আফগানিস্তানে তুষারধসে প্রাণহানি ৯০

Afganistanআফগানিস্তানের রাজধানী কাবুল থেকে উত্তর দিকে বুধবার দফায় দফায় তুষারধসের ঘটনায় কমপক্ষে ৯০ জনের প্রাণহানি হয়েছে বলে স্থানীয় কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। দেশটির উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় পাঞ্জশির উপত্যকায় বুধবারের এই ধসে ১০০টি বাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে।
ওই অঞ্চলের ভারপ্রাপ্ত গভর্নর আবদুর রহমান কাবেরি জানিয়েছেন, ওই ঘটনায় কমপে ৯০ জন প্রাণ হারিয়েছে। তবে নিতের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এ ছাড়া এতে কমপক্ষে ১০০ বাড়ি ধ্বংস হয়েছে।
আফগানিস্তানের পাহাড়ি অঞ্চলগুলোতে প্রায়ই তুষারধসের ঘটনা ঘটে থাকে। ২০১০ ও ২০১২ সালে দেশটিতে তুষারধসে অনেক প্রাণহানি ঘটে। সম্প্রতি পাঞ্জশির প্রদেশ ও সালাং গিরিপথে ব্যাপক তুষারপাতে রাস্তাঘাট বন্ধ হয়ে যায়, গ্রামগুলো বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে এবং কয়েক দফা বরফধসের ঘটনা ঘটে। তবে পাঞ্জশির গভর্নর বলেন, তার প্রদেশে এত মারাত্মক তুষারধস তিরিশ বছরের মধ্যে দেখা যায়নি।
বুধবারের ওই দুর্যোগের পরপরই উদ্ধার তৎপরতা শুরু হয়েছে। স্থানীয় লোকজন খালি হাতেই জীবিতদের উদ্ধারের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। প্রতিকূল পরিস্থিতির কারণে উদ্ধার কাজ ব্যাহত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা। বেশির ভাগ প্রাণহানি ঘটেছে প্রত্যন্ত এলাকায়। ফলে মৃতের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে। অপেক্ষাকৃত মৃদু ও শুষ্ক শীতের পর এই তুষারধস ঘটল। কর্মকর্তারা অবিলম্বে জরুরি মানবিক সহায়তার আহ্বান জানিয়েছেন। পাঞ্জশির গভর্নর বলেন, কেন্দ্রীয় সরকার যদি দ্রুত মানবিক সহায়তা, যন্ত্রপাতি ও খাদ্য সরবরাহ না করে, তাহলে বিপর্যয় দেখা দেবে। তিনি বলেন, এ ঘটনায় কমপক্ষে ২০ জন আহত হয়েছেন।
অনেক মানুষের মৃত্যু ও দুর্ভোগের কারণ হলেও বরফধস আফগানিস্তানের জন্য উপকারী। কেননা দেশটির গ্রামীণ জনগণের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ কৃষিকাজের জন্য বসন্ত ও গ্রীষ্মকালে পাহাড়ি এলাকায় ফসলের ক্ষেত টিকিয়ে রাখতে বরফগলা পানির ওপর নির্ভর করে। আফগানিস্তানের কৃষি মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র লুতফুল্লাহ রশিদ বলেন, আমরা এখন দেশের কৃষি পরিস্থিতির ব্যাপারে আশাবাদী। কয়েক দিন ধরে তুষারপাত ও বৃষ্টি হবে। সুতরাং আগামী বছর দেশে পানির সঙ্কট হবে না।
যুদ্ধবিধ্বস্ত আফগানিস্তানে অর্থনীতির চালিকাশক্তি কৃষি। ২০০৪ সালে জাতিসঙ্ঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার হিসাব অনুযায়ী দেশটির তিন-চতুর্থাংশ লোকের বসবাস গ্রামে। কিন্তু দেশটির সেচব্যবস্থা ব্যাপক নয়। রশিদ বলেন, এই তুষারপাত ও বৃষ্টি না হলে আগামী বছর বিপর্যয় হতে পারত।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button