অপহরণ প্রতিরোধে ডিএমপির এন্টি কিডন্যাপিং স্কোয়াড

রাজধানীতে অপহরণ প্রতিরোধ ও অপহৃতকে দ্রুত উদ্ধারে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) ‘এন্টি কিডন্যাপিং স্কোয়াড’ নামে একটি টিম গঠন করেছে। শনিবার থেকে সেলটি কাজ শুরু করেছে বলে জানিয়েছেন ডিএমপির যুগ্ম-কমিশনার মনিরুল ইসলাম। শনিবার ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে জুরাইন থেকে অপহৃত ব্যবসায়ী আবদুল হাকিমকে উদ্ধারের পর এক বিফ্রিংয়ে তিনি এ কথা জানান।
মনিরুল ইসলাম জানান, ঢাকা মহানগরীতে অপহরণ এবং গুম প্রতিরোধে ‘এন্টি কিডন্যাপিং স্কোয়াড’ ২৪ ঘণ্টা কাজ করবে। অপহরণের যে কোনো তথ্য জানাতে চারটি হটলাইন খোলা থাকবে। যে কেউ এই নম্বরগুলোতে পরিচয় গোপন রেখে অপহরণের যে কোনো তথ্য জানাতে পারবে। তিনি বলেন, কয়েক দিনের মধ্যে নারায়ণগঞ্জে তিনটি অপহরণের ঘটনা ঘটেছে। ঢাকা সিটিতে এ ধরনের ঘটনা যাতে না ঘটে সেজন্য সর্বোচ্চ প্রস্তুতি রয়েছে ডিএমপি’র।
যুগ্ম-কমিশনার আরও জানান, রাজধানীতে অপহরণের চার থেকে পাঁচটি নারীচক্র রয়েছে। এরা ধনী ব্যক্তিদের টার্গেট করে প্রেমের ফাঁদে ফেলে কোনো নির্জন এলাকায় নিয়ে যায়। এরপর তাকে জিম্মি করে পরিবারের সদস্যদের ফোন দিয়ে মুক্তিপণ আদায় করে। এই চক্রটি মিরপুর, সাভার, গাজীপুর এবং পুরান ঢাকায় কাজ করে যাচ্ছে। ইতিমধ্যে তাদের চিহ্নিত করা হয়েছে। অবিলম্বে তাদের গ্রেফতার করা হবে। তিনি আরও জানান, আবদুল হাকিমকে গত পহেলা মে অপহরণ করে এ চক্রটি। এরপর তাকে উদ্ধারে বংশাল থানা পুলিশ এবং মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ কাজ করে। শুক্রবার দিবাগত রাতে তাকে উদ্ধার করা হয়। এ সময় পাঁচ অপহরণকারীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন রানা (২৫), শামসুদ্দিন আহমেদ শাওন (২৪), হৃদয় (২০), নিশি বেগম (২৬) এবং ভাগ্য রানী (৩২)। এদের মধ্যে নিশি বেগম ব্যবসায়ী হাকিমের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন। এরপর তাকে ফুসলে অন্যত্র নিয়ে যায়। পরে তাকে আটকে রেখে পরিবারের কাছে তিন লাখ ১০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। এমনকি হাকিমের ভাই অপহরণকারীদের বিকাশের মাধ্যমে ১০ হাজার টাকা পাঠিয়েছিল।
এন্টি কিডন্যাপিং স্কোয়াডের কার্যাবলী সম্পর্কে মনিরুল ইসলাম জানান, এই টিমে ৪০ জন পুলিশ সদস্য কাজ করবে। অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার সানোয়ার হোসেনকে এই টিমের প্রধান করা হয়েছে। তার সঙ্গে থাকবে দু’জন সহকারী উপ-পুলিশ কমিশনার। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে অপহরণের বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা বহুবার পুলিশ, র্যাবসহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর ভুয়া সদস্যদের গ্রেফতার করেছি। এদের বিরুদ্ধে এখনও অভিযান চলমান রয়েছে। গত দুই বছরে ৪৬২ জন ভুয়া আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলেও জানান তিনি। ‘এন্টি কিডন্যাপিং স্কোয়াডের’ বিষয়ে তিনি আরও জানান, ডিএমপির বাইরে থেকেও এই টিমের কাছে হটলাইনের নম্বরে ফোন করে অপহরণের বিষয়ে তথ্য জানাতে পারবে।
এন্ট্রি কিডনাপিং স্কোয়াডের হট নম্বরগুলো হলো- ০১৭১৩৩৯৮৩২৭, ০১৭১৩৩৯৮৬১৯, ০১৭১৩৩৭৩২১৪ এবং ০১৭১৩৩৭৩২১৬।
এ টিমের প্রধান এডিসি সানোয়ার হোসেন জানান, আমরা এরই মধ্যে কাজ শুরু করেছি। এটা তেমন কোনো চ্যালেঞ্জ না। কারণ আমরা প্রতিনিয়ত চুরি, ছিনতাই, ডাকাতি এবং গুম নিয়ে কাজ করছি। আমরা আমাদের কাজের পরিধি বৃদ্ধি করেছি। সাংবাদিকদের অপর এক প্রশ্নের জবাবে এডিসি জানান, ডিএমপিতে পূর্বে যেসব অপহরণ হয়েছে সংশ্লিষ্ট থানা যদি সে কেসগুলো আমাদের কাছে হস্তান্তর করে তাহলে আমরা তা দেখবো।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button