কাঁটাছেঁড়া ছাড়া হার্টের সফল অস্ত্রোপচার
হৃদরোগের বাইপাস সার্জারি মানেই বুক থেকে পেট পর্যন্ত কাটা, সঙ্গে মোটা টাকা খরচ। এসব কারণে ভয়ে অনেকেই সাহস করতেন না ওপেনহার্ট সার্জারির। তবে এসব ছাপিয়ে কোন প্রকার কাটা-ছেঁড়া ছাড়াই হার্টের চিকিৎসায় সাফল্যে এনেছেন বাংলাদেশের চিকিৎসক আশরাফুল হক সিয়াম।
বেসরকারি হাসপাতালে এমআইসিএস পদ্ধতিতে অস্ত্রোপচারে লাখ দেড়েক টাকা গুণতে হলেও সরকারি হাসপাতালে তা মিলবে মাত্র ৫ থেকে ১০ হাজার টাকায়। আগামীতে একই পদ্ধতিতে বাইপাস সার্জারি ও ভালভ প্রতিস্থাপনের স্বপ্ন জাতীয় হৃদরোগ হাসপাতালের এই চিকিৎসকদের চোখে।
হাসিতেও যেন নূপুরের ছন্দ ১০ বছর বয়সী নূপুরের। হৃদযন্ত্রের জটিল অপারেশনের ৭২ ঘণ্টা না পেরুতেই হাসপাতাল থেকে ছুটির প্রস্তুতি চলছে তার। জাতীয় হৃদরোগ হাসপাতালে নূপুরের অস্ত্রোপচারে সময় লেগেছে আড়াই ঘণ্টার বেশি। ওপেন হার্টের আধুনিক এই সার্জারিতে কাটাছেড়ার ঝামেলা না থাকায় নূপুরের ঠোঁটে এই হাসির রেশ। নুপুর বলে, ‘সব সময় মাথা ব্যথা করতো। বেশি দৌঁড়ালে অস্থির লাগতো। এখন অপারেশন করে আর অস্থির লাগে না।’
জাতীয় হৃদরোগ হাসপাতালের কার্ডিয়াক সার্জারি বিভাগীয় প্রধান বলেন, ‘এই অস্ত্রোপচার করলে অন্তত ৭ দিন আইসিইউতে থাকতে হয়। অর্থাৎ এদিক ওদিক মিলিয়ে প্রায় ৩ সপ্তাহের ব্যাপার। কিন্তু এখন হাসপাতালে প্রবেশের দিন থেকে ৫ দিনের মধ্যে অপারেশন শেষ করে বাসায় পাঠিয়ে দিতে পারবো।’
২০১২ সাল থেকে ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশনে এই পদ্ধতিতে ৫১৮টি অস্ত্রোপচার হলেও খরচ অনেক রোগীর নাগালের বাইরে। নামমাত্র মূল্যে এই সেবা দিতেই গেল এক বছর দেশবিদেশে ছোটাছুটির কথা বললেন জাতীয় হৃদরোগ হাসপাতালের আবাসিক সার্জন ও সহকারী অধ্যাপক তরুণ চিকিৎসক আশরাফুল হক সিয়াম।
প্রচলিত পদ্ধতিতে সরকারি হাসপাতালেই যেখানে খরচ হতো ৫০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা সেখানে এমআইসিএম পদ্ধতিতে সার্জারি ব্যয় মাত্র ৫ হাজার টাকা। এখন থেকে নিয়মিতভাবেই এই সেবা দেয়া হবে বলে আশা জানালো জাতীয় হৃদরোগ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।