লন্ডন প্রেসক্লাবের নামে ম্যাগাজিন প্রকাশ নিয়ে ক্ষোভ-বিস্ময়
বিশেষ প্রতিনিধি: লন্ডন বাংলা প্রেসক্লাব ও বিলেতের বাংলা সংবাদপত্রের ইতিহাসে নজিরবিহীন এক ঘটনার জন্ম দিয়েছেন প্রবীণ সাংবাদিক ইসহাক কাজল। তিনি প্রেস ক্লাবের সাধারণ সভার সিদ্ধান্তকে অগ্রাহ্য করে ক্লাবের নামে সময়ের আয়না নামক একটি ম্যাগাজিন প্রকাশ করেছেন। এ নিয়ে প্রেস ক্লাবের সদস্য, বিভিন্ন সংবাদপত্রের সম্পাদক ও সিনিয়র সাংবাদিকদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। বিস্ময়ের বিষয় হচ্চেছ- এই ম্যাগাজিন প্রকাশিত হয়েছে বলে জানেন না ক্লাবের বর্তমান সভাপতি নবাব উদ্দিন, সেক্রেটারি মোহাম্মদ এমদাদুল হক চৌধুরী ও সাবেক সভাপতি মোহাম্মদ বেলাল আহমদ। ম্যাগাজিনের ৮ সদস্য বিশিষ্ট সম্পাদনা পরিষদের ৬জনই এ ব্যাপারে কোনো কিছু ওয়াকেফহাল নন। উপরন্তু সম্পাদনা পরিষদের একজন সদস্যের নাম বাদ দিয়ে এতে অপর একজন সাংবাদিকের নাম অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে।
অনুসন্ধানে জানা যায়, লন্ডন বাংলা প্রেসক্লাবের দ্বিতীয় মেয়াদের কমিটি (২০০৮- ২০০৯) সময়ের আয়না নামে একটি গবেষণাধর্মী ম্যাগাজিন প্রকাশের উদ্যোগ গ্রহণ করে। একটি সমৃদ্ধ ম্যাগাজিন প্রকাশের লক্ষ্যে প্রেসক্লাবের ঐ নির্বাহী কমিটির সভায় ৭ সদস্য বিশিষ্ট একটি প্রকাশনা পরিষদও গঠন করা হয়। উক্ত পরিষদের সদস্য ছিলেন প্রেসক্লাবের ততকালীন তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক ইসহাক কাজল, নির্বাহী সদস্য মতিউর রহমান চৌধুরী, নির্বাহী সদস্য মোহাম্মদ সোবহান, নির্বাহী সদস্য নিলুফা ইয়াসমিন হাসান, নির্বাহী সদস্য সৈয়দ আব্দুল কাদির, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ আনাস পাশা ও সাংবাদিক মাহবুব রহমান। কিন্তু ঐ মেয়াদে ম্যাগাজিন প্রকাশিত হয়নি। পরবর্তীতে প্রেসক্লাবের তৃতীয় মেয়াদের (২০১০-২০১২) নির্বাচনে প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক পদে নির্বাচিত হন সাপ্তাহিক নতুন দিনের নির্বাহী সম্পাদক তাইছির মাহমুদ। এ সময় তাইছির মাহমুদকে পদাধিকার বলে প্রকাশনা পরিষদে অন্তর্ভূক্ত করা হয়। ফলে প্রকাশনা পরিষদের মোট সদস্য সংখ্যা দাঁড়ায় ৮ জন। শুরু হয় ম্যাগাজিন প্রকাশের কার্যক্রম। সম্পাদনা পরিষদ একাধিক বৈঠকে মিলিত হয়ে লেখা সংগ্রহ ও যাচাই-বাছাইয়ের কাজ করতে থাকে। তবে শেষ পর্যন্ত ততকালীন নির্বাহী কমিটির মেয়াদে ম্যাগাজিনটি প্রকাশ করা সম্ভব হয়নি। পরবর্তী মেয়াদের (২০১২-২০১৪) নির্বাচন আসন্ন হওয়ায় উক্ত কমিটির সর্বশেষ সভায় প্রস্তাবিত ম্যাগাজিনের জন্য ক্লাব থেকে ২ হাজার পাউন্ড বরাদ্দ দিয়ে ৩০ জুন ২০১২ তারিখের মধ্যেই উক্ত সম্পাদনা পরিষদের তত্ত্বাবধানেই ম্যাগাজিন প্রকাশের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। কিন্তু এই সিদ্ধান্তও বাস্তবায়ন সম্ভব হয়নি। এদিকে ওই বছরের ৩০ জুন অনুষ্ঠিত প্রেস ক্লাবের চতুর্থ মেয়াদের (২০১২-২০১৪) নির্বাচনে নবাব-এমাদ-জুবায়ের প্যানেল বিজয়ী হয়। উক্ত কমিটিতে প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক পদে নির্বাচিত হন ইসহাক কাজল। এরপর ৮ সদস্যের সম্পাদনা পরিষদকে নিয়ে ম্যাগাজিন প্রকাশনার কাজ পরিচালনার কথা থাকলেও সম্পাদনা পরিষদের অধিকাংশ সদস্যের সাথে তিনি ম্যাগাজিনের ব্যাপারে আর কোনো যোগাযোগ করেননি। চলতি বছরের ৩০ জুন অনুষ্ঠিত প্রেসক্লাবের সাধারণ সভাকে সামনে রেখে ইসহাক কাজল সম্পূর্ণ এককভাবে ম্যাগাজিনটি প্রকাশের জোর ততপরতা চালান। বিষয়টি জানতে পেরে বর্তমান ও প্রাক্তণ কমিটির নেতৃবৃন্দ সম্পাদনা পরিষদের সদস্যদের অজ্ঞাতে একক তত্ত্বাবধানে ম্যাগাজিন প্রকাশ না করতে ইসহাক কাজলকে বারবার অনুরোধ করেন। ফলে ম্যাগাজিন প্রকাশের কাজ তিনি স্থগিত রাখেন।
প্রেস ক্লাবের সাধারণ সভায় (৩০ জুন ২০১৩) ম্যাগাজিন নিয়ে বিশিষ্ট সাংবাদিক নজরুল ইসলাম বাসন ও গোলাম মোস্তফা ফারুক প্রশ্ন তোলেন। নজরুল ইসলাম বাসন বলেন, যেহেতু এটি প্রেসক্লাবের ম্যাগাজিন তাই লেখা প্রকাশের ক্ষেত্রে যেনো সকল মত ও পথের সাংবাদিকদের লেখা স্থান পায়। তাছাড়া যেহেতু এটি একটি ইতিহাস গ্রন্থ হিসেবে প্রকাশিত হবে সেহেতু ম্যাগাজিনের সম্পাদনা পরিষদ এবং বর্তমান ও প্রাক্তন কমিটির তত্ত্বাবধানে যেনো সুচারুভাবে গ্রন্থটি প্রকাশিত হয়। যাতে পরবর্তীতে এ নিয়ে কোনো বিতর্ক সৃষ্টি না হয়। নজরুল ইসলাম বাসনের প্রশ্নের জবাবে প্রেসক্লাব সেক্রেটারি এমদাদুল হক চৌধুরী উপস্থিত সকল সদস্যকে আশ্বস্ত করে বলেন, ম্যাগাজিনটি কোনো ব্যক্তির একক সম্পাদনায় প্রকাশ হবেনা। পরবর্তীতে যাতে এ নিয়ে কোনো বিতর্ক সৃষ্টি না হয় তাই প্রকাশনা পরিষদ ও বর্তমান কমিটির নেতৃবৃন্দ লেখাগুলো ভালোভাবে যাচাই-বাছাই করে দেখার পর সর্বোচ্চ স্বচ্চছতার সাথে প্রকাশিত হবে। তার এই বক্তব্য সাধারণ সভায় সিদ্ধান্ত হিসেবে গৃহিত হয়।
কিন্তু বিস্ময়ের ব্যাপার হলেও সত্য যে, প্রেসক্লাবের সভায় সিদ্ধান্ত গ্রহণের মাত্র এক মাসের মাথায় হঠাত ইসহাক কাজলকে বিভিন্ন সংবাদপত্র অফিসে সময়ের আয়না নামক একটি ম্যাগাজিন বিলি করতে দেখা যায়। এতে যুগপথ বিস্মিত এবং ক্ষুব্ধ হন প্রেস ক্লাব নেতৃবৃন্দ। বিস্মিত হন সম্পাদনা পরিষদের অধিকাংশ সদস্য। কারণ ম্যাগাজিনে সদস্য হিসেবে তাদের নাম ছাপা হলেও তারা জানেন না এই ম্যাগাজিনের ভেতরে কী আছে। অত্যন্ত আশ্চর্যের বিষয় হচ্চেছ, ৮ সদস্যের সম্পাদনা পরিষদের অন্যতম সদস্য ছিলেন বাংলা নিউজ২৪ডটকম এর লন্ডন প্রতিনিধি সাংবাদিক আনাস পাশা। অথচ প্রকাশিত ম্যাগাজিনে তার কোনো নাম নেই। সম্পাদনা পরিষদে জুড়ে দেয়া হয়েছে সাপ্তাহিক জনমতের প্রধান সম্পাদক সৈয়দ নাহাস পাশার নাম, যিনি এর সদস্য নন। এ ব্যাপারে সৈয়দ আনাস পাশার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি ম্যাগাজিনটি দেখিনি। এ ব্যাপারে আমি কিছুই জানি না।
সম্পাদনা পরিষদের অন্যান্য সদস্যরা যা বললেন?
