বাংলাদেশের গ্রামীণ এলাকায় ধর্ষণ সবচেয়ে কম : জাতিসঙ্ঘ জরিপ

বাংলাদেশসহ ছয়টি এশীয়-প্রশান্ত মহাসাগরীয় দেশের পুরুষদের প্রতি ১০ জনের মধ্যে একজন স্বীকার করেছেন, নিজের স্ত্রী নয় এমন নারীকে তারা কোনো এক সময় ধর্ষণ করেছেন। সমীক্ষায় জানা যাচ্ছে, স্ত্রীর ইচ্ছের বাইরে তার ওপর বলাৎকার চালিয়েছেন বলে স্বীকার করেছেন এমন পুরুষের সংখ্যা এক চতুর্থাংশ। তবে সমীক্ষায় বলা হয়, বৈবাহিক সম্পর্কের বাইরে নারীকে ধর্ষণ করার ঘটনা সবচেয়ে কমে ঘটেছে বাংলাদেশের গ্রামীণ এলাকায়। ব্রিটিশ মেডিকেল সাময়িকী ল্যান্সেটে মঙ্গলবার দুটি নিবন্ধ প্রকাশ করেছে যাতে চম্কে দেয়ার মত এসব তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে। জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে আন্তর্জাতিক গবেষকদের একটি দল বাংলাদেশ, শ্রীলংকা, ক্যাম্বোডিয়া, চীন, ইন্দোনেশিয়া এবং পাপুয়া নিউ গিনির ১০ হাজারেরও বেশি পুরুষের ওপর সম্প্রতি দুটি সমীক্ষা চালায়। ধর্ষণের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ থেমে নেই এই সমীক্ষাগুলোর ফলাফলের ভিত্তিতে ল্যান্সেটে এই নিবন্ধ দুটি প্রকাশ করা হয়। পাশাপাশি জাতিসঙ্ঘের কাছেও এই ফলাফল উপস্থাপন করা হয়। ল্যান্সেট জার্নালের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, এই ছয়টি দেশের যেসব পুরুষের ওপর এই জরিপ চালানো হয় তাদের বয়স ছিল ১৮-৪৯ বছর এবং শহর ও গ্রামের পুরুষদের মধ্য থেকে উত্তরদাতা বেছে নেয়া হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, পুরুষরা কাউকে ধর্ষণ করেছে কিনা, কিংবা নারী নির্যাতন করেছে কি না, এই জরিপে এই প্রশ্নগুলো সরাসরি জিজ্ঞেস করা হয়নি। এর পরিবর্তে প্রশ্নগুলো ভিন্নভাবে করা হয়েছিল। যেমন : আপনি কী কখনো এমন কারো সাথে জোর করে যৌনমিলন করেছেন যিনি ওই সময় আপনার স্ত্রী কিংবা বান্ধবী ছিলেন না? অথবা, আপনি কি এমন কারো সঙ্গে যৌন সম্পর্ক করেছেন যে সময় তিনি এমনই নেশাগ্রস্ত কিংবা মাতাল ছিলেন যে আপনার সঙ্গে যৌনমিলনে আগ্রহী কি না, তা তিনি জানাতে পারছিলেন না? সমীার ফলাফলকে উদ্ধৃত করে ল্যান্সেট জার্নাল বলছে, উত্তরদাতাদের প্রতি ১০ জনের মধ্যে একজন (১১%) স্বীকার করেছেন নিজের স্ত্রী নয় এমন নারীকে তারা ধর্ষণ করেছেন। নিজের স্ত্রীর সাথে জোরপূর্বক যৌনমিলনের কথা স্বীকার করেছেন উত্তরদাতাদের প্রায় এক চতুর্থাংশ (২৪%). উত্তরদাতাদের মধ্যে প্রায় অর্ধেক (৪৫%) জানিয়েছেন, তারা একাধিক নারীকে ধর্ষণ করেছেন। গবেষণার ফলাফলে বলা হয়েছে, ধর্ষণের কারণ সম্পর্কে উত্তরদাতাদের মধ্যে প্রায় তিন চতুর্থাংশ (৭৩%) জানিয়েছেন, এটাতে তাদের অধিকার রয়েছে বলে মনে করেন। প্রায় অর্ধেক (৫৯%) বলছেন, শারিরীক আনন্দের জন্যই তারা জোর করে যৌনসঙ্গম করেছেন। আর এক তৃতীয়াংশ (৩৮%)-এর বেশি উত্তরদাতা বলেছেন, নারীকে শাস্তি দেয়ার জন্যেই তারা একাজ করেছেন। ল্যান্সেট জার্নাল বলছে, কোনো কোনো পুরুষ কেন নারী ধর্ষণ করেন, কিংবা নারী নির্যাতন করেন, এবং কিভাবে এটা ঠেকানো যায় সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানাই ছিল এই সমীার ল্য। সূত্র : বিবিসি।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button