বাজেটে পুঁজিবাজারের জন্য ৫টি সুখবর

DSE২০১৫-১৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে দেশের পুঁজিবাজারের জন্য পাঁচটি সুখবর রয়েছে। এগুলো হলো- করমুক্ত লভ্যাংশের আয়ের সীমা বৃদ্ধি, করপোরেট করহার হ্রাস, আইপিওতে ২০ শতাংশ শেয়ার ছাড়ার ক্ষেত্রে কর রেয়াত সুবিধা, মার্চেন্ট ব্যাংক ও ব্রোকারেজ হাউসগুলোকে উৎস কর আদায় থেকে অব্যাহতি এবং ব্যাংক, বীমা কোম্পানি ব্যতিরেকে তালিকাভুক্ত কোম্পানি ১৫ শতাংশের কম লভ্যাংশের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত ৫ শতাংশ করারোপ।
বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত পুঁজিবাজারের জন্য এসব সুপারিশের ঘোষণা দেন।
বিনিয়োগকারীদের করমুক্ত লভ্যাংশ আয়ের সীমা ২৫ হাজার টাকা পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। আগের অর্থবছরে এ সীমা ছিল ২০ হাজার টাকা।
এছাড়া বাজেটে তালিকাভুক্ত কোম্পানির করপোরেট করহার ২.৫ শতাংশ কমানো হয়েছে। এক্ষেত্রে বিদ্যমান করহার ২৭.৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২৫ শতাংশ করা হয়েছে। একই সঙ্গে তালিকাভুক্ত ব্যাংক, বীমা ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের করপোরেট করহার ৪২.৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৪০ শতাংশ করা হয়েছে।
কোনো কোম্পানি তার পরিশোধিত মূলধনের ২০ শতাংশ শেয়ার আইপিওর মাধ্যমে ছাড়লে ওই কোম্পানি সংশ্লিষ্ট বছরের প্রযোজ্য আয়করের ওপর ১০ শতাংশ কর রেয়াত পাবে।
বাজেটে ব্রোকারেজ হাউজগুলোকে উৎসে কর আদায় থেকে ছাড় দেওয়া হয়েছে। এ জন্য আয়কর অধ্যাদেশের ৫৩(ও) ধারা বিলুপ্ত করা হয়েছে। গত অর্থবছরে মার্চেন্ট ব্যাংক ও ব্রোকারেজ হাউজগুলোকে ফার্ম বা কোম্পানি করদাতার মুনাফার ওপর ১০ শতাংশ হারে উৎসে কর আদায়ের যে বিধান করা হয়েছিল তা প্রত্যাহার করা হয়েছে। মার্চেন্ট ব্যাংক ও ব্রোকারেজ হাউজগুলোর দাবির পরিপ্রেক্ষিতে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
তালিকাভুক্ত কোনো কোম্পানি যদি শেয়ারহোল্ডারদের ১৫ শতাংশের নিচে লভ্যাংশ প্রদান করে তাহলে অতিরিক্ত ৫ শতাংশ কর প্রদান করতে হবে। তবে ব্যাংক ও বীমা কোম্পানি এর আওতামুক্ত থাকবে।
তালিকাভুক্ত কোনো কোম্পানি যদি পরিশোধিত মূলধনের ১৫ শতাংশ নগদ বা বোনাস শেয়ার প্রদান করে তাহলে অতিরিক্ত কর প্রদান করতে হবে না। তবে এই লভ্যাংশ অবশ্যই আয় বছরের (অর্থবছর) ৬ মাসের মধ্যে প্রদান বা ঘোষণা করতে হবে। অন্যথায় অবিতরণযোগ্য মুনাফার ওপর অতিরিক্ত ৫ শতাংশ কর প্রদান করতে হবে।
বাজেটে এসব সুপারিশের বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা স্টক এক্সচঞ্জের (ডিএসই) ব্যবস্থাপনা পরিচালক অধ্যাপক স্বপন কুমার বালা বলেন, এবারের বাজেটে বিনিয়োগকারীদের জন্য করমুক্ত লভ্যাংশ আয়ের সীমা ২৫ হাজার টাকা পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। এছাড়া তালিকাভুক্ত কোম্পানির করপোরেট করহার কমিয়ে ২৫ শতাংশ করা হয়েছে। পাশাপাশি তালিকাভুক্ত ব্যাংক, বীমা ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের করপোরেট করহারও কমিয়ে ৪০ শতাংশে নামিয়ে আনা হয়েছে। এসব কিছুই পুঁজিবাজারে জন্য ইতিবাচক।
এ বিষয়ে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) পরিচালক মোহাম্মদ খায়রুল আনাম চৌধুরী বলেন, আমার মতে সরকারের প্রধান এজেন্ডা দেশে ব্যবসায়িক পরিবেশ সৃষ্টি করা। এ জন্য সরকার কাজ করে যাচ্ছে। সার্বিক দিক বিবেচনা করলে ২০১৫-১৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট ব্যবসায়িক বান্ধব। আর ব্যবসা ভালো হলে তা পুঁজিবাজারে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে প্রভাব ফেলবে।
এদিকে বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স এ্যাসোসিয়েশনের (বিএমবিএ) সহ-সভাপতি আক্তার হোসেন সান্নামাত বলেন, এবারের বাজাটে তালিকাভুক্ত কোম্পানির ক্ষেত্রে করপোরেট ট্যাক্স কমানো হয়েছে। যা বাজারের জন্য খুবই ইতিবাচক। এছাড়া বাজেটে পঁজিবাজারের জন্য যেসকল সুবিধা দেওয়া হয়েছে তা বাজারকে গতিশীল করবে বলে আমি মনে করি।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button