ভোট দিতে পারছেন না রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথ !

Raniআজ ব্রিটেনে চলছে ৫৬তম পার্লামেন্ট নির্বাচনের ভোটগ্রহণ। দেশটির লাখ লাখ মানুষ আজ তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করলেও এই সুযোগের বাইরে থাকছে জেলের কয়েদি, ১৮ বছরের কম বয়সের শিশু ও খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের একটি অংশের (জেহোভাহ) অনুসারীরা। কিন্তু মজার ব্যাপার হচ্ছে, ভোট দেয়া থেকে বিরত থাকার এই তালিকায় আছেন ব্রিটেনের দীর্ঘতম রাজশাসক রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথও।
রাজপরিবারের ওয়েবসাইটে দেয়া তথ্য অনুযায়ী, ‘রাষ্ট্রের প্রধান হিসেবে রানীকে অবশ্যই রাজনীতিতে নিরপেক্ষ থাকতে হবে। যে দলই হাউস অব কমন্সের বেশি আসন দখল করতে পারবে, তাদের নিয়েই সরকার গঠন করবেন তিনি।’ তার পরিবারের অন্যান্য সদস্য সম্পর্কে বলা হয়েছে, ‘রাজশাসকের পরিবারের সদস্যরাও রাজনৈতিক পদ বা প্রার্থিতা নিয়ে রাজনীতি বা সংশ্লিষ্ট বিষয়ে অংশগ্রহণ থেকে বিরত থাকবেন।’
এতে আরো উল্লেখ করা হয়, রানীর পরিবারের সদস্যদের ভোট প্রদানে সরাসরি আইনি নিষেধাজ্ঞা নেই। কিন্তু রাজপরিবারের সার্বভৌমত্ব ও গ্রহণযোগ্যতা বজায় রাখার জন্য ভোট দেয়া থেকে তারা বিরত থাকেন। ব্রিটিশ সংবিধান অনুসারে রানী আইনসভার একটি অংশ। আর আইনসভার অংশ হয়ে তার সদস্য নির্ধারণের ভোটে অংশগ্রহণ যথার্থ মনে করে না দেশটির রাজপরিবার। আর এ কারণেই নির্বাচনে ভোট দিতে যাচ্ছেন না রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথ।
মূলধারার খ্রিস্টান সম্প্রদায় থেকে সরে আসা জেহোভাহ উইটনেসের এক লাখ ৪০ হাজার ভোটারও নির্বাচনে ভোটাধিকার প্রয়োগ করছেন না। এটা তারা করছেন তাদের নিজস্ব ধর্মীয় বিশ্বাস থেকেই। এখানে আইনগত বা রীতিগত কোনো বিরোধ নেই। জেহোভাহ উইটনেসের এক মুখপাত্র মার্ক ও’মালায়ে বলেন, ‘আপনি বাইবেল পড়লে বুঝতে পারবেন, ঈশ্বরের রাষ্ট্র এর মধ্যেই প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। আর সেই রাষ্ট্রের শাসক ঈশ্বরই। আমরা রাজনৈতিকভাবে নিরপেক্ষ। এই সরকারব্যবস্থার অনেক সীমাবদ্ধতা আছে। কারণ তারা মৃত্যুকে প্রতিরোধ কিংবা শিশুদের সুন্দর ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে পারে না। শুধু ঈশ্বরের সরকারই প্রকৃত সমস্যার সমাধান দিতে সক্ষম।’
একই সঙ্গে ভোট দেয়া থেকে বিরত থাকছেন দেশটির উচ্চকক্ষ হাউস অব লর্ডসের সদস্যরাও। তারা স্থানীয় ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের নির্বাচনে ভোট দিলেও পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ হাউস অব কমন্সের নির্বাচনে ভোট দেয়া থেকে বিরত থাকেন। হাউস অব লর্ডসের এক মুখপাত্র বলেন, ‘এটা শত বছরের রীতি। এর কারণ হচ্ছে, হাউস অব কমন্সে কারা নির্বাচিত হচ্ছেন, তা নিয়ে লর্ডসের প্রতিনিধিরা প্রভাব বিস্তার করতে পারেন না।’
উল্লেখ্য, ২০১০ সালে প্রার্থী হলেও এবার ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারছেন না লর্ড স্ক্রিভেন। লর্ড উপাধি পাওয়ার এবারই তার জীবনে ভোট দেয়া থেকে বিরত থাকার ঘটনা। তিনি একটু আক্ষেপের সুরেই বলেন, ‘সবকিছু ঠিকঠাকই আছে। আমাকে এখনো দলের জন্য লড়াই করে যেতে হচ্ছে, দলের মূল্যবোধ-বিশ্বাস এখনো আমি ধারণ করি। কিন্তু দলের এই প্রয়োজনের সময় আমার ভোটটি প্রয়োগ করতে পারছি না।’ তবে তিনি মনে করেন, সবারই ভোটাধিকার থাকা উচিত।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button