ষষ্ঠ মুসলিম চ্যারিটি রান ১৭ সেপ্টেম্বর

আগামী ১৭ সেপ্টেম্বর রোববার সকাল সাড়ে ১০টায় পূর্ব লন্ডনের ভিক্টোরিয়া পার্কে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ষষ্ঠ মুসলিম চ্যারিটি রান। এই চ্যারিটি রানকে সফল করতে চলছে ব্যাপক প্রস্তুতি। কমিউনিটির বিভিন্নস্তরের মানুষের মধ্যে ব্যাপক সাড়া পড়েছে। ছেলে-বুড়ো যুবক বিপুল সংখ্যক মানুষ চ্যারিটি রানে অংশগ্রহণের জন্য নাম রেজিস্টেশন করছেন।
এ উপলক্ষে ৫ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার বিকেলে লন্ডন মুসলিম সেন্টারের চতুর্থতলাস্থ সেমিনার হলে বাংলা মিডিয়ার সাংবাদিকদের স্বতঃস্ফুর্ত উপস্থিতিতে এক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন মসজিদের বোর্ড অব ম্যানেজমেন্টের সেক্রেটারি আইয়ূব খান। শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন নির্বাহী পরিচালক দেলওয়ার খান। উপস্থিত ছিলেন মসজিদের ট্রেজারার মোহাম্মদ আব্দুল মালিক, অ্যাসেট এন্ড ফ্যাসেলিটি ম্যানেজার আসাদ জামান ও সিনিয়র ফান্ডরেইজিং অফিসার তজম্মুল আলী।
লিখিত বক্তব্যে জনাব আইয়ূব খান বলেন, প্রতিবছর গ্রীস্মকাল এলেই কমিউনিটির মানুষ ইস্ট লন্ডন মসজিদের ৫ কিলোমিটার দৌড় প্রতিযোগিতার জন্য অপেক্ষায় থাকেন। কারণ এই দিনটিতে তাঁরা খোলা মাঠে একত্রে মিলিত হওয়ার সুযোগ পান। দৌঁড়ে, হেঁটে, প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে আনন্দ উপভোগ করে পারেন। তিনি বলেন, ২০১২ সালে আমরা যখন ‘রান ফর ইউর মস্ক’ কর্মসূচি শুরু করি তখন ভাবিনি এটা এতোদূর এগিয়ে যাবে। কিন্তু এক বছর, দুই বছর করে এবার এই কর্মসূচি ষষ্ঠ বর্ষে পা রাখলো। এটি এখন বছরের একটি সেরা কর্মসূচি।
এই কর্মসূচির লক্ষ্য শুধু ফান্ডরেইজিং নয়, কমিউনিটির মানুষকে স্বাস্থ্যসচেতন করা একটি অন্যতম উদ্দেশ্য। আমরা এ ক্ষেত্রে সফল হয়েছি। চ্যারিটি রান নিয়ে মানুষের মধ্যে বেশ আগ্রহ সৃষ্টি হয়েছে। অনেকেই ৫ বছর আগে যে দৌড় শুরু করেছিলেন এখন নিয়মিত দৌড়াচ্ছেন। শুরুতে একসাথে ৫ মাইল দৌড়ানোর পর পরবর্তীতে অভ্যাস করে নিয়েছেন। এখন প্রতিদিন সকালে নিয়মিত দৌড়েন এবং হাঁটেন। মানুষের মধ্যে শারিরীক ব্যায়ামের অভ্যেস গড়ে তোলার ক্ষেত্রে মুসলিম চ্যারিটি রান সত্যিকার অর্থে একটি সফল কর্মসূচি। দিনদিনই এই কর্মসূচি আরো বড় হচ্ছে।
জনাব আইয়ূব খান বলেন, শুরুতে এই কর্মসূচির নাম ছিলো ‘রান ফর ইউর মস্ক’। প্রথম তিন বছরের সাফল্যের ধারাবাহিকতায় ২০১৫ সালে কর্মসূচির নাম পরিবর্তন করে মুসলিম চ্যারিটি রান করা হয়। মূল উদ্দেশ্য ছিলো, এই কর্মসূচির মাধ্যমে অন্যান্য চ্যারিটি সংস্থাকে ইস্ট লন্ডন মসজিদের সাথে সম্পৃক্ত করা। গত দুই বছর অত্যন্ত সফলতার সাথে এটি মুসলিম চ্যারিটি রান হিসেবে পরিচালিত হয় এবং এই সময়ে অনেক চ্যারিটি সংস্থাকে ইস্ট লন্ডন মসজিদের সাথে সম্পৃক্ত করা সম্ভব হয়।
