বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া সারাদেশে শান্তিপূর্ণভাবে ভোটগ্রহণ
ভোটের সহিংসতায় সারাদেশে ১২ জন নিহত
বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া সারাদেশে শান্তিপূর্ণভাবে ভোট হচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নুরুল হুদা। তিনি বলেছেন, চট্টগ্রাম, নোয়াখালীসহ বিভিন্ন স্থানে ছোটখাটো বিচ্ছিন্ন ঘটনার কথা আমি শুনেছি। এ ঘটনাগুলো ঢাকায় বসে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভর নয়। তবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে এ বিষয়ে স্পষ্ট নির্দেশনা দেওয়া আছে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে, সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রে ভোট বন্ধ থাকবে।
আজ রবিবার (৩০ ডিসেম্বর) সকালে রাজধানীর উত্তরা ৫ নম্বর সেক্টরের আইইএস স্কুল অ্যান্ড কলেজ ভোটকেন্দ্রে ভোট দেওয়া শেষে গণমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে তিনি এ কথা বলেন। সকাল ১০টা ৫০ মিনিটে তিনি ওই কেন্দ্রে ভোট দিতে আসেন। কেন্দ্রগুলোতে বিএনপির এজেন্ট নেই কেনো সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের ভিত্তিতে সিইসি বলেন, এজেন্ট যদি কেন্দ্রে না আসে, তো সেক্ষেত্রে আমরা কী করতে পারি।
অনেক কেন্দ্রে কক্ষের পর্দা খুলে ভোট দেওয়াতে বাধ্য করার অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এ ধরনের ঘটনা ঘটার কথা নয়। এ রকম পরিস্থিতি তৈরি হলে ভোট বন্ধের জন্য নির্দেশনা দেওয়া আছে। নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হচ্ছে কি-না এমন প্রশ্নের জবাবে নুরুল হুদা বলেন, এটা ভোট শেষে বলা যাবে।
এদিকে নির্বাচনী সহিংসতায় সারাদেশে ১২ জন নিহতের খবর পাওয়া গেছে। কুমিল্লায় এক বিএনপি কর্মীকে পিটিয়ে ও একজনকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। এছাড়া লক্ষ্মীপুরে দুর্বৃত্তদের গুলিতে একজন, চট্টগ্রামের পটিয়ায় যুবলীগ কর্মী নিহত, বাঁশখালীতে জাতীয় পার্টির কর্মী, রাঙ্গামাটিতে যুবলীগ নেতা, রাজশাহীর মোহনপুরে আ.লীগ নেতা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলায় গুলিতে এক রাজমিস্ত্রি ও টাঙ্গাইলে এক বিএনপি নেতার মরদেহ উদ্ধার ও বগুড়ার কাহালুতে একজন নিহত হয়েছেন। দুপুরের পর ভোট দেয়াকে কেন্দ্র করে নাটোরের নলডাঙ্গা ও নরসিংদীর শিবপুর উপজেলায় দুইজনের মৃত্যু হয়ছে।
বিবিসি বাংলার এক রিপোর্টে বলা হয়েছে, চট্টগ্রামের লালখান বাজারের একটি ভোট কেন্দ্রে সকাল ৭টা ৫০ মিনিটের দিকে বিবিসি সংবাদদাতা অধিকাংশ ব্যালট বাক্স পূর্ণ দেখতে পান। এ বিষয়ে ঐ কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসারকে প্রশ্ন করা হলে তিনি কোনো মন্তব্য করেননি।
ওদিকে, যশোর-৪ আসনে রাতেই ভোট শেষ হয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন এলাকার ভোটাররা। তাদেরকে ভোট কেন্দ্রে প্রবেশ করতে দেয়া হচ্ছে না। শত শত ভোটার কেন্দ্র থেকে ফিরে গেছেন। এ আসনের কোন কেন্দ্রেই বিএনপির এজেন্টদের ঢুকতে দেয়া হয়নি।
প্রথম আলো’র এক রিপোর্টে বলা হয়েছে, লক্ষীপুর-২ আসনের দক্ষিণ গাইয়াচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে গিয়ে দেখা গেছে, বাইরে নারী ও পুরুষের লম্বা লাইন থাকলেও কাউকে ভোট দিতে ভেতরে যেতে দেখা যাচ্ছে না। ভোটর না ঢুকলেও ভেতরে সিল মারা হচ্ছে। আজ রোববার লক্ষীপুরের এই কেন্দ্রে আধা ঘণ্টা পর্যবেক্ষণ করেও ভোটারকে ভেতরে ভোট দিতে যেতে দেখা যায়নি। দেবীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রেও কোন নারী ভোটার নেই। সকাল ৮টা থেকে ৯টা পর্যন্ত কোনো নারীকে ভোট দিতে আসতে দেখা যায়নি। রাস্তা থেকে নারীদের ফিরিয়ে দেয়া হচ্ছে। আয়েশা আক্তার নামের এক নারী ভোট দিতে আসছিলেন। তাকে রাস্তায় আটকে দেয় আওয়ামী লীগের কর্মী-সমর্থকরা। তিনি খুবই ক্ষিপ্ত হন, তিনি গালমন্দ করে উত্তেজিত হয়ে চলে যান।