ইসলামে দাড়ি রাখার গুরুত্ব

Beardআসসালামু আলাইকুম ওয়া-রাহমাতুল্লাহ।
আল্লাহর হুকুম মতে রাসূল পাক (দঃ)-এর তরিকা মতে লিখতে বাধ্য হলাম। আল্লাহর হুকুম সৎ কাজের আদেশ অন্যায় কাজের বাধা দাও (আল কুরআন)। এই আল্লাহর হুকুম সকল মানবজাতির উপর ন্যস্ত এবং রাসূলে পাক (দঃ) এরশাদ সকলকে সৎ উপদেশ দাও বদ কাজ হতে ফিরাইবার চেষ্টা কর। যদি তা না কর তবে শীঘ্রই আল্লাহ তোমাদের উপর আজাব নাজিল করবেন। আজাব নাজিল হলে তখন দোয়া করলে দোয়া কবুল হবে না (তিরমিযী শরীফ)।
পবিত্র কুরআনে দাড়ি রাখার প্রতি গুরুতা¡রোপ। হাদিস শরীফে দাড়ি রাখার তাগিদ। দাড়ি রাখা সম্বন্ধে চার মাযহাবের বক্তব্য একমত। নবীজি (সা.)-এর সতর্কবাণী দাড়ি রাখার প্রতি দাড়ি কাটা সম্পর্কে হুকুম ও গুনাহের বিবরণ।
দাড়ি কাটা মারাত্মক কবীরা গুনাহ জারিয়া : রাসূলে আকরাম (সা.) বলেছেন আমার সমস্ত উম্মত ক্ষমার যোগ্য কিন্তু প্রকাশ্যে যারা গুনাহ করে, তারা ক্ষমা পাওয়ার যোগ্যতা রাখে না। দাড়ি মুন্ডন সে রকমই প্রকাশ্যে গুনাহ।
হযরত মুফতী রশীদ আহমদ গাঙ্গুহী (রহ.) আহসানুল ফাতাওয়া কিতাবে লিখেছেন যত কবীরা গুনাহ আছে তন্মধ্যে এই দাড়ি কাটার গুনাহটি দুটি কারণে খুবই মারাত্মক :
১) অন্যান্য গুনাহগুলো মানুষ গোপন করে আর এই গুনাহটিকে করে প্রকাশ্যে। দাড়ি কাটার গুনাহটি এমন একটি গুনাহ যে মানুষ দাড়ি মুড়িয়ে বাহাদুরের মত বুক ফুলিয়ে আলেমগণের সম্মুখে, পীর সাহেবগণের সম্মুখে, ইমাম সাহেবগণের সম্মুখে, ইউস্তাদের সম্মুখে, মাতা-পিতার সম্মুখে চলতে থাকে। এতে করে সে যেন বাড়িতে, গাড়িতে, রাস্তাঘাটে, বাজারে, মসজিদে,সব জায়গাতে প্রকাশ্যেভাবে আল্লাহ ও রাসূল (সা:) এর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করেছে।
২) অন্যান্য গুনাহগুলো তো সাময়িক হয়ে থাকে। যখনই করে, তখনই তা শেষ হয়ে যায়। কিন্তু দাড়ি কাটার গুনাহটি এত মারাত্মক যে, সে যখন নামাজ আদায় করে, তখনই এই গুনাহে লিপ্ত অবস্থায় থাকে, যখন রোজা রাখে তখনই এই গুনাহ তার সাথী হয়, যখন হজ্ব করে, তখনও এই গুনাহ তার সঙ্গী হয়, যখন কুরআন তিলাওয়াত ও জিকির করে, তখনও এই গুনাহ তার সহচর হয়ে থাকে। অনুরূপভাবে ঘুমন্ত অবস্থায় অন্য সমস্ত গুনাহ হতে সে বিরতকালেও তখন দাড়ি কাটার গুনাহ তার সাথে। এভাবে দাড়ি কাটার গুনাহ তার আমল নামায় অনবরত লেখা হতে থাকে। (নাউযুবিল্লাহ)।
দাড়ি কর্তনকারীকে ইমাম নিযুক্ত করা নাজায়িয : দাড়ি মুন্ডনকারী বা এক মুষ্টির ভেতর ছাটাইকারী ফাসিক বিধায় তার ইমামতী মাকরুহে তাহরীমী। সুতরাং তাকে ইমাম নিযুক্ত করা নাজায়িয। তেমনিভাবে দাড়ি কর্তনকারী ব্যক্তির জন্য ইমামতি করা, আযান দেয়া, ইকামত বলা শরীয়তে নিষেধ। এরূপ হাফেজদের পিছনে খতমেতারাবীহ না পড়ে মুত্তাকী ইমামের পিছনে সূরাহ তারাবীহ পড়ে নেয়া শ্রেয়।
দাড়ির প্রতি অবজ্ঞাকারীদের ঈমান ও বিবাহ নবায়ন করতে হবে : ইসলামের কোন শিয়ার (নিদর্শন) নিয়া ঠাট্টা মজাক করা বা রাসূলুল্লাহ (সা:)-এর কোন সুন্নাতকে অবজ্ঞা বা উপহাস করা কুফরী কাজ যা দ্বারা মানুষ ঈমান হতে খারিজ হয়ে যায়। রাসূলুল্লাহ (সা.) দাড়িতে ইসলামের শিয়ার (নিদর্শন) ও সমস্ত নবীগণের সর্বসম্মত সুন্নাহ তরিকা বলেছেন। সুতরাং যে সমস্ত মানুষ দাড়ি মুন্ডিয়ে বা পরিমাণের চেয়ে ছোট করে সুষ্ঠু বিবেচনা বিবৃতির কারণে দাড়ির প্রতি ঘৃণা প্রদর্শন করে, অথবা যারা দাড়িকে অবজ্ঞার দৃষ্টিতে দেখে, অথবা তার আত্মীয়-স্বজনের মধ্যে কেউ দাড়ি রাখায় নিয়ত করলে বা রাখলে, তাকে বাধা প্রদান, গালি গালাজ বা উপহাস করে, এ ধরনের লোকদের ঈমান নষ্ঠ হয়ে কাফির হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তাদের অবশ্যই কর্তব্য যে, তারা যেন অনতিবিলম্বে তাওবা করে নেয় এবং নিজেদের ঈমান ও বিবাহ শাদী নতুন করে দোহরিয়ে নেয়। (আহসানুল ফাতাওয়া)।
ভুল ত্রুটি হলে মাফ করবেন। ভুল হলে সহি শুদ্ধ ভাবে লিখিয়া মুসলমান ভাই ভগ্নিদেরকে দোজখের কঠিন শাস্তি থেকে বাঁচাইয়া বেহেস্তে নসিব হবার জন্য চেষ্টা করা প্রত্যেক ঈমানদার মুসলমানদের ঈমানী দায়িত্ব।
বিঃদ্রঃ পবিত্র রমজান মাসে  নামাজ রোজা ও অন্যান্য এবাদত যেন আল্লাহর দরবারে কবুল হয় চেষ্টা করা ঈমানদারের ঈমানী দায়িত্ব।
মাওলানা আলহাজ্ব হাফেজ মোঃ হোসাইন, প্রচারে মোজাহের আহমদ মসজিদ বায়তুশ শরফ, সাং-রামপুর, ডাকঘর, কুতুব দেওয়া গোলা সাতকানিয়া, চট্টগ্রাম।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button