অক্সফোর্ড ও ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের কর ফাঁকি

Oxfordপ্যারাডাইস পেপার্সে এবার অক্সফোর্ড ও ক্যামব্রিজের মতো দুই বিখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম উঠে এসেছে। বিশ্ববিদ্যালয় দুটি এবং এদের অধিভুক্ত বহু কলেজ অফশোর কোম্পানিতে গোপনে কোটি কোটি ডলার বিনিয়োগ করেছে। পানামা পেপার্সের পর দুনিয়াজুড়ে নতুন আলোড়ন তুলেছে প্যারাডাইস পেপার্স। এতে ব্রিটেনের রানীসহ বিশ্বের বহু রাষ্ট্র ও সরকার প্রধান, রাজনীতিবিদ ও প্রভাবশালী ব্যক্তির গোপন সম্পদের তথ্য বেরিয়ে এসেছে। এবার এলো যুক্তরাজ্যের এই দুই খ্যাতনামা বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম। প্যারাডাইস পেপার্সের ফাঁস হওয়া নথিতে দেখা গেছে, খনিজ তেলের উৎপাদন ও গভীর সমুদ্র খননের মতো যৌথ প্রকল্পে বিনিয়োগ করেছে প্রতিষ্ঠানগুলো। দ্য গার্ডিয়ান এ খবর দিয়েছে।
নথিতে দেখা গেছে, এই দুই বিশ্ববিদ্যালয় কেইম্যান আইল্যান্ডভিত্তিক আমেরিকান অ্যান্ড ব্রিটিশ হেজ কোম্পানির সঙ্গে যৌথভাবে একটি তহবিলে তাদের কর ফাঁকির কয়েক বিলিয়ন ডলার জমা করেছেন। যুক্তরাষ্ট্রের ডেলাওয়্যার রাজ্যভিত্তিক ওই কোম্পানির তহবিলের সঙ্গে যৌথভাবে এই অর্থ জমা করা হয় যাতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো হেজ কোম্পানির তহবিলের ওপর মার্কিন কর এড়াতে পারে। নথির তথ্য মতে, ২০০৬ সালে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় কোলার ইন্টারন্যাশনাল নামের একটি ব্যক্তিমালিকানাধীন কোম্পানিতে ৩.৪ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করে। এই অর্থ দুটো আলাদা আলাদা তহবিলে রাখা হয়। অন্যদিকে একই তহবিলে ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় বিনিয়োগ করে ১.৭ মিলিয়ন ডলার। তহবিলগুলোর মধ্যে কোলার ইন্টারন্যাশনাল পার্টনার্স এ ধরনের তহবিলের ক্ষেত্রে বিশ্বের মধ্যে সর্ববৃহৎ তহবিল। এই তহবিলে বিশ্বের প্রায় ২০০টি সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রায় ৪.৮ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করেছে।
এদিকে এই দুই বিশ্ববিদ্যালয় ও তাদের অধিভুক্ত অসংখ্য সরকারি কলেজের কর ফাঁকির অর্থ অফশোর কোম্পানিতে বিনিয়োগের কারণে প্রতিষ্ঠানগুলোর নৈতিকতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এসেক্স বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাববিজ্ঞানের ইমেরিটাস অধ্যাপক প্রেম সিকা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর নৈতিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বলেন, ‘কেইম্যান আইল্যান্ডের কোনো কোম্পানিতে এই বিনিয়োগ কর ফাঁকি ছাড়া আর কিছুই নয়। কোম্পানিগুলোর কর্মকাণ্ড এমন নয়, এগুলো বিজ্ঞানের উন্নয়নে কিংবা মানবিক জ্ঞানের গবেষণায় কাজে লাগানো হয়।’ প্রেম সিকা বলেন, ‘বিনিয়োগ সিদ্ধান্তের ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর আরও স্বচ্ছ হওয়া উচিত। কারণ এগুলো সরকারি প্রতিষ্ঠান। তারা ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ সরকারি অর্থ গ্রহণ কর পরিচালিত হয়। আমাদের জানা দরকার, এই নগদ অর্থ দিয়ে তারা কী করছে?’

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button