হারিয়ে যাচ্ছে কুরআন শিক্ষা ও মক্তব

Maktabপবিত্র কুরআন শিক্ষার প্রাথমিক স্তর হলো মক্তব। কিন্তু কালের বিবর্তনে দেশের এই ধর্মীয় ঐতিহ্য হারিয়ে যাচ্ছে। আগের মতো এখন আর খুব একটা ভেসে আসে না ভোর সকালের মক্তবে ছেলে-মেয়েদের কুরআন পাঠের মিষ্টি মধুর সুর। ভোরে ঘুম থেকে উঠে শিশুরা আল কায়দা বা কুরআন বুকে নিয়ে মক্তবে ছুটে যেতো। এখন পরিস্থিতি ভিন্ন। এখন শিশুরা মক্তবে ছুটে না। ছুটে কোচিং কিংবা স্কুলে। পেছনে একগাদা বই ব্যাগে অবুঝ শিশুগুলো স্কুলের কঠিন পড়াগুলো মুখস্থ করায় ব্যস্ত এখন। এখন আর কালিমায়ে তায়্যেবা, আলিফ, বা, তা এর শব্দে মুখরিত হয়ে উঠছে এই জনপদ। এখন আর পবিত্র কুরআনের শব্দের মধুর শব্দ কোন ঘর কিংবা মক্তব থেকে ভেসে আসে না। কক্সবাজারের আটটি উপজেলা পেকুয়া, চকরিয়া, কুতুবদিয়া, মহেশখালী, উখিয়া, টেকনাফ, রামু ও কক্সবাজার সদরের বিভিন্ন গ্রামে মনই নির্মম বাস্তবতা চোখে পড়েছে। এলাকার বিভিন্ন মসজিদে ইমামগণ মক্তবে ভোরে কুরআন শেখানোর আগ্রহ দেখালেও শিশুর অধিকাংশ অভিভাবকদের এতে কোন প্রকার ভ্রুক্ষেপ নেই। তারা চিন্তা করেন, তাদের শিশুটি স্কুলে যাবে। মক্তবে গিয়ে অহেতুক সময় নষ্ট করার কি দরকার। বরং বাড়িতে সামান্য তালিম দিলেই চলে। এধরনের পরিস্থিতি শুধু যে কক্সবাজারের বিভিন্ন স্থানে তা নয়, বরঞ্চ দেশের প্রতিটি এলাকাতেই একই পরিস্থিতি বিরাজমান। ধর্মপ্রাণ মুসলমান মনে করেন, বর্তমান আধুনিক শিক্ষা শিশুদেরকে কুরআন শিক্ষা এবং ধর্মীয় শিক্ষায় অনাগ্রহী করে তুলছে। অভিভাবকরাও এ বিষয়ে তেমন একটা আগ্রহ দেখান না। অভিভাবরা শিশুকে ভোরে তুলে স্কুলের জন্য প্রস্তুত করেন। মক্তবের জন্য করেন না। সচেতন মহল মনে করেন, আজকের শিশুটিই একদিন দেশের নেতৃত্ব দেবে। শিশুরা নৈতিক শিক্ষার প্রাথমিক জ্ঞান লাভ করে কুরআন শিক্ষার পাঠস্থান মক্তব থেকে। এখন যদি তা হারিয়ে যায়, তাহলে নৈতিকতা বিবর্জিত শিশুরাই আমাদের সামনে বড় হয়ে উঠবে। ফলে একটি সুন্দর, সভ্য সমাজের আশা করাটা খুব কঠিন। সচেতন অবিভাবকগণ মনে করেন, শিশুদেরকে পবিত্র কুরআন শিক্ষার প্রতি উৎসাহিত করা উচিত। অন্যথায় অচিরেই হারিয়ে যাবে দ্বীনি এবং পবিত্র কুরআন শিক্ষার পাঠস্থানগুলো। তাছাড়া প্রত্যেক মুসলমান শিশুর জন্য পবিত্র কুরআন পাঠ শেখা অবশ্যই কর্তব্য বলে ধর্মপ্রাণ মানুষ মনে করেন।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button