ইতিপূর্বে অংশগ্রহণকারীরা শুধু ইস্ট লন্ডন মসজিদের জন্য ফান্ডরেইজ করতে পারতেন। এখন তাঁরা ইস্ট লন্ডন মসজিদ ছাড়াও অন্যান্য চ্যারিটির জন্য ফান্ডরেইজ করতে পারছেন। নাম পরিবর্তনের ফলে বিগত বছরগুলোতে ইসলামিক রিলিফ, মুসলিম এইড, হিউম্যান অ্যাপিল, জামিয়াতুল উম্মাহসহ ২১টি চ্যারিটি সংগঠন এই কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করে ফান্ডরেইজ করে।
লিখিত বক্তব্যে তিনি আরো বলেন, প্রতিবারেরমতো এবারও ৪ ক্যাটাগরিতে প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হবে। অনুর্ধ ১২ বছর, ১৩ থেকে ১৭ বছর, ১৮ থেকে ৩৪ বছর,  ৩৫ থেকে ৫০ বছর এবং ৫১ ও ততোর্ধ বয়স ক্যাটাগরি। এতে বিজয়ীদের মধ্যে আকর্ষনীয় পুরষ্কার প্রদান করা হবে। তাছাড়াও শিশু-কিশোরদের জন্য বাউন্সি ক্যাসেল, রাইডসহ থাকবে বিভিন্ন ধরনের খেলাধূলা। থাকবে একটি হেলথ স্টল। যেখানে দৌড়ে অংশগ্রহণকারীরা বিনামূলে শারিরীক পরীক্ষা-নীরিক্ষা করাতে পারবেন। প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণে আগ্রহীরা www.muslimcharityrun.com ওয়েবসাইট ভিজিট অথবা ০২০ ৭৬৫০ ৩০০০ নাম্বারে টেলিফোন করে তাঁদের নাম রেজিষ্ট্রেশন করতে পারবেন।  লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, দুই বছর আগে কমিউনিটির মানুষের সাহায্যে দেড় মিলিয়ন পাউন্ড ব্যয়ে মসজিদসংলগ্ন পরিত্যাক্ত সিনাগগ ভবনটি ক্রয় করা হয়। এর মধ্যে ১.২ মিলিয়ন পাউন্ড কমিউনিটির মানুষ দান করেন। তবে এখনও সিনাগগ ভবন বাবদ ৩শ হাজার পাউন্ড ঋণ রয়েছে। এদিকে মারিয়াম সেন্টার নির্মাণ বাবদ এখনও ২.৮ মিলিয়ন পাউন্ড ঋণ আছে। সুতরাং ইস্ট লন্ডন মসজিদকে পরিপুর্নভাবে ঋণমুক্ত করতে সবমিলিয়ে এখনও ৩.১ মিলিয়ন পাউন্ড প্রয়োজন।
এই ঋণ পরিশোধে মুসলিম চ্যারিটি রান আয়োজন, রামাদ্বানে মসজিদ ও টেলিভিশনে বিশেষ ফান্ডরেইজিং ইত্যাদি কার্যক্রম পরিচালিত হয়। আমরা আশাবাদী, কমিউনিটির মানুষের দান অব্যাহত থাকবে এবং খুব শিগগিরই মসজিদকে ঋণমুক্ত করা সম্ভব হবে।
সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন লন্ডন বাংলা প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি সাপ্তাহিক জনমত সম্পাদক নবাব উদ্দিন, সপ্তাহিক সুরমার বিশেষ প্রতিনিধি বিশিষ্ট সাংবাদিক কে এম আবু তাহের চৌধুরী, সাংবাদিক-কলামিস্ট নজরুল ইসলাম বাসন, সাপ্তাহিক দেশ সম্পাদক তাইসির মাহমুদ, এটিএন বাংলার সিনিয়র রিপোর্টার মোস্তাক বাবুল, ওয়ান বাংলা নিউজ সম্পাদক জাকির হোসাইন কয়েস, সাপ্তাহিক বাংলা সংলাপ সম্পাদক মোশাহিদ আলী, লন্ডন বিডি নিউজ২৪ এর প্রধান সম্পাদক আব্দুল বাসিত বাদশা, বাংলা পোস্টের সহ সম্পাদক জয়নাল আবেদীন, সাপ্তাহিক দেশ এর কমিউনিটি নিউজ এডিটর রোমান বখত চৌধুরী, এলবিটিভির ম্যানেজিং ডাইরেক্টর শাহ ইউসুফ, সিনিয়র রিপোর্টার মিজানুর রহমান, সাপ্তাহিক পত্রিকার স্পেশাল কন্ট্রিবিউটর মতিউর রহমান চৌধুরী, সাপ্তাহিক জনমত প্রতিনিধি গোলাম মোহাম্মদ কিনু, চ্যানেল এস এর চীফ ক্যামেরাপার্সন রেজাউল করিম মৃধা, সাংবাদিক মাহবুব আলী খানশূর, সাংবাদিক আব্দুল মুনিম জাহেদী ক্যারল ও বাংলা টিভির প্রতিনিধি মুহাম্মদ মাসুদুজ্জামান।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button