ইউনাইটেড নিয়ে চিন্তিত অর্থায়নকারী ব্যাংক

অনির্দিষ্টকালের জন্য ফ্লাইট স্থগিত হওয়া উড়োজাহাজ সংস্থা ইউনাইটেড এয়ারওয়েজকে নিয়ে চিন্তিত প্রতিষ্ঠানটিতে অর্থায়নকারী ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড ও বিদেশী স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়া।
জানা গেছে, উড্ডয়ন বন্ধের পর থেকে প্রতিষ্ঠানটির নতুন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে ব্যাংক দুটির পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হলেও কোনো সদুত্তর পায়নি তারা।
এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি ব্যাংক দুটির উচ্চপদস্থ কোনো কর্মকর্তা। তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে ব্যাংক দুটির সংশ্লিষ্ট শাখা পর্যায়ের কর্মকর্তারা বলেন, ইউনাইটেড এয়ারওয়েজ আর চালু না হলে বিপাকে পড়বেন অর্থায়নকারীরা।
একইভাবে বিপাকে পড়বেন প্রতিষ্ঠানটিতে বিনিয়োগ করা শেয়ারবাজারের বিনিয়োগকারীরাও।
জানা গেছে, বাংলাদেশে মূলত স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়া থেকে ঋণ নিয়ে ব্যবসা শুরু করে ইউনাইটেড এয়ারওয়েজ। এর পর ইসলামী ব্যাংকও অর্থায়ন করে এতে।
এছাড়া প্রতিষ্ঠানটি বেশির ভাগ ক্ষেত্রে বিদেশী প্রতিষ্ঠান থেকে বাকিতে উড়োজাহাজ ক্রয় করে পরে কিস্তিতে তা পরিশোধ করছিল।
কিস্তিতে কেনা ১১টি উড়োজাহাজের বিপরীতে এখন পর্যন্ত চারটির পুরো কিস্তি শোধ করেছে ইউনাইটেড। ব্যবসা পরিচালনার শুরুতে প্রতিষ্ঠানটি ইসলামী ব্যাংকের উত্তরা শাখা থেকে ৫০ কোটি টাকা চলতি মূলধন ঋণ নেয়, যা দিয়ে পদ্মা অয়েলকে জ্বালানির দাম পরিশোধ করা হতো।
ব্যাংকটির একই শাখা থেকে দুটি এমডি-৮৩ কেনার জন্য ইউনাইটেড এয়ারওয়েজকে ৯০ কোটি টাকা অর্থায়ন করা হয়, যার ২২ কোটি টাকা শোধ করা হলেও এখনো বকেয়া আছে ৬৮ কোটি টাকা।
এছাড়া স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার কাছেও প্রতিষ্ঠানটির ঋণ রয়েছে প্রায় ৩০ কোটি টাকা।
জানতে চাইলে ইউনাইটেড এয়ারওয়েজের সদ্য পদত্যাগকারী চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্যাপ্টেন তাসবিরুল আহমেদ চৌধুরী বলেন, ‘প্রতিষ্ঠানটি ব্যাংকের কোনো কিস্তি বকেয়া রেখেছে, এমন ইতিহাস নেই।’
‘কখনো খেলাপি হয়নি। বর্তমানে কী হবে, তা নতুন পর্ষদও ভালো বলতে পারবে। ঋণের দায়দায়িত্ব আমার না, প্রতিষ্ঠানের।’
উল্লেখ্য, অভ্যন্তরীণ কোন্দলের জের ধরে গত সোমবার পদত্যাগ করেন এয়ারলাইনসটির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক তাসবিরুল আহমেদ চৌধুরী।
ওই দিনই মোহাম্মদ মাহাতাবুর রহমানকে চেয়ারম্যান ও শাহিনুর আলমকে ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালকের দায়িত্ব দিয়ে পর্ষদ পুনর্গঠন করা হয়।
কিন্তু নতুন পর্ষদের অধীনে কাজ করতে অস্বীকৃতি জানিয়ে সোমবার রাতেই পাইলটসহ এয়ারলাইনসটির প্রায় ২০০ কর্মকর্তা-কর্মচারী কর্মবিরতিতে যান। পরদিন মঙ্গলবার আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এয়ারলাইনসটির উড্ডয়ন কার্যক্রম অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে দেয় কর্তৃপক্ষ।
২০০৭ সালের ১০ জুলাই ৩৭ আসনবিশিষ্ট ড্যাশ ৮-১০০ উড়োজাহাজ দিয়ে ঢাকা-সিলেট রুটে ফ্লাইট উদ্বোধনের মাধ্যমে যাত্রা করে বেসরকারি উড়োজাহাজ সংস্থা ইউনাইটেড এয়ারওয়েজ।
বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটির বহরে একটি ড্যাশ ৮-১০০, তিনটি এটিআর-৭২, পাঁচটি এমডি-৮৩ ও দুটি এয়ারবাস-৩১০সহ মোট ১১টি উড়োজাহাজ রয়েছে।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button