সাংবাদিক সম্মেলনে তিন নোবেলজয়ী

‘সুচি গণহত্যার দায় এড়াতে পারেন না’

3-nobel-laureatesরোহিঙ্গাদের নির্মূল করতে পরিকল্পিত গণহত্যা চালিছে মিয়ানমার সরকার। সেদেশের নেত্রী অং সান সু চি সেই হত্যার দায় কোনোভাবেই এড়াতে পারেন না বলে মন্তব্য করেছেন শান্তিতে নোবেল জয়ী তিন নারী।
আজ বুধবার বিকালে নারীপক্ষ আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তারা এই মন্তব্য করেন । রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
শান্তিতে নোবেল পুরস্কার বিজয়ী এই তিন নারী হলেন ইরানের শিরিন এবাদী, ইয়েমেনের তাওয়াক্কাল কামরান এবং উত্তর আয়ারল্যান্ডের মেরিয়েড মাগুয়ার।
এই তিন নারী রোহিঙ্গাদের পরিস্থিতি সরজমিনে পরিদর্শনের জন্য গত শনিবার বাংলাদেশ সফরে আসেন। আগামীকাল ১ মার্চ পর্যন্ত তারা বাংলাদেশে থাকবেন। এরপর তারা মিয়ানমার সফরে যাবেন।
সংবাদ সম্মেলনে শিরিন এবাদী বলেন, রোহিঙ্গাদের নির্যাতন-নিপীড়ন ও গণহত্যা দায়ে মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সু চির পদত্যাগ করা উচিত। হত্যার দ্বায়ে সুচির আন্তর্জাতিক আদালতে বিচারের দাবিও জানান তিনি। রোহিঙ্গা নির্যাতন সুপরিকল্পিত গণহত্যা অভিহিত করে তিনি বলেন, এ হত্যার সঙ্গে মিয়ানমার সরকার এবং দেশটির সেনাবাহিনী জড়িত। তারা সন্ত্রাস দমনের নামে রাজনৈতিক স্বার্থের জন্য রোহিঙ্গা নির্যাতন ও গণহত্যা করেছে।
নোবেল জয়ী শিরিন এবাদী বলেন, এই ঘটনার জন্য মিয়ানমার সরকার দায়ী এবং মিয়ানমার সরকারকে অবশ্যই বিচারের মুখোমুখি হতে হবে। গণহত্যায় দায়ীদের যাতে আন্তর্জাতিক আদালতে বিচারের মুখোমুখি করা যায় তার লক্ষ্য সর্বোচ্চ চেষ্টা চালানো হবে।
নোবেল জয়ী মেরিয়েড মাগুয়ার বলেন, মিয়ানমার সরকারের এই গণহত্যাকে আমরা ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করি। তাদের আন্তর্জাতিক আদালতে বিচারের মুখোমুখি করা হবে। তিনি বলেন, একটি জাতিসত্ত্বাকে নিশ্চিহ্ন করার জন্য, ইতিহাস থেকে নাম মুছে ফেলার জন্য এই ঘটনা ঘটানো হচ্ছে।
নোবেল জয়ী তাওয়াক্কাল কারমান বলেন, আমি ভাষা হারিয়ে ফেলেছি। রোহিঙ্গাদের সঙ্গে কথা বলে যা জেনেছি তাতে পরিষ্কার যে সেখানে গণহত্যা চলছে। শিশুদের হত্যা করা হচ্ছে। নারী ধর্ষণও সেখানে হচ্ছে। সু চির প্রতি তিনি প্রশ্ন রাখেন, আমার নোবেল জয়ী বোন অং সান সু চি এখনও চুপ কেন? এই গণহত্যার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নিরবতা সত্যিই লজ্জাকর।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে নোবেল জয়ী শিরিন এবাদী বলেন, আমরা রোহিঙ্গাদের পরিস্থিতি পরিদর্শনের আগে মিয়ানমারের সরকার ও সুচির সাথে আলোচনা করতে চেয়ে ছিলাম, কিন্তু তারা আমাদেরকে আলোচনা কোন সুযোগ দেননি। আমরা এখান থেকে গিয়ে আবার রোহিঙ্গা সংকট নিরসনে মিয়ানমারে সরকারের সাথে আলোচনা করা পরিকল্পনা রয়েছে। আলোচনা মাধ্যমে এ সংকট নিরসন করা আমাদের দায়িত্ব।
নোবেলজয়ী এই তিন নারী মূলত কক্সবাজারে রোহিঙ্গা নারী ও শিশুদের অবস্থা সরেজমিনে পরিদর্শন করছেন।
শান্তি, ন্যায়বিচার ও সমতার জন্য গঠিত সংগঠন ‘নোবেল বিজয়ী নারীদের উদ্যোগ’ এ সফরের আয়োজন করা হয়। বাংলাদেশে পুরো কার্যক্রমে স্থানীয় সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন করছেন নারীপক্ষ।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button