ঢবকায় বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিকের লাশ উদ্ধার

Mesbahরাজধানীর বনানীর একটি ফ্ল্যাটে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক মেজবাহউদ্দিন আহমেদ (৭২) নামে এক বৃদ্ধের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তিনি প্রধানমন্ত্রীর দূর সম্পর্কের আত্মীয় বলে পুলিশ জানিয়েছে। মেজবাহ উদ্দিন সম্পর্কে শেখ হাসিনার খালাতো ভাই শেখ শহীদুল ইসলামের চাচা শ্বশুর বলে জানা গেছে। তার শ্রীলঙ্কান স্ত্রী ও দুই কন্যাসন্তান যুক্তরাজ্যে বসবাস করেন। শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে বনানীর ২৫/এ নম্বর রোডের ৯১ নম্বর বাড়ির ৫ম তলার বি-৫ ফ্ল্যাটের দরজা ভেঙ্গে লাশ উদ্ধার করা হয়।
বনানী থানার ওসি ভূঁইয়া মাহবুব জানান, গত ৩ নভেম্বর মেজবাহউদ্দিন বাংলাদেশে আসেন। তিনি বনানীর ঐ ফ্ল্যাটের মালিক। তিনি ১৯৭২ সালে ব্রিটিশ নাগরিকত্ব গ্রহণ করেন। তার স্ত্রী শ্রীলঙ্কার নাগরিক। ঢাকায় আসলে মেজবাহউদ্দিন ঐ ফ্ল্যাটে উঠতেন। বৃহস্পতিবার রাত ১০ টার পর থেকে তার নিকট আত্মীয়রা মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করে তাকে পাননি। পরে সকাল ৯ টার দিকে তার ভাই ও বোন এবং ভাতিজা-ভাতিজী ফ্ল্যাটে আসেন। তারা মেজবাহউদ্দিনের মোবাইল ফোনে রিং করলে সেটি বাজতে থাকে। কেউ ফোনটি রিসিভ না করলে তাদের সন্দেহ হয়। একজন কাঠমিস্ত্রী ডেকে দরজা ভেঙ্গে বেডরুমের বাথরুমের লাগোয়া দরজার সামনে মেঝেতে মেজবাহ উদ্দিনের লাশ চিত্ হয়ে পড়ে থাকতে দেখেন।
বনানী থানার ওসি জানান, পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) আলামত সংগ্রহ করেছে। ফ্লাটে দুটি শোবার ঘর। একটি শোবার ঘরের লাগোয়া বাথরুমের দরজার কাছেই মেঝেতে রক্তাক্ত অবস্থায় মেজবাহ উদ্দিনের লাশ পড়েছিলে। ঐ ঘরের বিছানা, বাথরুম থেকে ডাইনিং রুম হয়ে ড্রইংরুমের লাগোয়া বারান্দা পর্যন্ত মেঝেতে রক্তের ছোপ ছোপ দাগ ছিল। বাথরুমের বেসিন ও কমোডেও রক্তের দাগ ছিল। তবে মৃতের শরীরে কোন আঘাতের চিহ্ন নেই। ফ্ল্যাটে তেমন কোন দামি আসবাবপত্র নেই। বাসার মালামাল খোয়া যাওয়ার কোন নমুনা পুলিশ পায়নি। তার পাসপোর্ট, প্রয়োজনীয় কিছু কাগজপত্র এবং বেশকিছু ডলার ঘরেই ছিল। বিষয়টি হত্যাকান্ড, না অসুস্থতা থেকে মৃত্যু সে বিষয়ে পুলিশ নিশ্চিত না হলেও বাসার নিরাপত্তারক্ষী ও কেয়ারটেকারসহ তিনজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নেয়া হয়েছে। মৃত্যুর কারণ ময়নাতদন্তের রিপোর্টে জানা যাবে।
মেজবাহউদ্দিনের ভাতিজা শাহেদ জামিল জানান, তার চাচা ১৯৫৮ সাল থেকে লন্ডনে আছেন। স্ত্রী শ্রীলঙ্কার নাগরিক। তাদের দুই মেয়ে যুক্তরাজ্যেই থাকেন। তিনি ছয়তলা ভবনের পাঁচতলায় ঐ ফ্ল্যাটের মালিক। যুক্তরাজ্যে তিনি একটি ব্যাংকে চাকরি করতেন। অবসর নেয়ার পর তিনি ‘ফ্রেন্ড্স অব বাংলাদেশ’ নামে একটি বেসরকারি সংস্থা খোলেন। ঐ প্রতিষ্ঠান কুড়িগ্রামে একটি স্কুল চালায়। বছরে অন্তত একবার তার চাচা বাংলাদেশে আসতেন। এসময় তিনি ঐ ফ্ল্যাটে উঠতেন।
পুলিশের গুলশান জোনের সহকারী কমিশনার নুরুল আলম জানান, এ ঘটনায় মৃতের ভাই লে.কর্নেল (অব.) মাহতাবউদ্দিন আহমেদ বাদী হয়ে অপমৃত্যুর মামলা করেছেন। তবে ময়নাতদন্ত রিপোর্টে হত্যার আলামত পাওয়া গেলে তা হত্যা মামলা হিসাবে নথিভূক্ত হবে।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button