অবৈধ বাদাম বিক্রেতাদের বিরুদ্ধে কাউন্সিল ও পুলিশের অভিযান

নেটওয়ার্ক রেল এর সহযোগিতায় টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিল গত সপ্তাহে অভিযান চালিয়ে বেআইনীভাবে স্ট্রিট ট্রেডারদের ব্যবহার করা বাদামের গুদাম বন্ধ করে দিয়েছে।
এসব বেআইনী ব্যবসায়িদের বিরুদ্ধে সংঘবদ্ধ অপরাধ চক্র পরিচালনা, স্টাফদের নূন্যতম মজুরী না দেয়া এবং গ্রহণযোগ্য স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা বিধিমালা না মানার অভিযোগ রয়েছে।
ই ১ এর (রয়েল মিন্ট এর পাশে) রেলওয়ে আর্চ এর নিচে অত্যন্ত নিম্নমানের নির্মান করা ঘরের ভিতর বাদাম ভাজার প্রক্রিয়া সনাক্ত করেন টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের এনফোর্সমেন্ট অফিসাররা। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার প্রক্রিয়া শুরু করার পর অফিসাররা দেখতে পান যে, বাদাম ভাজার জন্য বৈদ্যুতিক চুল্লির সংযোগ নেয়া হয়েছে পার্শ্ববর্তী গাড়ি মেরামতের কারখানা থেকে। অনুমোদিত ব্যবসায়ি এবং স্থানীয় বাসিন্দারা দূষণ ও আবর্জনার ব্যাপারে অভিযোগ করেন।
এছাড়া যে বাদাম এখানে ভাজা হচ্ছিল, তা প্রকৃত পক্ষে পাখির খাবারের জন্য বলে ধারা করা হচ্ছে। রাজধানীর বাদাম বিক্রেতাদের উপর কাউন্সিল এবং পুলিশ বিশেষভাবে নজরদারী করছে, কারণ তারা মানব পাচার বা শ্রম শোষণের শিকার হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে বলে তাদের ধারনা।
সিটি পুলিশের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে, বাদাম বিক্রেতাদের সকালে কোর্টে নিয়ে গেলে, তারা জরিমানা অর্থ পরিশোধ করে বিকালে আবারও বাদাম ফেরি করে বিক্রির ব্যবসা শুরু করে। তাই এক দুই জন বাদাম বিক্রিতার বিরুদ্ধে আইনী পদক্ষেপ নেয়ার সাফল্য খুবই সামান্য। এছাড়া বাদামকে গরম রাখতে যে গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবহার করা হয়, তা-ও যথাযথভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করা হয়না, ফলে এটিতে আগুন ধরে জনসাধারণের জন্য ঝুঁকির কারণ হওয়ার আশংকা থাকে।
বেআইনীভাবে বাদাম বিক্রির ব্যবসার সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনী পদক্ষেপ নেয়ার ব্যাপারে দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করে নির্বাহী মেয়র জন বিগস বলেন, বেআইনী ব্যবসায়িদের হাত থেকে বারার বাসিন্দা ও লন্ডনে বেড়াতে আসা লোকজনকে সুরক্ষা দিতে আমরা বদ্ধপরিকর। অর্থের লোভে যারা অন্যের জীবনকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলে ঠেলে দিতে দ্বিধা না করে, তাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে আমরা দ্বিধা করবো না।
মেয়র আরো বলেন, এ ধরনের অবৈধ ব্যবসার প্রবণতা দিন দিন বাড়ছে। এটাকে দমন করতে আমাদের পক্ষে যা যা করার দরকার, আমরা তা করছি। এই ইস্যূ মোকাবেলায় আমাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে।
কেবিনেট মেম্বার ফর কমিউনিটি সেফটি, কাউন্সিলর আসমা বেগম বলেন, বৈধ খাবার ব্যবসায়িরা, যারা লন্ডনে নানা মুখরোচক খাবার দাবারের প্রসার সাজিয়ে বাসিন্দা ও ভিজিটরদের স্বাগত জানান, আমরা তাদের সর্বাত্মক সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছি। তথাপি কিছু কিছু অবৈধ ট্রেডার বা ব্যবসায়ি তাদের কার্যকলাপের মাধ্যমে খাবারকে বিষাক্ত করে জনসাধারণের জীবনকে ঝুঁকির মুখে ঠেলে দিচ্ছে। এদেরকে শক্ত হাতে দমনে আমরা কঠোর পরিশ্রম করে যাচ্ছি।
এ ধরনের অবৈধ ব্যবসায়িদের দমন করতে টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিল ও পুলিশ, সাউদার্ক এবং সিটি অব লন্ডন এখন সেরা আইনী পদক্ষেপ গ্রহনের বিষয়টি সক্রিয়ভাবে বিবেচনা করছে।
অভিযানকালে বাদামের কন্টেইনার, বাদাম বিক্রির ট্রলি, নিয়ন লাইটের বক্স, যা রাস্তায় বাদাম বিক্রির সময় ব্যবহার করা হয়, ইত্যাদি সামগ্রী জব্দ করতে টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের এনফোর্সমেন্ট অফিসারদের সহযোগিতা করে বেইলিফ। এই অভিযান অব্যাহত থাকবে। যেখানে অবৈধভাবে বাদাম ভাজা হবে, সেই স্থাপনাকে গুড়িয়ে দেয়া হবে।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button