আদর্শহীনতার কারণেই জাতি গভীর সঙ্কটে পড়েছে : আল্লামা শফী

Shofiঈমানী চেতনাবোধ ও আদর্শহীনতার কারণেই দেশ ও জাতি গভীর সঙ্কটের মুখে পড়েছে বলে মন্তব্য করেছেন আল্লামা শাহ আহমদ শফী। এশিয়ার অন্যতম প্রাচীন ইসলামী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান দারুল উলূম মুঈনুল ইসলাম হাটহাজারী মাদ্রাসার বার্ষিক মাহ্ফিল ও দস্তারবন্দী সম্মেলনে শুক্রবার সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
হাটহাজারী মাদ্রাসার মহাপরিচালক ও হেফাজতে ইসলামের আমীর আল্লামা শফী আরও বলেন, একদিকে মন্ত্রী-এমপি থেকে শুরু করে বিভিন্ন ক্ষেত্রে নাস্তিক্যবাদি ও ইসলামবিদ্বেষীরা নগ্নভাবে ঈমান-আক্বিদার উপর হামলা শুরু করেছে। অন্যদিকে সর্বত্র ন্যায়-নীতি ও মানুষের মৌলিক অধিকার হরণের মহোৎসব চলছে। সত্য-মিথ্যার বাছবিচার হচ্ছে না কোথাও। এভাবে চলতে থাকলে দেশ ও জাতি সহসাই গভীর সঙ্কটের মুখে পড়ে যেতে পারে।
তিনি বলেন, ব্যক্তি থেকে শুরু করে সমাজিক ও রাষ্ট্রীয়ভাবে ধর্মীয় অনুশাসন তথা ইনসাফ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমেই কেবল বর্তমান সঙ্কট থেকে মুক্তি পেতে আল্লাহর সাহায্য আশা করা যায়। তিনি বলেন, ঈমানী দুর্বলতা ও অনৈক্যের সুযোগে দেশী-বিদেশী ইসলামের দুশমনরা নানা অপপ্রচার, ঘৃণা-বিদ্বেষ ছড়িয়ে মুসলমানদের ঈমানী চেতনাকে নষ্ট করার গভীর ষড়যন্ত্র চলাচ্ছে। সাংস্কৃতিক আগ্রাসন, বেহায়াপনা, উলঙ্গপনা ও নারী-পুরুষের অবাধ চলাফেরার বিস্তার ঘটিয়ে তরুণ সমাজকে বিভ্রান্ত করে ধর্মহীন করে তুলতে চাইছে। ষড়যন্ত্রমূলকভাবে ওলামায়ে কেরাম, মাদ্রাসা শিক্ষা ও দাড়ি-টুপিধারীদের বিরুদ্ধে নানা মিথ্যাচার, কাল্পনিক তথ্য ও চক্রান্ত চালিয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা চলছে।
আল্লামা শফী আরো বলেন, ইসলামে অসত্য, অন্যায়, সন্ত্রাস ও ষড়যন্ত্রের কোনো স্থান নেই। ইসলাম ন্যায় ও শান্তির ধর্ম। ইসলামী শিক্ষায়ও কোন প্রকার সন্ত্রাসের স্থান নেই। তিনি বলেন, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রীস্টান ধর্মাবলম্বীরা নিজ নিজ ধর্ম পালন করলে, ধর্মীয় তৎপরতা চালালে এবং তাদের ধর্মীয় অনুষ্ঠানে অংশ নিলে কেউ মৌলবাদী, প্রগতিবিরোধী ও জঙ্গীবাদি হয় না। অথচ নামায আদায় ও দাড়ি-টুপি পড়লে অথবা ইসলাম ধর্মীয় কোন আচার-অনুষ্ঠানে অংশ নিলেই প্রগতিবিরোধী, দেশ বিরোধী ও মৌলবাদীর রং লাগানো হয়।
হাটহাজারী মাদ্রাসার বার্ষিক মাহফিল ও দস্তারবন্দী সম্মেলনে প্রধান অতিথি ছিলেন, ভারতের বিখ্যাত দারুল উলূম দেওবন্দ মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মুফতী আবুল কাসেম নোমানী। বিশেষ অতিথি ছিলেন আল্লামা তাফাজ্জল হক হবিগঞ্জী। আরো বক্তব্য রাখেন, আল্লামা আব্দুল হামিদ পীর সাহেব মধুপুর, আল্লামা মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী, আল্লামা হাফেজ মুহাম্মদ জুনায়েদ বাবুনগরী, মাওলানা মুফতী নূর আহমদ, মুফতী মোজাফফর হোসাইন, ড. আ.ফ.ম. খালেদ হোসেন, মাওলানা সলিম উল্লাহ, মাওলানা আজিজুল হক মাদানী, মাওলানা নোমান মেখলী, মাওলানা মাহমুদুল হাসান, মুফতী জসীম উদ্দীন, মাওলানা মুহাম্মদ ইয়াহ্্ইয়া, মাওলানা আশরাফ আলী নিজামপুরী, মাওলানা আনাস মাদানী প্রমুখ।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button