তোপের মুখে ট্রাম্প

Trumpইসলামিক স্টেট (আইএস)-কে ঠেকানোর প্রশ্নে বছরের শেষ দলীয় বিতর্কে অংশ নিলেন যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান দলের মনোনয়নপ্রত্যাশী ৯ প্রার্থী। মঙ্গলবার লাস ভেগাসে অনুষ্ঠিত এ বিতর্কে এক ঘণ্টা আইএসকে পরাজিত করার নিজস্ব পরিকল্পনা তুলে ধরার পাশাপাশি পরস্পরের সঙ্গে তুমুল বির্তকেও লিপ্ত হন মনোনয়নপ্রত্যাশীরা। পাল্টাপাল্টি বক্তব্যে একে অপরকে ধরাশায়ী করার জোর চেষ্টা চালান তারা। রিপাবলিকান পার্টির এ বিতর্কটি সরাসরি সম্প্রচার করে যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী গণমাধ্যম সিএনএন। অভিবাসন ও আইএস দমনে প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার ব্যর্থতার কথাও বিতর্কে উঠে আসে।
আইএস ঠেকানোর অংশ হিসেবে মুসলমানদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে নিয়ে উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় করেছেন আলোচিত দুই প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং জেব বুশ। এদিনের বিতর্কে মুসলমানদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের ওপর সাময়িক নিষেধাজ্ঞা আরোপের পূর্ব ঘোষণা পুনর্ব্যক্ত করে বুশের তোপের মুখে পড়েন ডোনাল্ড ট্রাম্প।
জেব বুশ বলেন, ট্রাম্পের এ ধারণা সমস্যা সমাধানের কৌশল হিসেবে কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। ট্রাম্পের ধারণাকে অলীক এবং ‘পাগলামি’র শামিল বলে মন্তব্য করেন জেব বুশ। বিতর্কে বেশ কয়েকবারই জেব বুশ এবং ডোনাল্ড ট্রাম্প উত্তপ্ত বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন।
একপর্যায়ে ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, বিতর্কের শুরু থেকেই জেব বুশ তাকে লক্ষ্য করে বক্তব্য রাখছেন। জবাবে জেব বুশ বলেন, ‘এতে ধরাশায়ী হলে তো চলবে না। মার্কিন প্রেসিডেন্ট হতে হলে আরও শক্ত বক্তব্য মোকাবেলা করার সামর্থ্য থাকতে হবে।’ জেব বুশের উদ্দেশে ট্রাম্প বলেন, ‘জেব, তুমি শক্ত মানুষ ঠিকই, তবে জনমত জরিপে আমি যখন ৪২ শতাংশ, তোমার অবস্থান মাত্র তিন শতাংশে।’ রিপাবলিকান দলের প্রার্থী বিতর্কে যুক্তরাষ্ট্রে জাতীয় বিষয় তেমন প্রাধান্য পায়নি। প্রার্থীরা অভিবাসনের নামে অবৈধ ব্যক্তিদের কীভাবে ঠেকানো যায়, মেক্সিকো সীমান্তে কীভাবে বেষ্টনী দেওয়া যায় এসব বিষয় নিয়েই বিতর্কে জড়িয়ে পড়েন। সবাই একযোগে প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার ব্যর্থতার সমালোচনা করেন। আইএস দমনে এবং সিরিয়া পরিস্থিতি সামাল দিতে কঠিন সব পরিকল্পনার কথা তুলে ধরেন তারা।
কেউ কেউ কার্পেট বম্বিং করে আইএস দমনের কথা বলেন। দেশের নিরাপত্তা এবং জঙ্গিবাদ দমনে কে কতটা শক্ত অবস্থানে যাবেন, বিতর্কে তাই তুলে ধরেন মনোনয়নপ্রত্যাশীরা।
এদিকে অপর দুই প্রার্থী সিনেটর মার্কো রুবিও এবং টেড ক্রুজ বিতর্কিত টেলিফোন নজরদারি আইন নিয়ে জড়িয়ে পড়েন। প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা প্রণীত নতুন এই আইনে নাগরিকদের ওপর নজরদারির জন্য সরকারি সংস্থাগুলোর ওপর নানা পূর্বশর্ত আরোপের কথা বলা হয়েছে। কংগ্রেসে এ আইনের পক্ষে ভোট দিয়েছিলেন টেড ক্রুজ ও বিপক্ষে মার্কো রুবিও। তিনি অভিযোগ করেন, নিরাপত্তার স্বার্থে এ মুহূর্তে বেশি করে গোপন তথ্য সরকারের জানা দরকার। অথচ সিনেটর ক্রুজ ওবামার এ ব্যর্থ আইনের পক্ষে ভোট দিয়েছেন। জবাবে ক্রুজ বলেন, এ আইনের ফলে জননিরাপত্তা অধিক নিশ্চিত হয়েছে।
রাজনৈতিক বিতর্কে অভিজ্ঞ না হলেও দলীয় বিতর্কে ভালো করেছেন বলেই মনে করছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। অন্যদিকে বিতর্কের পর জেব বুশ বলেন, ডোনাল্ড ট্রাম্পকে রাজনীতি আত্মস্থ করতে আরও অনেক সময় ব্যয় করতে হবে। তিনি আরও বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কোনো হঠকারিতার দেশ নয়। নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য এ দেশের সুনাম রয়েছে এবং বিশ্বকে নেতৃত্ব দিয়ে আসছে। তবে রিপাবলিকান প্রার্থীদের চলমান বিতর্কে ফ্লোরিডার সাবেক গভর্নর জেব বুশ ভালো করেছেন বলে জনগণের তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় জানা গেছে।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button