ব্রিটিশ গোয়েন্দা সংস্থায় মধ্যবয়সী নারীদের নিয়োগের পরামর্শ

বণ্ড গার্ল এর সিনেম্যাটিক ধারণা ত্যাগ করে ব্রিটিশ গোয়েন্দা সংস্থাগুলোতে সুন্দরী মেধাবী তরুণীদের বদলে কয়েক সন্তানের জননী মধ্যবয়সী নারীদেরকে এজেন্ট হিসেবে নিয়োগের জন্য টার্গেট করা উচিৎ বলে মন্তব্য করেছে ব্রিটিশ পার্লামেন্টের গোয়েন্দা ও নিরাপত্তা বিষয়ক কমিটি। বৃহস্পতিবার এই মন্তব্য করে ওই কমিটি।
এমআই ফাইভ, এমআই সিক্স এবং জিসিএইচকিউ এর মতো ব্রিটিশ গোয়েন্দা সংস্থাগুলো আগে অক্সফোর্ড ও ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের সুন্দরী মেধাবীদের গোপনে রিক্রুট করত। এখন গোয়েন্দা সংস্থাগুলোকে মামস নেট এর মতো অনলাইন ফোরাম থেকে তাদের নারী এজেন্টদের বেছে নেয়ার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।
কমিটির প্রধান প্রতিবেদক, হ্যাজেল ব্লিয়ারস বলেন, ‘যেসব নারীরা সন্তান জন্ম দিয়েছেন, পরিবারের লালন-পালন করেছেন জীবন ও মানবিক সম্পর্কের ব্যাপারে তাদের ভিন্ন ধরণের অভিজ্ঞতা থাকে। আর আমার মনে হয় আমরা এখনো এই শ্রেনীর মানুষদেরকে একটুও কাজে লাগাইনি।’
তার মতে, এমআই ফাইভ ও সিক্সের মতো গোয়েন্দা সংস্থাগুলোতে দীর্ঘ সময় ধরে মানুষের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপনের মাধ্যমে গোয়েন্দা তৎপরতা চালানোর মতো অসংখ্য কার্যক্রম রয়েছে। আর এসব ক্ষেত্রে বাস্তব জীবনের বিচিত্র অভিজ্ঞতা সম্পন্ন এই মধ্যবয়সী নারীদেরকে কাজে লাগালে বেশি কার্যকর ফল পাওয়া যেতে পারে।
গত ১৫ বছর ধরে ব্রিটিশ গোয়েন্দা সংস্থাগুলোতে নারী কর্মী নিয়োগ দেয়ার ক্ষেত্রে বেশ অগ্রগতি সাধিত হলেও বর্তমানে গোয়েন্দা শ্রমশক্তির মাত্র ৩৭ শতাংশ পদে নারীরা কর্মরত আছেন। এদের বেশিরভাগই আবার জুনিয়র পদে নিযুক্ত রয়েছেন।
তার অভিযোগ, সংস্থাগুলোতে এখনো এমন কিছু সাংস্কৃতিক দৃষ্টিভঙ্গি ও আচরণগত সমস্যা রয়ে গেছে যার ফলে সিনিয়র পদে নারীদের নিয়োগ পাওয়া বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। সংস্থাগুলোর মিডল ম্যানেজমেন্ট পর্যায়ের বেশ কিছু কর্মকর্তা খুব বেশি গতানুগতিক পুরুষালি মানসিকতা ও দৃষ্টিভঙ্গি লালন করে থাকে বলে অভিযোগ করেন ব্লিয়ারস।
বর্তমানে গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর সিনিয়র পর্যায়ের মাত্র ১৯ শতাংশ পদে নারীরা নিযুক্ত রয়েছেন। অথচ দেশটির সিভিল সার্ভিসের সিনিয়র পদের ৩৮ শতাংশ পদ নারীদের দখলে।
তবে এখন পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে। গত বছর এমআই সিক্সের নতুন নিয়োগপ্রাপ্ত জনবলের ৪৪ শতাংশই ছিল নারী। আর এমআই ফাইভের নতুন স্টাফদের ৪১ শতাংশ নারী।
কমিউনিকেশন মনিটরিং এজেন্সি জিসিএইচকিউ’র জনবলের মাত্র ২৯ শতাংশ নারী। কারণ সংস্থাটির উচ্চপ্রযুক্তিঘন কর্মপরিবেশের কারণে নারীরা এতে কাজ করতে খুব বেশি একটা আকৃষ্ট হয় না।
নারী কর্মী নিয়োগের উপর জোর দেয়া ছাড়াও ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার পর থেকে অব্রিটিশ এবং অইউরোপীয় নৃগোষ্ঠীর সদস্যদেরওকেও বেশি করে নিয়োগ দেয়ার কথা বলা হয়।
শুধু ব্রিটিশ গোয়েন্দা সংস্থাগুলোই নয় বরং মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ ও তাদের সিনিয়র পদে নারী কর্মী বাড়ানো এবং জনবলে বৈচিত্র আনার উপর জোর দিচ্ছে। সিআইএর বর্তমান জনবলের ৪৮ শতাংশই নারী।
অন্যদিকে, ফরাসি গোয়েন্দা সংস্থা ডিজিএসই এর জনবলের মাত্র ২৬ শতাংশ নারী। তবে ফরাসি গোয়েন্দা সংস্থাগুলোতে নারীরা অনেক নিরাপদ এবং অনেকটা পারিবারিক পরিবেশে কাজ করার সুযোগ পায়।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button