অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা

ঘুরে দাঁড়িয়েছে চীন

চলমান বিপর্যয়ের মধ্যে যেখানে বিশ্বব্যাপী শেয়ার মার্কেটে ধস নেমেছে সেখানে অনেকটাই ঘুরে দাঁড়িয়েছে চীন। বলা যায়, এক্ষেত্রে বাজিমাত করেছে দেশটি। সম্প্রতি চীনের পশ্চিমাংশের অন্তর্ভুক্ত কম্পানিগুলো ২০ বিলিয়ন ডলার সমপরিমানের প্রায় ৩০ শতাংশ শেয়ার কিনে নিয়েছে। এক্ষেত্রে দেশটির প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ইউরোপীয় এবং বুদ্ধিমান মার্কিনি ডেমোক্র্যাটদেরও ছাড়িয়ে গেছেন। তিনি পুরো বিশ্বের চোখের সামনে একটি দুর্দান্ত খেলা খেলেছেন।

সম্প্রতি করোনাভাইরাসের কারনে চীনের উহানের পরিস্থিতি খুবই খারাপ দিক চলে যায়। এ কারণে, চীনা মুদ্রার মান হ্রাস পেতে শুরু করে। কিন্তু চীনা সেন্ট্রাল ব্যাংক এই পতন রোধ করতে কোনো ধরনের পদক্ষেপ নেয়নি। এমন অনেক গুজবও রটেছিল যে, করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য চীনের পর্যাপ্ত মাস্কও ছিল না। এই গুজবের মধ্যেও শি জিনপিংয়ের বক্তব্য ছিল যে, তিনি সীমান্ত অবরুদ্ধ করে উহান বাসিন্দাদের রক্ষা করতে প্রস্তুত রয়েছেন। এদিকে, চীনা প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান এবং রাসায়নিক শিল্পের শেয়ারের দাম ৮৮ শতাংশ হ্রাস পায়।
এক পর্যায়ে বড় আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো (ফিন্যান্সিয়াল শার্ক) সকল চীনা স্টক বিক্রি শুরু করে। কিন্তু কেউ এগুলো কিনতে চায়নি। সেগুলি পুরোপুরি অবমূল্যায়িত হয়ে যায়। এমন পরিস্থিতিতে দুর্দান্ত একটি পদক্ষেপ নিয়েছেন শি জিনপিং। পুরো এক সপ্তাহ অপেক্ষা করেছিলেন তিনি। তিনি সংবাদ সম্মেলনে এমন হাসিমুখে কথা বলেছিলেন যে, মনে হচ্ছিল যেন বিশেষ কিছুই হয়নি।
যখন শেয়ারগুলোর দাম অনুমোদিত সীমা ছাড়িয়ে যায়, তিনি সে সময় একইসাথে সমস্ত ইউরোপীয় এবং আমেরিকানদের শেয়ার কেনার নির্দেশ দেন। এরপরে, বড় আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো (ফিন্যান্সিয়াল শার্ক) বুঝতে পেরেছিল যে, তারা প্রতারণার শিকার এবং দেউলিয়া হয়ে গেছে। তবে তখন খুব দেরি হয়ে গেছে। কারণ সমস্ত শেয়ার চীনের আয়ত্বে চলে যায়। চীন এই সময়ে কেবল ২০০০ বিলিয়ন ডলার আয় করেনি, আবারও ইউরোপীয়রা এবং আমেরিকানদের দ্বারা নির্মিত সংস্থাগুলির সংখ্যাগরিষ্ঠ শেয়ারহোল্ডার হয়ে ওঠে। ওই শেয়ারগুলো এখন চীনের কম্পানিগুলোর অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। এই চীনা কম্পানিগুলো ভারী শিল্পের (হেভি ইনডাস্ট্রি) মালিক হয়ে উঠেছে যার ওপর ইইউ (ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন) আমেরিকা এবং পুরো বিশ্ব নির্ভরশীল। এখন থেকে (ওই শেয়ারগুলোর ) দাম নির্ধারণ করবে চীন এবং দেশটির কম্পানিগুলোর আয় চীনের মধ্যেই থাকবে। এই শেয়ারগুলো চীনেই থাকবে এবং সমস্ত চীনা সোনার রিজার্ভ বজায় রাখবে।
এই প্রেক্ষিতে বলা যায় যে, আমেরিকান এবং ইউরোপীয় ‘ফিন্যান্সিয়াল শার্ক’ গুলো নির্বোধ প্রমাণিত হয়েছে (তারা চীনের চালে হেরে গেছে)। কয়েক মিনিটের মধ্যে চীনারা তাদের বেশিরভাগ শেয়ার সংগ্রহ করেছেন, যা এখন কোটি কোটি ডলারের লভ্যাংশ পাচ্ছে। শেয়ারবাজারের ইতিহাসে এমন উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত সাধারণত খুব একটা দেখা যায় না।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button