শত্রু মনে হলে সাংবাদিকদের হত্যা করবে যুক্তরাষ্ট্র

শত্রুপক্ষের মনে হলে সাংবাদিকদেরও হত্যা করতে পারবে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির প্রতিরক্ষা দপ্তর পেন্টাগন প্রকাশিত নতুন ‘যুদ্ধ নির্দেশিকায়’ এমন অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তাতে বলা হয়ছে, যে সাংবাদিকের প্রতিবেদন যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থ পরিপন্থী, তাকে শত্রু হিসেবে চিহ্নিত করা হবে। এমন সাংবাদিকদের ‘বেআইনি যোদ্ধা’ হিসেবে বিবেচনা করা হবে। ‘ডিপার্টমেন্ট অব ডিফেন্স: ল’ অব ওয়ার ম্যানুয়াল’ শিরোনামে এক হাজার ১৭৬ পৃষ্ঠার ওই নির্দেশিকায় যুক্তরাষ্ট্রের কমান্ডারদের প্রতি শত্রু হত্যার বিভিন্ন নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ১২ জুন যা প্রকাশ করা হয়। এতে গুলি, বিস্ফোরণ, বোমা ছুড়ে, ছুরিকাঘাত বা কেটে শত্রুহত্যার কথা বলা হয়েছে। শত্রুপক্ষের ওপর আকস্মিক আক্রমণ কিংবা শত্রুপক্ষের হটে যাওয়া সেনাদের হত্যারও কথা বলা হয়েছে ওই নির্দেশনায়। তবে বিষপ্রয়োগে কিংবা গ্যাসপ্রয়োগের মাধ্যমে শ্বাসরোধে হত্যা করতে পারবে না যুক্তরাষ্ট্রের সেনারা।
এ নির্দেশিকা হবে গত কয়েক দশকের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের চার সশস্ত্র বাহিনীর (সেনা, নৌ, মেরিন, বিমান) প্রথম সমন্বিত নীতিমালা। এতদিন প্রতিটি সশস্ত্র বাহিনীই তাদের নিজস্ব নিয়মে চলেছে। যুদ্ধের আইন ভঙ্গ করে সশস্ত্র সংঘাতে অংশ নেওয়া যোদ্ধা/পক্ষকে (আল-কায়েদা বা সমগোত্রীয় সংগঠন) বোঝাতে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ ‘আন ল-ফুল এনিমি কমব্যাট্যান্ট’ শব্দটি ব্যবহার করেছিলেন। বর্তমান নির্দেশিকায় একই বিষয় বোঝাতে সমার্থক শব্দ ‘আনপ্রিভিলিজড বেলিজারেন্ট’ ব্যবহার করা হয়েছে। এই আনপ্রিভিলিজড বেলিজারেন্টের অন্তর্ভুক্ত হবে সাংবাদিকরাও।
এই নির্দেশিকায় সাংবাদিকদের সংজ্ঞায়নে বলা হয়েছে, ‘সাধারণত, সাংবাদিকরা বেসামরিক নাগরিক। তারপরও, সাংবাদিকরা সশস্ত্র বাহিনীর সদস্য, সশস্ত্র বাহিনীর সহায়তা প্রদানকারী অথবা বেআইনি যোদ্ধা হিসেবে বিবেচিত হতে পারে।’
এ বিষয়ে বেসরকারি নীতি গবেষণা সংস্থা আমেরিকান এন্টারপ্রাইজ ইনস্টিটিউটের (এইআই) মধ্যপ্রাচ্য বিশেষজ্ঞ মাইকেল রুবিন মার্কিন ওয়াশিংটন টাইমসকে বলেন, ‘হামাস (ফিলিস্তিনের গাজার শাসক দল) জাতিসংঘের স্কুলগুলোকে বর্ম হিসেবে ব্যবহার করে, ইরান নজরদারির জন্য বিভিন্ন দাতাসংস্থার কর্মীদের ব্যবহার করে। আর অনেক সন্ত্রাসীই সাংবাদিকদের বেশ ধরে।’
রুবিন বলেন, তালেবানবিরোধী নেতা আহমদ শাহ মাসুদকে হত্যার জন্য আল-কায়েদার দু’জন সন্ত্রাসী সাংবাদিক সেজে গিয়েছিল। চেচনিয়ার ইসলামপন্থীরাও ক্যামেরাপারসনদের সাথে নিয়ে বিভিন্ন মিশনে যেত। এইআইয়ের এ বিশেষজ্ঞ বলেন, ‘সাংবাদিকরা নতুন পরামর্শক হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। যে কেউ সাংবাদিক সাজতে পারে।’

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button