পরিকল্পিতভাবে বিশ্বব্যাপী অযৌক্তিক ইসলামভীতি ছড়ানো হচ্ছে

Religious Extremism৯/১১ সন্ত্রাসী হামলার ১২ বছর কেটে গেলেও বিশ্বব্যাপী মুসলমানদের কলঙ্কিত ও হেয় করতে ইসলাম ভীতি সৃষ্টির উপায়-উপকরণগুলো এখনো সচল রয়েছে। তাছাড়া পশ্চিমারা তাদের যে কোন বিরোধী পক্ষকে প্রান্তিক অবস্থায় নিয়ে যেতে সন্ত্রাসবাদের লেবেল ব্যবহার করছে। গত বৃহস্পতিবার তুরস্কের রাজধানী ইস্তাম্বুলে অনুষ্ঠিত “ইসলামভীতি” বিষয়ক এক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষস্থানীয় মুসলিম অধ্যাপক জন এল এসপোসিতো এসব কথা বলেন।
জর্জটাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের ধর্ম, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ও ইসলামিক স্টাডিজ বিষয়ের অধ্যাপক জন এল এসপোসিটো তার ভাষণে উল্লেখ করেন যে, আপনারা যা দেখছেন এগুলো যুক্তিহীন ভ্য়। আজকে মূলধারার সমাজে প্রতিদিনকার আলোচনায় ইসলামের ব্যাপারে আশঙ্কা প্রকাশ করা হচ্ছে। তাদের ঐসব আলোচনা ও বক্তব্যই সবখানে গৃহীত হচ্ছে এবং এগুলো তাদের গতানুগতিক উক্তি যার কোন সাক্ষ্য-প্রমাণ বা সারাংশ নেই। এমনকি জনসম্মুখেও তাদের চ্যালেজ্ঞের মুখোমুখো হতে হয় না।
‘ইসমালভীতি : আইন ও গণমাধ্যম’ বিষয়ক একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলন গত বৃহস্পতিবার ইস্তাম্বুলে শুরু হয়েছে।
‘ইসলামভীতি ও গণমাধ্যমের ভূমিকা’ শিরোনামে আয়োজিত পর্বে এসপোসিটো উল্লেখ করেন, নব্বইয়ের দশকে ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্র ইসলামভীতির আধুনিক বিকাশের যে উত্থান তার সূচনা প্রত্যক্ষ করেছে।
তিনি আরো বলেন, ইসলামভীতির এই প্রচারণা মূলত সাতটি মার্কিন প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করতো। এরা গত এক দশকে ইসলাম বিরোধী প্রচারক ও তাদের ওয়েবসাইটগুলোকে পরিচালনার জন্য ৪ কোটি ২৫ লাখ ডলার সরবরাহ করেছে।
তিনি বলেন, আমি যুক্তি দিয়ে প্রমাণ করতে পারি যে, ইসলামভীতির প্রবলতা বর্তমান সময়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের দ্বারাই বেশি বিকশিত হচ্ছে। এই মাধ্যমগুলো গতানুগতিক গণমাধ্যম থেকে অনেক বেশি প্রভাব বিস্তার করে।
অতীতে ও বর্তমানে ইসলামভীতির ব্যাপারে আমরা যা দেখেছি তা একটি বিস্তৃত অংশের খুব সামান্যই।
কোন সাক্ষ্য-প্রমাণ ছাড়াই কেবল যুক্তিহীন ভীতির ওপর ভিত্তি করে মার্কিন যুক্টরাষ্ট্রের ৩১টি রাজ্য শরীয়াহ বিরোধী আইন পাস করেছে। সমস্যা হচ্ছে, শরীয়াহ বিরোধী আইন করার ব্যাপারে তাদেরকে অনুরোধ করেছে? যেখানে ঐসব রাজ্যের জনগণ জানেই না শরীয়াহ কি জিনিস। অথচ তারা শরীয়াহ বিরোধী আইন প্রণয়নের জন্য ভোট দিতে প্রস্তুত। গত ১২ ও ১৩ সেপ্টেম্বর, দুই দিনব্যাপী আয়োজিত আন্তর্জাতিক এই সম্মেলনে তুরস্কের উপমন্ত্রী বুলেন্ট এরিন্ক ও ওআইসি’র মহাসচিব একমেলুদ্দিন এহসানোগলু ছাড়াও বেশ কিছু আন্তর্জাতিক প-িত অংশ নেন। এসপোসিটো ঐসব ব্যক্তির সমালোচনা করেন যারা ইসলামপন্থী একটি সরকারের ব্যাপারে ভীত হয়ে মিসরের সামরিক অভ্যুত্থানের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন না তুলে বিষয়টি এড়িয়ে যান। এটাকে তিনি যুক্তিহীন ইসলামভীতির একটা পরিনাম হিসেবেই দেখেন। বারবার অভিযোগের ক্ষেত্রেও ঐ একই বিষয়টি সত্য যে, এখানেও সামরিক জান্তার সহিংসতার মাত্রার দিকে লক্ষ্য করা হচ্ছে না। সামরিক জান্তার ঐ সহিংসতায় কয়েক হাজার লোক নিহত হয়েছিলো।
তিনি বলেন, সেনাবাহিনী মুরসিকে ক্ষমতাচ্যুত করার পর মিসরের ভিতরে ও বাইরে ইসলামপন্থীদের ব্যাপারেও একই ধরনের অযৌক্তিক ভীতি ছড়ানো হয়েছিলো। ইহুদীবিদ্বেষ ও ফিলিস্তিন-ইসরাইল সংঘাত বিষয়ক আমেরিকান রাষ্ট্রবিজ্ঞানী নরম্যান গেরি কিনকেলস্টেইন এসপোসিটোর বক্তব্যের সাথে একমত পোষণ করেন।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button