বাইক্কা বিলে ৩৮ প্রজাতির ৮,৮৩২ পাখির সন্ধান

Birdএম এ রকিব: সিলেট বিভাগে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে দুই দিনব্যাপী পাখিশুমারি অনুষ্ঠিত হয়েছে। ২২ ও ২৩ জানুয়ারি হাইল হাওরের বাইক্কাবিলে এ পাখিশুমারি অনুষ্ঠিত হয়।
এ বছর বাইক্কাবিলে ৩৮ প্রজাতির পরিযায়ী ও দেশীয় জলচর পাখির সন্ধান মিলেছে। এর মধ্যে রয়েছে ১৬ প্রজাতির পরিযায়ী পাখি ও ২২ প্রজাতির দেশীয় জলচর পাখি।
জানা যায়, ২০০৪ সালে বাইক্কাবিল প্রতিষ্ঠার পর ওই বছরের জুলাই মাস থেকে পাখিশুমারির আওতায় নিয়ে আসা হয়। ওই বছরে মোট ২৯৬টি জলচর পাখি বাইক্কা বিলে আসে। জলাভূমির সূচক অনুযায়ী শুধুমাত্র জলচর পাখিকেই এ গণনার আওতায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
বাইক্কা বিলে পাখিশুমারির তথ্যে জানা যায়, ২০০৫ সালে ১ হাজার ১৭৪টি জলচর পাখি আসে, ২০০৬ সালে আসে ৬ হাজার ৯৪৯টি, ২০০৭ সালে ৭ হাজার ২০৪টি, ২০০৮ সালে ৬ হাজার ৪২৯টি, ২০০৯ সালে ৯ হাজার ৪০৫টি, ২০১০ সালে ১২ হাজার ২৫০টি, ২০১১ সালে ৫ হাজার ৯৮৯টি, ২০১২ সালে ৩ হাজার ৯৬৪টি, ২০১৩ সালে ৭ হাজার ৪৯৯টি, ২০১৪ সালে ১০ হাজার ৪৭৯টি পরিযায়ী ও দেশীয় বিভিন্ন প্রজাতির জলচর পাখি বাইক্কাবিলে আসে।
ক্লাইমেট রেজিলিয়েন্ট ইকোসিস্টেমস এন্ড লাইভলিহুডস (ক্রেল) রিজিওনাল কো-অর্ডিনেটর মাজহারুল ইসলাম ইসলাম জাহাঙ্গীর জানান, ক্রেলের সিনিয়র কো-ম্যানেজমেন্ট এ্যাডভাইজার পল থম্পসন ২২-২৩ জানুয়ারী দুইদিনব্যাপী শ্রীমঙ্গলের হাইল হাওরের বাইক্কাবিলে পাখি গণনা করেন।
তিনি আরো বলেন, এ বছর বাইক্কা বিল অভয়াশ্রমে পরিযায়ী ও দেশীয় বিভিন্ন প্রজাতির মোট ৮ হাজার ৮৩২টি জলচর পাখি গণনা করা হয়েছে। গত বছর ৬ হাজার ৯৯১টি জলচর পাখি বাইক্কা বিলে অবস্থান করেছিল।
বছরে বছরে পাখির সংখ্যার তারতম্য সম্পর্কে পল থম্পসন বলেন, বাইক্কা বিল অভয়াশ্রম প্রতিষ্ঠার পর থেকে সেখানে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজকর্ম করা হচ্ছে। এর মধ্যে যেমন হিজল করচের বাগান, বনজ গাছ লাগানো এবং খনন কাজ করা উল্লেখযোগ্য।
তিনি বলেন, এ কাজগুলো সাধারণত শুকনো মৌসুমে করা হয়। আর তখনি বিলে পাখি আসাও শুরু করে। কাজেই বিলের ধারে কাজগুলো করার কারণে পাখিরা এসেও অন্যত্র চলে যায়। তবে কাজ শেষ হওয়ার পর পাখিরা আবার বিলে চলে আসে। পরিযায়ী পাখিরা প্রধানত যেকোনো জায়গায় আসার আগে আবাসস্থলটি নিরাপদ কিনা সেটি বিবেচনায় রাখে। তাছাড়া, পাখি যখন আসে তখন জলাভূমিতে মাছ ধরার মৌসুমও থাকে। মানুষের আনাগোনা বেড়ে যাওয়ার ফলে এবং শিকার হয়ে যাওয়ার ভয়ে পাখিরা আসে না।
তিনি আরো বলেন, এসব কিছুর পরেও এ বছর বাইক্কাবিলে বালিহাঁসের সংখ্যা অন্যান্য বছরের তুলনায় অনেক বেড়েছে। দেশীয় পাখিদের মধ্যে এ বছর ২০০ বালিহাঁসের দেখা মিলেছে। আর খয়রা কাস্তে চরা নামের পরিযায়ী জলচর পাখিটি ৪/৫ বছর আগে বাংলাদেশে দেখা না গেলেও এবছর বাইক্কা বিলে ৮৬টি পাখির দেখা মিলেছে। গেওয়ালা বাটান পাখির দেখা মিলেছে ১ হাজার ৮৮টি। এছাড়া তিলা লালসা পাখির দেখা মিলেছে ৬৬৪টি। বাইক্কা বিলে এ পাখিটির সংখ্যা এ যাবতকালের সবচেয়ে বেশি এসেছে বলে তিনি জানান।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button