ট্রাম্প-বিরোধী বিক্ষোভে উত্তাল যুক্তরাষ্ট্র

demostrationকেড়ে নেয়া শিশুদের মা-বাবার কাছে অবিলম্বে ফেরত এবং অভিবাসন-বিরোধী সকল কর্মকাণ্ড স্থগিতের দাবিতে আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রে একযোগে বিক্ষোভ-সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার আমেরিকার রাজপথ ট্রাম্প-বিরোধী স্লোগানে মুখরিত ছিল। এসব কর্মসূচিতে অংশগ্রহণকারীর সিংহভাগই ছিলেন শ্বেতাঙ্গ নারী-পুরুষ এবং স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী। ডেমক্র্যাটিক পার্টির সিনেটর, কংগ্রেসম্যানসহ স্থানীয় পর্যায়ের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরাও ছিলেন এ বিক্ষোভে।
অভিবাসীদের অধিকার ও মর্যাদার প্রশ্নে সাম্প্রতিক সময়ে অনেক কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হলেও শনিবারের কর্মসূচির মেজাজ ছিল একেবারেই ভিন্ন। সকলেই দাবি তুলেছেন ইমিগ্রেশন এ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (আইস) বিলুপ্তির জন্যে। আইসের আচরণে যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধান বিপন্ন হতে চলেছে বলেও বিক্ষোভ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে।
কর্মসূচি চলাকালে হোয়াইট হাউজ থেকে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এক টুইট বার্তায় উল্লেখ করেছেন যে, ডেমক্র্যাটদের কারণে যুক্তরাষ্ট্রের সীমান্ত নিরাপদ করা সম্ভব হচ্ছে না, একই কারণে অপরাধী বিদেশীদের গ্রেফতার ও বহিষ্কারের প্রক্রিয়াও ফলপ্রসূ হচ্ছে না। তবে আইস এখন যা করছে তা অভিনন্দনযোগ্য।
নিউইয়র্ক সিটির জ্যাকসন হাইটসের কর্মসূচিতে ছিলেন কংগ্রেসওম্যান গ্রেস মেং এবং নির্বাচিত কংগ্রেসওম্যান করটেজ। তারা ক্ষোভের সাথে ট্রাম্প প্রশাসনের ইমিগ্রেশন বিরোধী কর্মকাণ্ডের সমালোচনা করেন। বিশেষ করে মেক্সিকো সীমান্ত পাড়ি দেয়ার সময় গ্রেফতারকৃতদের কাছে থেকে শিশুদের কেড়ে নেয়ার ঘটনাকে অমানবিক এবং যুক্তরাষ্ট্রের নীতি-নৈতিকতার সাথে মানায় না বলে উল্লেখ করেন।
ওয়াশিংটন ডিসি, বস্টন, ফিলাডেলফিয়া, ডালাস, লস এঞ্জেলেস, মায়ামী, আটলান্টা, ডেট্রয়েট, শিকাগো, ফিনিক্স, আটলান্টিক সিটিসহ বিভিন্ন সিটির কর্মসূচি থেকে কংগ্রেসম্যানদের প্রতি উদাত্ত আহবান জানানো হয় ইমিগ্রেশনের জটিলতা অবসানে যথাযথ বিল পাশের জন্যে। অন্যথায় নভেম্বরের নির্বাচনে ব্যালট বিপ্লব ঘটানো হবে বলেও হুমকি দেয়া হয়।
প্রসঙ্গত, গত ৭ সপ্তাহে ২৬০০ শিশুকে কেড়ে নেয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন। এছাড়াও আরও প্রায় ২০ হাজার শিশু ডিটেনশন সেন্টারে অবর্ণনীয় দুর্দশায় রয়েছে। তাদের অভিভাবকেরা আশ্রয় না পাওয়ায় এমন করুণ পরিস্থিতির অবতারণা হয়েছে। যদিও প্রচলিত আইন অনুযায়ী ৪৫ দিনের মধ্যে আশ্রয়ের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত না হলে সংশ্লিষ্টদের প্যারলে মুক্তি দেয়ার কথা। ট্রাম্প প্রশাসনের বিশেষ নির্দেশে সে সব রীতি এখন প্রায় অকার্যকর।
এরইমধ্যে গত বুধবার একজন ফেডারেল বিচারক রুল জারি করে পরিবার-বিচ্ছিন্ন করণের আচরণ থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দিয়েছেন। এতে বলা হয়, ৩০ দিনের মধ্যে শিশুদেরকে মা-বাবার কাছে ফেরত দিতে হবে।
এর আগে ২০ জুন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এ ধরনের একটি নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করলেও ৩০ জুন পর্যন্ত তার কোন প্রতিফলন ঘটেনি বলে এসব বিক্ষোভ থেকে উল্লেখ করা হয়। ওয়াল স্ট্রিট জার্নালও সরেজমিনে অনুসন্ধান করে একই সত্যতা জানতে পেরেছে। জানা গেছে, ট্রাম্পের ওই আদেশের পর মাত্র ৬ শিশুকে অভিভাবকের কাছে ফেরত দেয়া হয়েছে।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button