এর কি কোনো সুরাহা নেই?

উগ্র মহিলাদের বর্ণবাদী হামলা!

racistযে কোনো মানুষই মানবজাতির অংশ। আর কুষ্ঠিনামা তালাশ করলে দেখা যাবে সব মানুষেরই আদি পিতা হযরত আদম (আঃ)। অতএব আদম সন্তান হিসেবে সব মানুষেরই মিলেমিশে শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করার কথা। বর্ণ, ভাষা বা সম্প্রদায়গত পার্থক্যের কারণে মানুষে-মানুষে হিংসা-বিদ্বেষ বা সংঘাত চলতে পারে না। বরং এই পার্থক্যকে বৈচিত্র্য ও সৌন্দর্যের দৃষ্টিতে বিবেচনা করা প্রয়োজন। এমন দৃষ্টিভঙ্গি পোষণ করলে বৈচিত্র্যের ঐক্য সৃষ্টি হতে পারে এবং মানুষের সমাজ এগিয়ে যেতে পারে শান্তি ও প্রগতির পথে। কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো, বর্তমান সভ্যতায় বৈচিত্র্যের ঐক্য চেতনা যেন লোপ পেতে বসেছে। উন্নত বিশ্বেও এই সংকটের ঘনীভূত রূপ লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
গত ১৬ মার্চ দ্য সান পরিবেশিত খবরে বলা হয়, যুক্তরাজ্যের নাটিংহামে ১০ বৃটিশ নারীর হামলার শিকার এক মিসরীয় কিশোরী গত বুধবার মারা গেছেন। ১৮ বছর বয়সী মারিয়ামের পরিবার ইন্টারনেটে একটি ভিডিও পোস্ট করেছে। তাতে দেখা যায়, নাটিংহামের একটি বিপণিবিতান থেকে ফেরার সময় পাবলিক বাসে ১০ বৃটিশ নারী কিশোরী মারিয়ামের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। প্রথমে তারা মারিয়ামকে পেটাতে শুরু করে। এরপর লাথি ও ঘুষি মারতে থাকলে সে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু ওই বৃটিশ নারীরা তার পিছু ধাওয়া করে প্রহার অব্যাহত রাখে। সে ওই নারীদের কাউকে চিনতো না। এরপর গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কিন্তু মারাত্মক আঘাতের কারণে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণের পরও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ মারিয়ামকে চিকিৎসা না দিয়ে বাসায় পাঠিয়ে দেয়। মস্তিষ্কে প্রচুর রক্তক্ষরণের কারণেই তার মৃত্যু হয়েছে। এদিকে মারিয়ামের মা নিসরিন অভিযোগ করেন, বর্ণবাদ ও বৈষম্যের ওপর ভিত্তি করে তার মেয়ের ওপর হামলা চালানো হয়েছে। নারীরা তাকে ধাওয়া করলে সে একটি বাসে উঠে চালককে অনুরোধ জানায় যাতে তিনি বাসটি ছেড়ে দেন। কারণ ধেয়ে আসা নারীরা তাকে মেরে ফেলবে। কিন্তু বাস চালক তার কথা শোনেনি। ফলে তাকে প্রহারে প্রহারে প্রাণ হারাতে হলো।
বর্ণবাদী উগ্র বৃটিশ মহিলাদের হামলায় মেধাবী ছাত্রী মারিয়াম পৃথিবী থেকে বিদায় নিল। এই কিশোরীর কী অপরাধ ছিল? মারিয়ামতো বৃটেনে এসেছিলো পড়াশোনা করতে। স্বপ্ন ছিল প্রকৌশলী হবে। এসব তো কোন অপরাধের বিষয় হতে পারে না। তার কলেজের ভাইস-প্রিন্সিপাল ইউলটান মেলর মারিয়ামের প্রশংসা করে বলেন, বেঁচে থাকলে সে সফল ক্যারিয়ারের অধিকারী হতে পারতো। মুসলিম পরিচয়টাই তার মৃত্যুর কারণ হলো। বিভিন্ন দেশে মুসলমানরা এখন অব্যাহতভাবে বর্ণবাদ ও সাম্প্রদায়িকতার শিকার হচ্ছে। এর কি কোনো সুরাহা নেই?

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button