পুলিশ প্রটোকলে ১৫ দিন পর কার্যালয়ে খালেদা

Kaledaপুলিশ প্রটোকলে ১৫ দিন পর গুলশানের নিজ কার্যালয়ে এসেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। বুধবার সন্ধ্যা ৭টা ৩৫ মিনিটে নিজ রাজনৈতিক কার্যালয়ে আসেন তিনি। এসময় উপস্থিত নেতাকর্মীরা খালেদা জিয়াকে শুভেচ্ছা জানান।
বিএনপি নেতাদের মধ্যে স্থায়ী কমিটির সদস্য লে. জে. (অব.) মাহবুবুর রহমান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ড. ওসমান ফারুক, সাবিহ উদ্দিন আহমেদ, রিয়াজ রহমান, নারী সংসদ সদস্য নিলুফার চৌধুরী মনি, রাশেদা বেগম হীরা, মহিলা দলের সভাপতি নূরে আরা সাফা, নির্বাহী কমিটির সদস্য জেবা খান, জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক আন্দোলনের সভাপতি সানজানা চৈতী পপি প্রমুখ গুলশান কার্যালয়ে উপস্থিত রয়েছেন।
এরপর চীনা রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বৈঠকে বসেন খালেদা জিয়া। এর আগে গত মঙ্গলবার জার্মান রাষ্ট্রদূত, বুধবার কানাডীয়ান রাষ্ট্রদূত, বৃহস্পতিবার ব্রিটিশ হাইকমিশনার রবার্ট গিবসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে তার বাসভবনে সাক্ষাৎ করেন।
প্রসঙ্গত, ১৪ দিন পর বুধবার সকালে গুলশান-২ নম্বরের ৭৯ নম্বর রোডের খালেদা জিয়ার বাসার সামনে থেকে ‘নিরাপত্তা ব্যারিকেড’ ও অতিরিক্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের তুলে নেয়া হলেও অবরোধ কর্মসূচির জন্য বাসা থেকে বের হননি তিনি। ১২ দিন ধরে নিজ বাসায় ‘অবরুদ্ধ’ ছিলেন খালেদা। এসময় দলের কোনো নেতা, আত্মীয়স্বজনকেও তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে দেয়নি আইনশৃঙ্খলাবাহিনী। এমনকি তার খাবারও বাইরে থেকে বাসায় প্রবেশে বাধা দেয় পুলিশ। সর্বশেষ ২৬ ডিসেম্বর নিজ বাসা থেকে গুশানের কার্যালয়ে যান তিনি।
উল্লেখ্য, গত ২৪ ডিসেম্বর গুলশানে নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে ‘মার্চ ফর ডেমোক্রেসি’ কর্মসূচি ঘোষণা করেন খালেদা জিয়া। ওই রাতেই গুলশানে তার বাসার সামনে পুলিশের সংখ্যা বাড়ানো হয়। পাশাপাশি গুলশানের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেয় পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। সেদিন থেকেই পুলিশ কাউকে বাসভবন ও কার্যালয়ে যাওয়া-আসা করতে দেয়নি। বিরোধীদলীয় নেতার প্রোটোকলও সরিয়ে নেয়া হয়। অঘোষিতভাবে অবরুদ্ধ করা হয় বেগম খালেদা জিয়ার বাসভবন ও কার্যালয়। গুঞ্জন উঠে, যে কোনো সময় বেগম খালেদা জিয়াকে গ্রেপ্তার করা হতে পারে। অবরুদ্ধ অবস্থায় ২৫ ডিসেম্বর খ্রিস্টান অ্যাসোসিয়েশনের নেতাকর্মীদের সঙ্গে বড়দিন উপলক্ষ্যে সাক্ষাৎ করেন খালেদা জিয়া। পরদিনও কার্যালয়ে তিন ঘণ্টা অবস্থান করেন তিনি। এসময় কাউকে কার্যালয়ে প্রবেশ করতে না দিলেও সাংবাদিক ও আইনজীবী নেতারা খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
এরপর ২৭ ডিসেম্বর থেকে নিজ বাসা থেকে একবারের জন্যও বের হতে পারেননি তিনি। এমনকি কোনো নেতাকর্মীকে তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে দেয়া হয়নি। ২৮ ও ২৯ ডিসেম্বর ‘মার্চ ফর ডেমোক্রেসিতে অংশগ্রহণ করার জন্য বাসা থেকে বের হওয়ার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন খালেদা জিয়া। এর মধ্যে ব্রিটিশ ও মার্কিন রাষ্ট্রদূত খালেদা জিয়ার সঙ্গে তার বাসভবনে সাক্ষাৎ করেন। ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূত সাক্ষাৎ শেষে বের হওয়ার পর ভাইস-চেয়ারম্যান শমসের মবিন চৌধুরীকে আটক করা হলেও পরে ছেড়ে দেয় পুলিশ। এছাড়া গত ১২ দিনে দলের একাধিক নেতাকে গুলশানের বাসার সামনে থেকে আটক করে পুলিশ। ভাইস চেয়ারম্যান সেলিমা রহমানসহ কয়েকজনকে ছেড়ে দিলেও বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য সরদার সাখাওয়াৎ হোসেন বকুল, নারী সংসদ সদস্য শাম্মী আক্তারসহ কয়েকজন এখনো কারাগারে রয়েছেন।
পরে খালেদা জিয়াকে অবরুদ্ধ করে রাখার অভিযোগ তুলে রাষ্ট্রপতি ও স্পিকারের সঙ্গে দেখা করে খালেদা জিয়া গ্রেপ্তার, অবরুদ্ধ না কি গৃহবন্দী তা জনগণের কাছে স্পষ্ট করার আবেদন জানায় বিএনপির সংসদীয় দল। তবে সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়, খালেদা জিয়া অবরুদ্ধ নন।
গত রোববার দশম জাতীয় নির্বাচনের দিনও খালেদা জিয়ার বাসার সামনে অতিরিক্ত আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর উপস্থিতি ও ব্যারিকেড বহাল ছিল। পরে গত বুধবার সন্ধ্যার দিকে খালেদা জিয়ার সরকারি প্রটোকল ফিরিয়ে দেয়া হয়।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button