেন কানাডার গভর্ণর জেনারেল ডেভিড জনস্টন। বহিস্কার ছাড়াও এই বিল নতুন এই আইনে সিটিজেনশীপ আবেদন পত্রে এবং আবেদন পত্র প্রসেসিং প্রক্রিয়ায় বেশকিছু পরিবর্তন আনা হয়েছে। এর মধ্যে আছে পার্মানেন্ট রেসিডেন্টদের নাগরিত্ব পেতে হলে এখন আরো বেশী সময় ধরে কানাডায় শারীরিকভাবে উপস্থিত থাকতে হবে। আগে নিয়ম ছিল ৪ বছরের মধ্যে ৩ বছর কানাডায় থাকলেই হবে, এখন সে নিয়ম পাল্টে করা হয়েছে ৬ বছরের মধ্যে ৪ বছর কানাডায় থাকতে হবে।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button