এ ব্যাপারে সম্পাদনা পরিষদের সদস্য মুসলিম উইকলীর ব্যবস্থাপনা সম্পাদক মোহাম্মদ সোবহান ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, তিনি ম্যাগাজিনের ব্যাপারে কোনো কিছুই জানেন না। তিনি বলেন, একদিন অফিসে এসে কয়েকটি ম্যাগাজিন আমার দৃষ্টিগোচর হয়। হাতে নিয়ে দেখলাম প্রেসক্লাবের নামে ম্যাগাজিন। আমার নামও সম্পাদনা পরিষদে আছে। কিন্তু আমি ম্যাগাজিন সম্পর্কে এর আগে কিছুই জানতাম না। জানতে পারলাম- ইসহাক কাজল ম্যাগাজিনগুলো অফিসে দিয়ে গেছেন। এদিকে সম্পাদনা পরিষদের আরেক সদস্য মতিউর রহমান চৌধুরী বলেন-ম্যাগাজিনটি কিভাবে ছাপা হলো, এতে কী ছাপা হয়েছে-এ সবের কিছুই আমি জানিনা। ছাপা হয়েছে বলে তিনি শুনেছেন, কিন্তু এখনো কোনো কপি পাননি। অপর সদস্য সৈয়দ আব্দুল কাদিরও একই কথা বললেন। তিনি বলেন, প্রেসক্লাবের সাধারণ সভার কিছুদিন আগে ইসহাক কাজল তাকে ফোন করে জানান, ম্যাগাজিনটি প্রকাশ হচ্চেছ। তখন তিনি ম্যাগাজিনটি ছাপাখানায় যাওয়ার আগে তাঁকে দেখাতে অনুরোধ করেন। এরপর আর কিছুই তিনি জানেন না। সম্পাদনা পরিষদের অপর সদস্য সাংবাদিক মাহবুব রহমানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, প্রিন্টে যাওয়ার আগে ম্যাগাজিনের দুটি প্রবন্ধ আমার পড়ার সুযোগ হয়েছে। আমি ম্যাগাজিনটি এখনো দেখিনি। ইসহাক কাজল আমাকে বারবার বলেছেন, কিন্তু আমি সময় দিতে পারিনি। সম্পাদনা পরিষদের সদস্যদেরকে নিয়ে বসে ম্যাগাজিনের পান্ডুলিপি যাচাই-বাছাই করে ছাপাখানায় পাঠানো হলোনা কেন-জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি জানিনা প্রকাশনা পরিষদে কারা আছেন। তবে সেটা তো এভাবেই হওয়া উচিত ছিলো।
প্রকাশনা পরিষদের একমাত্র মহিলা সদস্য সাপ্তাহিক পত্রিকার সাবেক বার্তা সম্পাদক নিলুফা ইয়াসমিন হাসান বলেন, ইসহাক ভাই আজ (১৮ আগষ্ট) একটি কপি আমাকে দিলেন। তবে এতে কী (কনটেন্ট) ছাপা হচ্চেছ আগে জানতামনা। শুধু জানতাম কারা লিখছেন।
এদিকে, সম্পাদনা পরিষদের অপর সদস্য প্রেসক্লাবের সাবেক প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক তাইছির মাহমুদ এ ব্যাপারে বিস্ময় এবং ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, প্রকাশনা পরিষদে আমার নাম ছাপা হয়েছে দেখে অনেকেই ম্যাগাজিন সম্পর্কে আমাকে বিভিন্ন প্রশ্ন করেছেন। কিন্তু আমি কোনো সদুত্তর দিতে পারিনি। তিনি জানান, গত এক বছর যাবত ইসহাক কাজল তাঁর সাথে এ ব্যাপারে কোনো যোগাযোগই করেননি। তিনি আরও জানান, মাস দেড়েক আগে ম্যাগাজিন প্রকাশের বিষয়টি জানতে পেরে তিনি নিজ থেকেই ইসহাক কাজলের সাথে যোগাযোগ করেন। জানতে চান ম্যাগাজিনটি কবে বের হবে? ছাপা হওয়ার আগে তিনি কি দেখার সুযোগ পাবেন? উত্তরে ইসহাক কাজল বলেন- দেখানো যাবেনা, প্রিন্টে চলে গেছে। এ জবাব পেয়ে তিনি প্রেস ক্লাবের সভাপতি নবাব উদ্দিনকেও বিষয়টি অবহিত করেন এবং ইসহাক কাজলের সাথে কথা বলে ম্যাগাজিন প্রকাশের আগে তাঁকে তা দেখার সুযোগ দেয়ার অনুরোধ জানান। প্রেসক্লাব সভাপতি তখন তাকে জানান, তিনি ইসহাক কাজলকে সকলের সম্মতি নিয়ে ম্যাগাজিনটি প্রকাশ করতে বলেছেন।
