মহাজোটে থেকেই নির্বাচন করবে জাতীয় পার্টি

PMআবারো মহাজোটে থেকেই আগামী নির্বাচনে অংশ নেয়ার ঘোষণা দিলেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও সাবেক সৈরশাসক হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। রবিবার রাতে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারি বাসভবন গণভবনে আওয়ামী লীগ শীর্ষ নেতাদের সাথে বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে বৈঠকের সূত্র জানিয়েছে।
এর আগে শুক্রবার রাজধানীতে এক অনুষ্ঠানে জাপা চেয়ারম্যান এরশাদ বলেছেন, ২৫ তারিখের পর তিনি মহাজোট ছাড়ার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেবেন। এর একদিন পরই জাপা চেয়ারম্যানকে মহাজোট নেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার বাসভবনে চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি, মাহজোটে থাকা না থাকা নিয়ে আলোচনা ও নৈশভোজের আমন্ত্রণ জানান। প্রধানমন্ত্রীর ডাকে সাড়া দিয়ে রবিবার সন্ধ্যায় ১৪ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল নিয়ে গণভবনে যান এরশাদ।
রবিবার সন্ধ্যা ৭টা ৪০ মিনিটে বৈঠক শুরু হয়। চলে রাত ৮টা ৫৮ মিনিট পর্যন্ত।
বৈঠকে থাকা আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর একজন সদস্য জানিয়েছেন, আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ধারাবাহিকভাবে শরিক এবং অন্যান্য দলগুলোর সঙ্গে মতবিনিময় করবে। এরই অংশ হিসাবে জাতীয় পার্টির সঙ্গে তিনি বৈঠক করলেন।
বৈঠক প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এরশাদের সঙ্গে আলোচনা ফলপ্রসু হয়েছে। তিনি আশ্বস্ত করেছেন- তার দল মহাজোটেই থাকবে।
এর আগে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে গণভবনে পৌঁছালে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, জাহাঙ্গীর কবির নানক, হাছান মাহমুদ ও ফারুক খান তাকে অভ্যর্থনা জানান।
এ সময় এরশাদের সঙ্গে দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী জাফর আহমেদ, জিয়াউদ্দিন বাবলু, জি এম কাদের, কাজী ফিরোজ রশীদসহ ১৪ জন নেতা উপস্থিত ছিলেন।
জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে শুক্রবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্বাচনকালীন সর্বদলীয় সরকার গঠনের প্রস্তাব রেখে তাতে অংশ নিতে আন্দোলনরত বিএনপির প্রতি আহ্বান জানান।
পরদিন প্রতিক্রিয়ায় জাতীয় পার্টি জানায়, সর্বদলীয় সরকার গঠনের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর প্রস্তাব ‘স্পষ্ট’ নয়।
বর্তমানে মহাজোটে থাকলেও এরশাদ বেশ কিছুদিন ধরে জোট ছাড়ার কথা বলে আসছেন। ওই ঘোষণা ‘যথাসময়ে’ দেয়া হবে বলেও জানিয়ে আসছেন তিনি।
নির্বাচন নিয়ে দুই প্রধান দলের পাল্টাপাল্টি অবস্থান নিয়েও সমালোচনামুখর সাবেক এই রাষ্ট্রপতি। তার আশঙ্কা, এতে দেশ গৃহযুদ্ধের দিকে যাচ্ছে।
এরশাদের এসব বিষয় নিয়ে শেখ হাসিনা তার সাথে খোলামেলা আলোচনা করেন। আলোচনায় হাসিনা এরশাদকে আশ্বস্ত করেন, আগামী নির্বাচন নিয়ে এরশাদের এসব আশঙ্কা অমূলক। সাংবিধানিকভাবেই আগামী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সরকারের প্রস্তাবে বিরোধী দল ইতিবাচক সাড়া দিলে কোনো সংকটের সম্ভাবনা নেই। পরে এরশাদও শেখ হাসিনাকে আশ্বস্ত করেন মহাজোটে থেকেই তার দল দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, সভাপতি মন্ডলীর সদস্য সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী, আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত, মোহাম্মদ নাসিম, কাজী জাফরউল্লাহ, মতিয়া চৌধুরী, ওবায়দুল কাদের, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা এইচটি ইমাম, আলাউদ্দিন আহমেদ, দলের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক, বাণিজ্য সম্পাদক ফারুক খান, প্রচার সম্পাদক হাছান মাহমুদ, উপ-দফতর সম্পাদক মৃণাল কান্তি দাস, প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী আবদুস সোবহান গোলাপ এবং প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা বিষয়ক উপদেষ্টা তারেক আহমেদ সিদ্দিক উপস্থিত ছিলেন।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button