মাদ্রাসার ছাত্ররা আগামী দিনের নেতৃত্ব দেবে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

asaduzzamanমাদ্রাসার ছাত্ররা আগামী দিনের বাংলাদেশের নেতৃত্ব দেবে বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। তিনি বলেন, ‘আমরা একটি নিরাপদ বাংলাদেশ গড়ার জন্য কাজ করছি। আর মাদ্রাসা থেকে বের হওয়া ছাত্রদের যে মেধাবী ছেলেরা বের হয়ে আসবে- তারা এ দেশের নেতৃত্ব দেবে। তারা আমাদের ইসলামের নেতৃত্ব দেবে।’
শোলাকিয়া ঈদগাহের খতিব মাওলানা ফরিদ উদ্দিন মাসউদের আহ্বানে শনিবার বিকালে রাজধানীর হাজীপাড়া ইক্বরা মিলনায়তনে আয়োজিত বেফাকুল মাদারিসিদ্দীনিয়্যা বাংলাদেশের আয়োজনে মাদ্রাসা ছাত্রদের পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
মাদ্রাসার ছাত্ররা জঙ্গি হতে পারে না উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘মাদ্রাসায় দ্বীনের শিক্ষা দেয়া হয়, কুরআন-হাদীসের শিক্ষা দেয়া হয়, সেখানে জঙ্গি উৎপত্তি হয় কী করে? আমরা চ্যালেঞ্জ করেছিলাম, টেকনাফ থেকে তেতুঁলিয়ায় একটি আইএস জঙ্গি একটা মাদ্রাসা ছাত্রকেও জঙ্গি হিসেবে পাইনি। আজ সেই ভুল কেটে গেছে।’
আলেমদের উদ্দেশে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মুসলমানদের কালো দাগ দেয়ার জন্য আইএসের গল্প পাতানো হয়েছিল। সারা পৃথিবীতে ইসলাম ও মুসলিমদের কলংকিত করার জন্য এ ষড়যন্ত্র চলছে। আপনাদের এ কথা মনে রাখতে হবে, আমরা হৃদয় দিয়ে ধারণ করি ইসলাম ধর্মকে। হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকেআমরা হৃদয়ে ধারণ করি। এই ধর্মে কোনোদিন জঙ্গি উৎপাদন করতে পারে না। এ ধর্ম কোনোদিন মারামারি সন্ত্রাসী কার্যক্রম সমর্থন করে না।
আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আলেম-ওলামাদের খুব ভালোবাসেন। কারণ, তিনি একজন পাক্কা মুসলমান। তিনি ইমানদার মানুষ। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়েন। তাহাজ্জুদের নামাজসহ সকাল বেলায় কুরআন তেলাওয়াত করেন। এ মানুষের হাতে আজ বাংলাদেশ চলছে। সেজন্য আলেম-উলামারা তার কাছে সম্মানীয় জিনিস।তাদের কথা তিনি মন দিয়ে শোনেন। তিনি কওমি মাদ্রাসার স্বীকৃতি সম্পর্কে সিরিয়াস ছিলেন। সেজন্য স্বীকৃতি সহজতর হয়েছিল।
অনুষ্ঠানে কওমি মাদ্রাসার শিক্ষাবোর্ড বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশের সিনিয়র সহসভাপতি আল্লামা আশরাফ আলীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা সচিব মো. আলমগীর।
জঙ্গিবাদ ইস্যুতে আলেম-উলামাদের ঐক্যবদ্ধ ভূমিকার কথা উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, দেশের ওই কঠিন সময়ে সংকট মোকাবেলায় আলেমদের নাম ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। তিনি বলেন, যারা আলেম তারা জঙ্গি না, তারা মানুষ হত্যা করতে পারে না।
কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষার সচিব মো. আলমগীর বলেন, কওমি মাদরাসা শিক্ষা সনদের স্বীকৃতি এখনো একটি প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে।
সংখ্যালঘু বোর্ডগুলোকে আইনত শক্তিশালী করার জন্য আহ্বান জানিয়ে সভাপতির আলোচনায় জাতীয় বেফাকের সভাপতি আল্লামা ফরীদ উদ্দীন মাসঊদ বলেন, বেফাকুল মাদারিস ছাড়া বাকি পাঁচ বোর্ডের সঙ্গে সংখ্যালঘুর আচরণ করা হচ্ছে। আমাদের এই পাঁচ বোর্ডকে আইনত শক্তিশালী করা উচিত।
পাঁচ বোর্ডের সদস্যরা এখানে আছে উল্লেখ করে আল্লামা মাসঊদ বলেন, আমাদের এখানে মেধার চাষ হচ্ছে। হায়াতুল উলইয়্যার কেন্দ্রীয় পরীক্ষায় সর্বপ্রথম স্থান অধিকার করেছে আমাদের বোর্ডের শিক্ষার্থী। আমরা পুরস্কার হিসেবে হজের ব্যবস্থা করে দিয়েছি। আল্লাহ তাআলা আমাদের তাওফিক দিন।
পুরস্কার ব্যবস্থা না করায় তিনি হায়াতুল উলইয়্যার নেতাদের সমালোচনাও করেন তিনি। তিনি বলেন, কী কারণে যে এখনো এ রকম পুরস্কারের ব্যবস্থা করা হয়নি তা জানি না। মেধাবীকে মূল্যায়ন করা উচিত।
এছাড়াও মাওলানা হুসাইনুল বান্নার উপস্থাপনায় বক্তব্য দেন, ড. আওলাদ হোসেন, মাওলানা আবু তাহের নদভী, মুফতি এনামুল হক, মুফতি মুহাম্মদ আলী, মাওলানা শামসুল হুদা খান, মাওলানা ইয়াহইয়া মাহমুদ, মুফতি আবদুল কাইয়ুম খান, মাওলানা হোসাইন আহমদ, মুফতি তাজুল ইসলাম কাসেমী, মাওলানা ইমদাদুল্লাহ কাসেমী, মাওলানা মুমতাজুল করীম, মাওলানা আইয়ুব আনসারী, মাওলানা শওকত আলী, মাওলানা মুজাফ্ফর হোসাইন, মাওলানা হিফজুর রহমান, মাওলানা দেলোয়ার হোসাইন সাইফী, মাওলানা মুসলেহউদ্দীন, মুফতি আবুল কাসেম, মাওলানা আবদুল বাতেন, মুফতি আবদুর রহীম, মাওলানা আবদুর রহীম কাসেমী, মাওলানা আবদুল জলিল, মাওলানা আরীফ উদ্দীন মারুফ, মুফতি জসীম উদ্দীন, কারি শামসুল হক প্রমুখ।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button