১০,০০০ কোটি টাকার হিসেব দিতে পারেনি গ্রামীণ ব্যাংক

গ্রামীণ ব্যাংকের সদস্যদের কল্যাণে গ্রামীণ ফোন থেকে প্রাপ্ত প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকার হদিশ নেই বলে জানিয়েছেন গ্রামীণ ব্যাংক চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হক। সোমবার সচিবালয়ে অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে বেরিয়ে যাওয়ার সময় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
‘টাকাটা কোথায় গেছে’ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘টাকাটা গ্রামীণ ফোন দিয়েছে গ্রামীণ টেলিকমকে। টেলিকম টাকা নিয়ে কী করেছে সেটা আমাদের জানা নেই। এটাতো আর গ্রামীণ ব্যাংকের আওতায় নয়। কমিশনের আসল কাজ হচ্ছে এই টাকাটা কোথায় গেল খুঁজে বের করা।’
এ বিষয়ে অর্থমন্ত্রীর বক্তব্য জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এ মুহূর্তে এর চেয়ে বেশি কিছু বলা সম্ভব নয়। আর ইউনূস সাহেব তো গ্রামীণ ফোনের সঙ্গে গ্রামীণ টেলিকমের কোনো সম্পর্কের কথা স্বীকার করেন না।’
মোজাম্মেল হক বলেন, ‘গ্রামীণ ব্যাংকের সদস্যদের কল্যাণে গ্রামীণ ফোন থেকে যে অর্থ পাওয়ার কথা আজ পর্যন্ত এর একটি পয়সাও গ্রামীণ ব্যাংকে আসেনি। প্রথম ছয় বছর গ্রামীণ ফোনের আয়ের ৩৫ শতাংশ এবং ছয় বছর পর থেকে ৬৫ শতাংশ পাওয়ার কথা। কিন্তু এ অর্থ গ্রামীণ ব্যাংকে আসেনি।’
এদিকে ঈদের আগে ‘গ্রামীণ ব্যাংক কমিশনের’ প্রতিবেদন পাওয়া যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।
‘গ্রামীণ ব্যাংক কমিশন কবে প্রতিবেদন জমা দেবে’ জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘এর জন্য অপেক্ষা করতে হবে।’
‘ঈদের আগে এটা পাওয়া যাবে কি না’ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ঈদের আগে পাওয়া যাবে না।’
‘গ্রামীণ ব্যাংক সরকার দখল করে নিয়ে যাচ্ছে’ ড. ইউনূসের এ ধরনের দাবি প্রসঙ্গে চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হক বলেন, ‘গ্রামীণ ব্যাংক হচ্ছে একটি সরকারি ব্যাংক। এটা যদি বেসরকারি ব্যাংক হয়ে থাকে, তাহলে এর চেয়ারম্যান ও দু’জন পরিচালক সরকার কীভাবে নিয়োগ দেয়? গ্রামীণ ব্যাংক স্থাপন করেছে সংসদ। কোনো সরকারি ব্যাংকে বেসরকারি মালিকানা থাকে না। বেসরকারি পার্টিসিপেশন হতে পারে। আর শেয়ার হোল্ডার যেটা বলা হচ্ছে সেটা কি বিনিয়োগের শেয়ার হোল্ডার? বিনিয়োগের শেয়ার এক বিষয়, আর মালিকানা আরেক বিষয়। সরকারি প্রতিষ্ঠানের মালিক সরকারই। তবে সরকার ইচ্ছে করলে এটাকে বেসরকারি করতে পারে।’
মোজাম্মেল হক বলেন, ‘ইউনূস সাহেব উদ্যোগ নিয়েছিলেন গরীব মানুষের জন্য একটি ব্যাংকের। সরকার এখানে গরীব মানুষের সঙ্গে অংশীদার হয়েছে। ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে সরকার ইউনূস সাহেবকে ব্যাংকটি চালাতে দিয়েছেন, তিনি ৩০ বছর চালিয়েছেন। এখন এটি একটি ইন্সস্টিটিউশনে দাঁড়িয়ে গেছে।’
‘সরকারের অবশিষ্ট মেয়াদে গ্রামীণ ব্যাংক নিয়ে কোনো পরিকল্পনা সরকারের আছে কি না’ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমার মনে হয় না। কারণ গ্রামীণ ব্যাংক এখন ভালো চলছে।’
প্রসঙ্গক্রমে তিনি বলেন, ‘গ্রামীণ ব্যাংকের আইন অনুযায়ী এর আর কোনো সহযোগী প্রতিষ্ঠান থাকার সুযোগ নেই। গ্রামীণ ব্যাংকের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান হিসেবে যেগুলো হয়েছে সেগুলো সব বেসরকারি প্রতিষ্ঠান। ড. ইউনূস সবগুলোর চেয়ারম্যান। কমিশনের একটি প্রধান কাজ হচ্ছে গ্রামীণ ব্যাংকের সঙ্গে এসব প্রতিষ্ঠানের সম্পর্ক নির্ধারণ করা।’

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button