গাজীপুর শিল্প এলাকায় রণক্ষেত্র : নিহত ১, বিজিবি মোতায়েন

Laberগাজীপুরে সোমবার শ্রমিকদের সঙ্গে পুলিশের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে। এতে পুরো এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। সংঘর্ষে বাদশা মিয়া (২৬) নামে এক শ্রমিক নিহত ও পুলিশসহ শতাধিক শ্রমিক-পথচারী আহত হয়েছে। সংঘর্ষকালে অন্তত ২৫ জন গুলিবিদ্ধ হয়েছে বলে দাবি করেছে শ্রমিকরা। শ্রমিক অসন্তোষের কারণে অধিকাংশ কারখানা ছুটি ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ। শিল্প এলাকায় মোতায়েন করা হয়েছে বিজিবি।
এলাকাবাসী ও শ্রমিকরা জানায়, সদর উপজেলার কাশিমপুর শিল্পাঞ্চলের সারদাগঞ্জে জিএমএস কম্পোজিট নিটিং ইন্ডা. লি. নামে তৈরি পোশাক কারখানার সুইং সেকশনের এক নারী কর্মীকে একজন কর্মকর্তা মারধর করেন। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ওই কারখানার শ্রমিকরা উত্তেজিত হয়ে উঠে। তারা ঘটনার বিচার দাবিতে দুপুরে খাবারের বিরতির পর কর্মবিরতি ও বিক্ষোভ শুরু করে। এ সময় তারা কারখানার ভেতরে ভাঙচুর করে। একপর্যায়ে শ্রমিকরা কারখানা থেকে বেরিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকে। শ্রমিকদের সঙ্গে আশেপাশের কয়েক কারখানার শ্রমিকরা এসে যোগ দিয়ে নির্বিচারে ভাঙচুর করে।
এ সময় পুলিশ তাদের বাধা দিলে শ্রমিকরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছুঁড়লে পুলিশের কয়েক সদস্য আহত হয়। শ্রমিকদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ লাঠিচার্জ করলে শ্রমিকদের সঙ্গে পুলিশের দফায় দফায় ব্যাপক সংঘর্ষ ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়।  সংঘর্ষে পুরো এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। এক পর্যায়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ও আনসার সদস্যরা গুলি ও টিয়ার শেল ছুড়ে। এতে অর্ধশতাধিক শ্রমিক ও পথচারী আহত হয়।
এদের মধ্যে গুলিবিদ্ধসহ বেশ কয়েকজনকে সাভারের এনাম মেডিকেলে কলেজ হাসপাতাল ও ঢাকা মেডিকেল কলেজসহ বিভিন্ন হাসপাতাল ও ক্লিনিকে নেয়া হয়। এদের মধ্যে এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কর্তৃব্যরত চিকিৎসকরা বাদশা মিয়া (২৬) নামে এক শ্রমিককে মৃত বলে ঘোষণা করে। সে ওই কারখানার প্যাডন মাস্টার পদে কর্মরত ছিল। তার গ্রামের বাড়ি ফরিদপুরে।
শ্রমিকরা জানায়, পুলিশ ও আনসার সদস্যদের গুলিতে অন্তত ২৫ জন গুলিবিদ্ধ হয়েছে।
এ ঘটনার জের ধরে সন্ধ্যায়ও সারদাগঞ্জ-শৈলডুবি এলাকার ডিবিএল, জিএমএসসহ বিভিন্ন কারখানার শ্রমিক-পুলিশের সংঘর্ষ হয়। সন্ধ্যায় সুলতান মার্কেটসহ আশেপাশের এলাকায় বিক্ষুদ্ধ শ্রমিকদের সঙ্গে পুলিশের আবারো সংঘর্ষ ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ টিয়ার সেল ও শটগানের গুলি ছুঁড়েছে। রাতে এ রিপোর্ট লিখা পর্যন্ত সংঘর্ষ চলছিল।
গাজীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সঞ্জিত কুমার রায় জানান, গাজীপুরের বিসিক কোনাবাড়িসহ আশেপাশের এলাকায় গত কয়েকদিন ধরে অব্যাহতভাবে শ্রমিক অসন্তোষ বিরাজ করে আসছে। এর প্রেক্ষিতে তিন প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। সোমবার সকাল থেকে কোনাবাড়ি শিল্প এলাকায় বিজিবি টহল শুরু করেছে। এর পাশাপাশি শিল্পাঞ্চল কোনাবাড়ি, কাশিমপুর ও জরুনসব বিভিন্ন এলাকায় শিল্প ও থানা পুলিশ মোতায়েন রয়েছে বলে তিনি জানান।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button