ট্রাম্পের অভিযোগের জবাব দিতে ঐক্যবদ্ধ পাকিস্তান

pakistanট্রাম্পের অভিযোগের প্রেক্ষিতে সমুচিত জবাব দিতে এক কাতারে এসে দাঁড়িয়েছে পাকিস্তানের ক্ষমতাসীন দল ও বিরোধী দলীয় নেতারা। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যেসব অভিযোগ করেছেন, সেগুলোর আলোকে পাক-মার্কিন সম্পর্ক পর্যালোচনা করার দাবি জানিয়েছেন পাকিস্তানের বিরোধী দলীয় নেতারা। সেই সঙ্গে পার্লামেন্টের যৌথ অধিবেশন ডাকারও আহ্বান জানান তারা।
বিরোধী দলীয় নেতা খুরশিদ শাহ বলেন, আফগানিস্তানে মার্কিন যুদ্ধে পাকিস্তান যে দুর্ভোগ সহ্য করেছে, তা ক্ষতিপূরণের উর্ধ্বে। শাহ আরো বলেন, ট্রাম্পের মন্তব্যে তার অপরিণত বুদ্ধি এবং সংকীর্ণ মানসিকতা প্রকাশ পেয়েছে। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যেকোনো চক্রান্ত বানচাল করার জন্য আমাদের উচিত হবে ঐক্যবদ্ধ হওয়া। পাকিস্তানের চার বছর ধরে পূর্ণাঙ্গ কোনো পররাষ্ট্রমন্ত্রী না থাকায় পররাষ্ট্রনীতিতে ভুলগুলোর জন্য সরকারকে দায়ী করেন। পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) ইমরান খানও ট্রাম্পের অভিযোগের তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন। আফগানিস্তান যুদ্ধের বাস্তবতা সম্পর্কে অজ্ঞ থাকার জন্য তিনি ট্রাম্পের সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে মার্কিন যুদ্ধে পাকিস্তান বিপুল অর্থনৈতিক ও মানবীয় ক্ষতি বরণ করেছে। তিনি বলেন, সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধে পাকিস্তান ৭০ হাজার লোককে হারিয়েছে। এখন ট্রাম্পের টুইটে পাকিস্তান যে শিক্ষাটি নিতে পারে তা হলে অন্য কোনো দেশের জন্য পাকিস্তানের যুদ্ধ করা উচিত নয়, তারা যত সাহায্যের প্রস্তাবই দিক না কেন।
জামায়াতে ইসলামির নেতা সিরাজুল ইসলাম পাকিস্তানের জাতীয় স্বার্থ রক্ষার জন্য নতুন পররাষ্ট্রনীতি প্রণয়নের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। তিনিও ঐক্যবদ্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করার জন্য পার্লামেন্টের যৌথ অধিবেশন আহবান করতে বলেন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তার নতুন বছর শুরুই করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি পাকিস্তান প্রতারণা করছে বলে অভিযোগ করে। তিনি বলেন, পাকিস্তান মিথ্যা ও প্রতারণার মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র থেকে তহবিল নিয়ে যাচ্ছে। তার এই মন্তব্যে পাকিস্তানে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে।
মার্কিন প্রেসিডেন্টের অভিযোগ সত্য নয়। ইকোনমিক সার্ভে অব পাকিস্তানের ২০১৬-১৭ হিসাব অনুযায়ী, সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে মার্কিন যুদ্ধে পাকিস্তানের ক্ষতি হয়েছে ১২৩ বিলিয়ন ডলার। যুক্তরাষ্ট্র পাকিস্তানকে যে পরিমাণ সাহায্য দিয়েছে বলে টুইটে উল্লেখ করেছেন ট্রাম্প, এই পরিমাণ তার চেয়ে তিনগুণ বেশি। পররাষ্ট্রমন্ত্রী খাজা আসিফ ক্ষতির হিসাব করার জন্য নিরীক্ষক পাঠানোর জন্য যুক্তরাষ্ট্র সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
ট্রাম্পের অভিযোগের বিরুদ্ধে পাকিস্তানি প্রতিক্রিয়া ছিল মাপা। টুইটের প্রতি কোনো ধরনের তাড়াহুড়ামূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি পাকিস্তান। পাকিস্তান জানে, টুইটটি বাস্তব অবস্থা প্রতিফলন করে না, পাকিস্তান-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক এই টুইটের ওপর ভিত্তি করে হবে না। বর্তমানে আফগানিস্তানে রয়েছে ১৬ হাজার মার্কিন সৈন্য। ট্রাম্প আরো কয়েক হাজার সৈন্য আফগানিস্তানে পাঠাবেন বলে জানিয়েছেন।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button