টাইমস’র নিবন্ধে খালেদা জিয়া দেশের মর্যাদা ক্ষুন্ন করেছেন : শেখ হাসিনা

Hasinaওয়াশিংটন টাইমসে বিরোধীদলীয় নেতা বেগম খালেদা জিয়ার নিবন্ধ লেখার অস্বীকারের কঠোর সমালোচনা করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিএনপি চেয়ারপার্সনই যে নিবন্ধটি লিখেছিলেন ইতোমধ্যে ওয়াশিংটন টাইমস তা নিশ্চিত করেছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশী পণ্যের অগ্রাধিকারমূলক বাজার ব্যবস্থা (জিএসপি) বাতিল ও বাংলাদেশের ওপর অর্থনৈতিক অবরোধ আরোপে যুক্তরাষ্ট্রকে অনুরোধ জানিয়ে ওয়াশিংটন টাইমসে নিবন্ধ লিখে বিএনপি চেয়ারপার্সন দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণœœ করেছেন।’
তিনি শুক্রবার সন্ধ্যায় লন্ডন হিলটন হোটেলে যুক্তরাজ্য ও অন্যান্য ইউরোপীয় দেশে বসবাসরত আ’লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের এক সভায় বক্তৃতাকালে এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা বলেন, সর্বস্তরের জনগণের ব্যাপক সমালোচনার মুখে বিএনপি নেতৃবৃন্দ এখন ওয়াশিংটন টাইমসে নিবন্ধ লেখার কথা অস্বীকার করছেন। তিনি বলেন, ‘বিএনপি’র মধ্যে যদি দেশপ্রেম থাকতো তাহলে তারা এ ধরনের জঘন্য কাজ করতে পারতো না।’
তিনি বলেন, বিএনপি নেতৃবৃন্দ এখন দাবি করছেন, বেগম খালেদা জিয়ার স্বাক্ষর জাল করে তার নামে নিবন্ধটি প্রকাশ করা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, ‘তবে আমার প্রশ্ন হল, ওয়াশিংটন টাইমস কিভাবে তার (বেগম খালেদা জিয়ার) নামে নিবন্ধ প্রকাশ করার ঔদ্ধত্য দেখালো?’
শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি’র সিনিয়র নেতৃবৃন্দ নিবন্ধটি প্রকাশের পর এর পক্ষে বিভিন্ন মন্তব্য করলেও তারা এখন পাল্টা যুক্তি দেখাচ্ছেন। তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, ‘যদি তার স্বাক্ষর সত্যিই জাল করা হয়, তাহলে কেন বিএনপি ওয়াশিংটন টাইমস কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে মামলা করছে না?’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, নিবন্ধটি যে খালেদা জিয়া নিজেই লিখেছেন ওয়াশিংটন টাইমস কর্তৃপক্ষ তা নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘এটাই প্রমাণ করে, বিএনপি কতবড় মিথ্যাবাদী দল?’
বেগম জিয়ার নিবন্ধ প্রকাশে ওয়াশিংটন টাইমস কর্তৃপক্ষের সঙ্গে মধ্যস্থতাকারী লন্ডনভিত্তিক জনসংযোগ প্রতিষ্ঠানের ঠিকানা খুঁজে বের করতে প্রবাসী বাংলাদেশীদের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
পরবর্তী নির্বাচন অন্যান্য গণতান্ত্রিক দেশের মতোই হবে : প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পুনরায় বলেছেন, যুক্তরাজ্য ও বিশ্বব্যাপী অন্যান্য গণতান্ত্রিক দেশে যেভাবে নির্বাচন হয় বাংলাদেশের পরবর্তী সাধারণ নির্বাচনও একইভাবে অনুষ্ঠিত হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের সরকার যুক্তরাজ্য ও অন্যান্য গণতান্ত্রিক দেশের প্রক্রিয়ায় পরবর্তী সাধারণ নির্বাচন করবে।’
ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী উইলিয়াম হেগ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রীর হোটেল স্যুটে তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে এলে শেখ হাসিনা এ কথা বলেন। বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।
বিরোধী দলের তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনর্বহালের দাবির উল্লেখ করে তিনি বলেন, দেশের সর্বোচ্চ আদালত এই ব্যবস্থা অসাংবিধানিক ঘোষণা করেছে এবং পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে এটি বিল্প্তু হয়ে গেছে।
গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার ধারাবাহিকতার প্রয়োজনীতার ওপর গুরুত্বারোপ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, নিরবচ্ছিন্ন গণতন্ত্র ছাড়া একটি জাতির কাক্সিক্ষত উন্নয়ন সাধন সম্ভব নয়।
যুদ্ধাপরাধীদের চলমান বিচার প্রক্রিয়া সম্পর্কে শেখ হাসিনা বলেন, ১৯৭১ সালে মানবতার বিরুদ্ধে অমার্জনীয় অপরাধ সংঘটনকারীদের বিচার করার মাধামে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ভাল কাজ করছে।
জামায়াতে ইসলামী ও হেফাজতে ইসলামের সাম্প্রতিক সহিংসতা সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘আমরা এসব বরদাশত করতে পারি না, কারণ আমাদের সরকার সব ধরনের চরম পন্থার বিরুদ্ধে।’
বাংলাদেশের গার্মেন্ট খাত নিয়ে আলোচনাকালে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকার দেশের তৈরি পোশাক খাতের ৪০ লাখ শ্রমিকের কল্যাণ নিশ্চিত করতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে।
তিনি ২০১৫ সালের আগেই কিছু সহাগ্রাব্দ লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সহায়তার জন্য ব্রিটিশ সরকারকে ধন্যবাদ জানান। ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেগ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশে সাধিত ব্যাপক উন্নয়নের প্রশংসা করেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপু মনি, এ্যাম্বাসেডর এ্যাট লার্জ এম জিয়া উদ্দিন, ব্রিটেনে বাংলাদেশের হাই কমিশনার মোহাম্মদ মিজারুল কায়েস ও প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। প্রধানমন্ত্রী ৫ দিনের সরকারি সফরে বৃহস্পতিবার যুক্তরাজ্য পৌঁছেছেন।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button