সংঘাত-বিতর্ক ছাড়া একদিনও থাকতে পারেন না ট্রাম্প?

Trumpচীনের সঙ্গে বাণিজ্য সংঘাতের মাঝে মেক্সিকোর সঙ্গে সীমান্ত নিয়ে সংঘাতের পথে চলেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। অবৈধ অভিবাসন রুখতে ন্যাশনাল গার্ড বাহিনী মোতায়েনের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। কয়েকটি রাজ্য এতে সাড়াও দিয়েছে।
দেখা যাচ্ছে, সংঘাত-বিতর্ক ছাড়া প্রায় একটা দিনও কাটছে না ট্রাম্প প্রশাসনের। বর্তমানে চীনের সঙ্গে বাণিজ্য যুদ্ধের পাশাপাশি প্রতিবেশী মেক্সিকোর সঙ্গে সীমান্ত নিয়েও বচসা তুঙ্গে উঠেছে। এখন পর্যন্ত ট্রাম্প তার নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি পালন করতে পারেননি। অবৈধ অভিবাসন রুখতে মেক্সিকো সীমান্ত প্রাচীর তৈরি করতে না পেরে আপাতত ন্যাশনাল গার্ড বাহিনী মোতায়েন করতে চান তিনি।
টুইটারে কয়েকদিন ধরে এ বিষয়ে একের পর এক বক্তব্য দিয়ে যাচ্ছেন ট্রাম্প। ডেমোক্রেটিকদের বিরুদ্ধে তিনি ‘সীমান্ত উন্মুক্ত রেখে মাদক ও অপরাধকে যুক্তরাষ্ট্রে অনুপ্রবেশ করতে দেয়ার’ অভিযোগ তুলেছেন। টুইটারে তিনি বলেন, ‘অবৈধ অভিবাসন নিয়ে কঠোর আইন প্রণয়নে রিপাবলিকান নেতাদের এখনই সম্মিলিত প্রচেষ্টা চালানো উচিত।’
মেক্সিকোর দক্ষিণের কয়েকটি দেশের প্রায় এক হাজার আশ্রয়প্রার্থী মেক্সিকো পেরিয়ে দলবদ্ধভাবে যুক্তরাষ্ট্রে অনুপ্রবেশের চেষ্টা চালাচ্ছে, এমন একটি খবর শুনেই ক্রুদ্ধ ট্রাম্প সেনা পাঠানোর ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, সীমান্তের পরিস্থিতি সংকটের আকার নিয়েছে। তার মতে, সেখানে আইনের শাসনের অভাব মার্কিনীদের নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্বের ক্ষতি করছে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ঘোষণার পর প্রতিরক্ষা ও অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা মন্ত্রণালয় দক্ষিণের রাজ্যগুলোর গভর্নরদের সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে সীমান্ত্মে ন্যাশনাল গার্ড বাহিনী মোতায়েনের ঘোষণা দিয়েছে। তবে আচমকা এমন নির্দেশ পালন করা অত্যন্ত কঠিন কাজ হবে বলে কর্তৃপক্ষ মনে করছে।
উল্লেখ্য, ২০১০ সাল থেকেই আশ্রয়প্রার্থীরা বছরে একবার দলবদ্ধভাবে ‘ক্যারাভান’ হিসেবে মার্কিন সীমান্তের উদ্দেশে রওনা হয়। নিজেদের করুণ পরিস্থিতি সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টি করতেই এই অভিযান চালানো হয়। দলের নেতারা গত বুধবার বলেছেন, প্রায় ৮০ শতাংশ আশ্রয়প্রার্থী আপাতত মেক্সিকোয় থেকে যাবে।
বলা বাহুল্য, এই ঘোষণার পর মেক্সিকোয় তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে। সে দেশের পার্লামেন্টে দলমত নির্বিশেষে একটি প্রস্তাব পাস করা হয়েছে। তাতে সরকারের উদ্দেশে অভিবাসন ও নিরাপত্তার ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সহযোগিতা বন্ধ করার ডাক দেয়া হয়েছে।
পার্লামেন্টের পররাষ্ট্রবিষয়ক কমিটির প্রধান লাউরা রোহাস বলেন, শুরু থেকেই লাগাতার তর্জন-গর্জন করে ট্রাম্প মেক্সিকোর প্রতি অশ্রদ্ধা ও অপমানজনক আচরণ করে চলেছেন। কিছু ভুল ধারণা ও তথ্যের ভিত্তিতে তিনি একের পর এক হুমকি দিয়ে চলেছেন।
পার্লামেন্টের এই প্রস্তাব কার্যকর করার কোনো বাধ্যবাধকতা অবশ্য সরকারের নেই।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সীমান্তে পরিকল্পনার বিষয়ে মার্কিন অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। সীমান্তে সামরিকীকরণ হলে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের বিশাল ক্ষতি হবে বলে সতর্ক করে দিয়েছে মেক্সিকো। মেক্সিকোর সরকার ‘ক্যারাভান’ নিয়ে ট্রাম্প প্রশাসনের ‘মাত্রাতিরিক্ত’ প্রতিক্রিয়ার সমালোচনা করে বলেছে, নভেম্বর মাসে সে দেশের মধ্যবর্তী নির্বাচনে রিপাবলিকান দলের ভরাডুবি এড়াতেই ট্রাম্প এমন তর্জন-গর্জন করছেন। -ডয়েচে ভেলে, বিবিসি

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button