নিজ দলে বিরোধিতায় অস্বস্তিতে ওবামা

Obamaইরানের সঙ্গে পরমাণু চুক্তি নিয়ে দেশ ও দেশের বাইরে এবং নিজ দলে দীর্ঘস্থায়ী বিভেদের মুখে রয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। দলীয় প্রভাবশালী এক সিনেটরের ওই চুক্তির বিপক্ষে অবস্থান নেওয়ায় ওবামার ডেমোক্র্যাট পার্টিতে তোলপাড় চলছে। এতে আগামী বছর সিনেটে দলের নেতৃত্ব নিয়ে সংকট দেখা দিতে পারে। এ নিয়ে ব্যাপক অস্বস্তিতে রয়েছেন ওবামা। এ ছাড়া ইসরায়েলপন্থি প্রভাবশালী গোষ্ঠী আইপ্যাকের সঙ্গেও দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়েছেন তিনি। আর বিরোধী রিপাবলিকান পার্টি আগে থেকেই এ চুক্তির বিপক্ষে মাঠে সক্রিয় রয়েছে। পুরো বিষয়টিকে বিপজ্জনক বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
পরমাণু চুক্তিবিরোধী রিপাবলিকান পার্টি যখন শুক্রবার ২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে দলীয় মনোনয়নপ্রত্যাশীদের বিতর্ক অনুষ্ঠান করছে, ঠিক তখনই এক বিবৃতিতে ডেমোক্র্যাট দলীয় শীর্ষ সিনেটর চাক শুমার ওই চুক্তির বিপক্ষে তার অবস্থান ঘোষণা করেন। বিবৃতিতে তিনি বলেন, তেহরানের পরমাণু স্থাপনা পর্যবেক্ষণের যে পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে তা যথেষ্ট নয়, বরং এতে ইরান পরমাণু শক্তিধর দেশ হিসেবে আবির্ভূত হবে। চুক্তি কার্যকরে প্রাণান্তকর চেষ্টার মধ্যে আইন পরিষদ কংগ্রেসের সবচেয়ে প্রভাবশালী এই ইহুদি সদস্যের সমর্থন হারানো ওবামার জন্য একটি বড় আঘাত। হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র যশ আর্নেস্ট বলেন, ‘শুমারের এ সিদ্ধান্ত হতাশাজনক তবে বিস্ময়কর নয়।’
ওবামা ঘনিষ্ঠদের ক্ষোভ শুমারকে দলের নেতৃত্ব থেকেও ছিটকে ফেলতে পারে। ২০১৬ সালে কংগ্রেসের উচ্চকক্ষ সিনেটে ডেমোক্র্যাট দলের নেতা হ্যারি রিডের মেয়াদ শেষ হচ্ছে। রিডের স্থলাভিষিক্ত হওয়ার জোরালো সম্ভাবনা ছিল চাক শুমারের। ওবামার সাবেক একজন জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টা ড্যান পিফেইফার বলেন, ‘সিনেটর শুমার প্রেসিডেন্ট ওবামা, হিলারি ক্লিনটন ও বেশির ভাগ ডেমোক্র্যাটের বিরুদ্ধে গিয়ে রিপাবলিকানদের পক্ষ নিয়েছেন। এতে তার জন্য ২০১৬ সালে ডেমোক্র্যাটদের নেতৃত্ব দেওয়া কঠিন হয়ে গেল।’ ওবামার সঙ্গে শুমারের মতবিরোধ নতুন নয়। শুমার ইরাক যুদ্ধের পক্ষে ভোট দিয়েছিলেন, ওবামার বহুল আলোচিত স্বাস্থ্যসেবা আইনকে ভুল বলেছিলেন।
এদিকে চলতি সপ্তাহেই ইসরায়েলপন্থি গোষ্ঠী আমেরিকান ইসরায়েল পাবলিক অ্যাফেয়ার্স কমিটির (আইপ্যাক) দুই শীর্ষ নেতার সঙ্গে হোয়াইট হাউসে বৈঠক করেন ওবামা। সেখানে তিনি সরাসরি অভিযোগ করেন এ গোষ্ঠীটি চুক্তি ঠেকাতে শত কোটি ডলার ব্যয় করছে। পরে একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে দেওয়া বক্তব্যে নাম উল্লেখ না করে তিনি গোষ্ঠীটিকে দোষারোপ করেন। আগেও ইসরায়েল ও আইপ্যাকের সঙ্গে দ্বন্দ্বে জড়িয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্টরা। তবে বিশ্লেষকরা বলছেন এবার এটি এক নতুন মাত্রা পেয়েছে। বিষয়টি অনেকটা বিপজ্জনক পর্যায়ে রয়েছে বলে মনে করেন তারা। আইপ্যাক তাদের ৬০ জন প্রতিনিধি পাঠিয়ে চাক শুমারকে ওই চুক্তির বিষয়ে বুঝিয়েছিল। গোষ্ঠীটি ইতিমধ্যেই পরমাণু চুক্তিবিরোধী বিজ্ঞাপনে আড়াই কোটি ডলার ব্যয় করেছে।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button