প্রেসক্লাব সভাপতি নবাব উদ্দিনের বক্তব্য
লন্ডন বাংলা প্রেস ক্লাবের সভাপতি ও সাপ্তাহিক জনমত সম্পাদক নবাব উদ্দিনের সাথে ২০ আগষ্ট সন্ধ্যায় যোগাযোগ করে ম্যাগাজিন প্রকাশের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, না আমি এ ব্যাপারে কিছু জানিনা।
প্রেসক্লাব সেক্রেটারির বক্তব্য
এ ব্যাপারে প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক এমদাদুল হক চৌধুরীর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনিও এ নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করেন। বলেন, এটি এখন প্রকাশ করার কথা নয়। কারণ, গত জুনে অনুষ্ঠিত প্রেসক্লাবের সাধারণ সভায় এ নিয়ে উত্থাপিত একাধিক সদস্যের প্রশ্নের উত্তরে আমরা তাদের আশ্বস্ত করেছিলাম এই বলে যে, ইতোমধ্যে যেহেতু অনেক দেরি হয়ে গেছে, তাই আরও কিছু সময় নিয়ে হলেও একটি সমৃদ্ধ ম্যাগাজিন প্রকাশ করাই সঙ্গত হবে। পাশাপাশি এতে ম্যাগাজিনের সম্পাদনা পরিষদের সকলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করে স্বচ্চছ প্রক্রিয়ার মধ্যদিয়েই তা প্রকাশ হওয়া উচিত। সাধারণ সভার সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে ম্যাগাজিন প্রকাশের বিষয়টি কিভাবে দেখছেন- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটি আদৌ প্রেসক্লাবের ম্যাগাজিন কি-না সে সম্পর্কে আমি নিশ্চিত নই। তবে ম্যাগাজিনটি বিতরণের কথা জানতে পেরে তা বন্ধ রাখতে ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে ইতোমধ্যে আমি জনাব ইসহাক কাজলকে অফিশিয়ালী অনুরোধ জানিয়েছি। নির্বাহী কমিটির আগামী সভায় ক্লাবের এ বিষয়ে আলোচনা করা হবে বলে জানান তিনি।
সাবেক সভাপতি মোহাম্মদ বেলাল আহমদের বক্তব্য
প্রেস ক্লাবের প্রাক্তন সভাপতি মোহাম্মদ বেলাল আহমদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ম্যাগাজিনটি ২০১২ সালের ৩০ জুনের মধ্যে প্রকাশের লক্ষ্যে ততকালীন নির্বাহী কমিটি অর্থ বরাদ্দ করে ৮ সদস্য বিশিষ্ট সম্পাদনা পরিষদকে দায়িত্ব দিয়ে দেয়। কিন্তু ঐ তারিখের মধ্যে ম্যাগাজিন প্রকাশ করা সম্ভব হয়নি। মাস দেড়েক আগে জানতে পারি, সাধারণ সভাকে সামনে রেখে ম্যাগাজিন প্রকাশ হচ্চেছ। তখন ইসহাক কাজলের সাথে যোগাযোগ করি। তাকে অনুরোধ জানাই, যেহেতু ম্যাগাজিনটি প্রকাশে ইতোমধ্যে অনেক দেরি হয়ে গেছে তাই আরো কিছু সময় নিয়ে হলেও বর্তমান কমিটির বিভিন্ন কার্যক্রম, বিশেষ করে নতুন জীবন সদস্যদেরকে অন্তর্ভুক্ত করে এবং সম্পাদনা পরিষদের