অতিথি পাখির কলকাকলিতে মুখর সিলেটের হাওরাঞ্চল

Birdধ্রুবজ্যোতি দে, সিলেট: হাওর বাওর আর নদ-নদী বেষ্টিত আমাদের এই সিলেট অঞ্চল। এখানে হাকালুকি, টাঙ্গুয়াসহ রয়েছে ছোট বড় অনেক হাওর-জলাশয়। আর এই সকল জলাশয়ে প্রতি বছর শীতের শুরুতেই দলে দলে আসতে থাকে নানা প্রজাতির অতিথি পাখি।
সাধারণত শীত প্রধান দেশ সাইবেরিয়া, চীন, মঙ্গোলিয়া, নেপালসহ আরো অনেক দেশ থেকে আসে এসব অতিথি। এদের মধ্যে রয়েছে বালিহাঁস ,পানকৌড়ি, ডাহুক, কানা বক, লেন্জা, সরালি, মাছরাঙ্গা, গাংচিল অন্যতম। বাংলার আলো বাতাসের সাথে এই পাখিগুলোর রয়েছে- এক ধরণের আত্মিক সম্পর্ক। যে কারণে প্রতিবছর তারা বাংলাদেশের প্রকৃতিকে নিরাপদ ভেবে শীত মৌসুমে এসে ভীড় জমায়।
মৌলভীবাজার জেলার রাজনগর উপজেলার মাথিউরা চা বাগানে রয়েছে-এ রকম একটি
ছোট্ট ঝিল। নাম তার পাখির বিল। এখানে প্রতি বছরের মতো এবারো এসেছে ঝাঁকে ঝাঁকে অতিথিরা। অতিথিদের কলকাকলিতে মুখরিত পুরো ঝিল এলাকা। আর অতিথিদের বরণ করে নিতে পাখির বিলও যেন সেজেছে প্রকৃতির এক অপূর্ব সাজে। সমস্ত বিল জুড়ে ফুটেছে শত শত লাল শাপলা। এক পাশে চা বাগান আর অন্য পাশে সারি সারি রাবার বাগান।
মধ্যখানে দৃষ্টিনন্দন অতিথিদের উড়াউড়ি, ডানা ঝাপটানোর শব্দ। পাখিগুলোর স্বাধীন বিচরণ দেখে মনের মধ্যে অন্য রকম অনুভূতির সৃষ্টি হয়।
তাদের এমন সুন্দর আর মনোরম দৃশ্য উপভোগ করতে প্রতিদিন বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসছেন প্রকৃতিপ্রেমীরা। অতিথিদের নিরাপত্তার জন্য বাগান কর্তৃপক্ষও নিয়েছে পর্যাপ্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা। বসানো হয়েছে সাইনবোর্ড। তারপরও এক শ্রেণীর মানুষ এসব পাখিকে হত্যার জন্য উদ্যত থাকে সব সময়।
পাখির বিলে অতিথি পাখিদের দেখতে আসা রায়হান, এনাম, ফয়সল জানান, প্রতিবছর আমাদের দেশে পাখিগুলো আসে। এটা আমাদের জন্য, আমাদের প্রকৃতির জন্য সুখের। কিন্তু আমরা এই পাখিগুলোর নিরাপত্তা দিতে পারি না। তারা বলেন, পাখিগুলোর নিরাপত্তা দিতে স্থানীয় প্রশাসন ইচ্ছে করলে নানা উদ্যোগ গ্রহণ করতে পারে।
স্থানীয় বাসিন্দা আজম মিয়া বলেন, প্রতি বছর এই সময় পাখি শিকারীরা সামান্য কিছু
টাকার জন্য সুন্দর পাখিদের বাজারে বিক্রি করতে নিয়ে যায়। প্রকৃতির শত্রু পাখি শিকারীর হাত থেকে অতিথিদের রক্ষা করা জরুরী। নইলে এক সময় সিলেট থেকে অতিথি পাখি বিমুখ হয়ে যাবে।
একইভাবে শীতের শুরু থেকে সুনামগঞ্জের বিভিন্ন হাওর জলাশয়েও অতিথি পাখিরা ভিড় শুরু করেছে। পাখিদের মুখরতায় হাওরগুলো পাখিময় হয়ে উঠেছে। খোলা হাওর জুড়ে তাদের ছোটাছুটি বাড়িয়ে দিয়েছে হাওয়ের সৌন্দর্য। সেই সৌন্দর্য এখন মুগ্ধ করছে মানুষকে। তবে, শীতের মাঝামাঝি সময়ে পাখিদের সংখ্যা আরো বাড়বে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
বিভিন্ন প্রজাতির অতিথি পাখিদের দেখতে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে প্রায় প্রতিদিন মানুষ আসছেন সুনামগঞ্জে। পাখির প্রতি মানুষের এই প্রেম সব সময় অটুট থাকুক এটাই সবার প্রত্যাশা।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button