সকল সদস্যের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করে যেনো তা প্রকাশ করা হয়। জবাবে তিনি এ পরামর্শ গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করবেন বলে প্রতিশ্রুতি দেন। এরপর এ ব্যাপারে আমার সাথে তাঁর আর কোনো যোগাযোগ হয়নি। তিনি আরো বলেন, একই সাথে প্রকাশিতব্য ম্যাগাজিনে ক্লাবের সাম্প্রতিক কার্যক্রম অন্তর্ভূক্ত করার বিষয়টি প্রেসক্লাবের বর্তমান সভাপতির নজরে এনে এ ব্যাপারে তাঁকেও সক্রিয় হওয়ার অনুরোধ জানাই। কিন্তু এখন দেখছি সবই নিস্ফল গেছে।
প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মহিব চৌধুরীর বক্তব্য
এদিকে প্রেস ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও সাপ্তাহিক নতুন দিন সম্পাদক মহিব চৌধুরী বলেন, লন্ডন বাংলা প্রেসক্লাব বিলেতের সাংবাদিকদের ঐক্য ও সমঝোতার ফসল। অনেক চড়াই-উতরাই পেরিয়ে এই ক্লাব অনেকদূর এগিয়ে গেছে। আমাদের ঐক্য ও একতাকে বিপন্ন করার অনেক চেষ্টাই অতিক্রম করে আমরা বর্তমানে একটি পর্যায়ে এসে পৌছেছি। সম্প্রতি আমরা আবারও সমস্যায় পড়েছি- লন্ডন বাংলা প্রেস ক্লাবের ম্যাগাজিন নিয়ে। ক্লাবের সাবেক প্রেসিডেন্ট হিসেবে অনেকেই আমার কাছে এ সমস্যার কথা তুলে ধরেছেন। যেকোনো প্রকাশনাই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এতে প্রায় সময়ই ভূল বোঝাবুঝির সৃষ্টি হয়ে থাকে। অভিযোগ রয়েছে, আমাদের ইসহাক কাজল ভাই সম্পাদনা পরিষদকে না জানিয়ে ম্যাগাজিন প্রকাশ করেছেন। আমরা এটি তাঁর কাছ থেকে মোটেও আশা করিনি। এমনকি আমি নিজেও তাঁকে ম্যাগাজিন প্রকাশের আগে একবার ডামি কপি দেখানোর একান্ত অনুরোধ করি। অবশ্য কাজল ভাইয়ের অনেক যুক্তি থাকতে পারে। তবে এমন একটি শুভ উদ্যোগে বিভক্তি সৃষ্টি করে কেন আমরা নিজেদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করছি। এ ব্যাপারে আমি প্রেসক্লাবের বর্তমান নির্বাহী কমিটিসহ সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি, যাতে করে আমরা একটি সঠিক সিদ্ধান্তে পৌঁছতে পারি। বিগত দিনের মতো যাতে আমরা এক সাথে মিলে-মিশে পথ চলতে পারি সে ব্যবস্থা গ্রহনের অনুরোধ জানাচ্চিছ।
ইসহাক কাজল যা বললেন
ইসহাক কাজলের কাছে প্রশ্ন ছিলো-প্রেস ক্লাবের সাধারণ সভায় সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়েছিলো যে, ম্যাগাজিনটি আরও সময় নিয়ে স্বচ্চতার সাথে সকলের লেখা নিয়ে প্রকাশিত হবে। তাহলে ক্লাবের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে তড়িঘড়ি করে এটি প্রকাশ করার কারণ কী-জবাবে তিনি বলেন, প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক এমদাদুল হক চৌধুরী সাধারণ সভায় স্বপ্রণোদিত হয়ে ম্যাগাজিন প্রকাশ না করার কথা বলেছেন। এ ব্যাপারে কোনো কথা বলার দায়িত্ব তাঁর নেই।