যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্নের হুমকি ওআইসি’র

oicজেরুসালেমকে ইসরায়েলের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি দিলে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্নের হুমকি দিয়েছে আন্তর্জাতিক ইসলামি সংস্থা ওআইসি। ওআইসির সদস্যভুক্ত ৫৭টি দেশের অংশগ্রহণে একটি জরুরি সম্মেলনে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে বলে ওআইসি জানিয়েছে।
মঙ্গলবার ওআইসির পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়, যদি কোনো দেশ নিজেদের দূতাবাস জেরুজালেমে স্থানান্তর করে বা অথবা জেরুজালেমকে ঈসরাইলের রাজধানী ঘোষণা হিসেবে স্বীকৃতি দেয় তাহলে ওআইসির প্রতিটি সদস্যভুক্ত দেশই এ সম্পর্ক ছিন্নের উদ্যোগ নিবে।
বুধবার জেরুজালেমকে ইসরাইলের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি দিতে পারেন ট্রাম্প। গত বৃহস্পতিবার ট্রাম্পের জামাতা জ্যারেড কুশনার এ সংবাদ দেওয়ার পর আবারও সরব হয়ে উঠেছে মুসলিমবিশ্ব। এদিকে ট্রাম্প সত্যিই কী সিদ্ধান্ত নেন তা জানার জন্য সংবাদ মাধ্যম এখন আকড়ে ধরছে কুশনারকে। কুশনার সোমবার জানিয়েছেন, যখন চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিবেন তখন তিনি নিজেই জানাবেন। কী হবে আমরা কেউ জানি না।
উল্লেখ্য, ১৯৬৭ সালে পূর্ব জেরুজালেম দখল করে নেয় ইসরায়েল। পরে ১৯৮০ সালে তারা পূর্ব জেরুজালেমকে অধিগ্রহণ করে নেয় এবং ইসরায়েলের অংশ হিসেবে ঘোষণা করে। তবে আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী ওই অঞ্চলকে দখলকৃত হিসেবেই বিবেচনা করা হয়।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের জেরুজালেম’কে ইসরায়েলের রাজধানী ঘোষণা করার পরিকল্পনা সারা পৃথিবীতে কূটনীতিক ও রাজনীতিকদের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করেছে। এমনকি যুক্তরাষ্ট্রেও তার এই বিতর্কীত পরিকল্পনা নিয়ে চলছে সমালোচনা।
জেরুজালেম মুসলিম ও ইহুদি উভয় ধর্মের কাছেই পবিত্র একটি স্থান। ফিলিস্তিন ও ইসরায়েল উভয়ই নিজেদের অধীনে বলে দাবি করে। দ্বিপক্ষীয় আলোচনা সাপেক্ষে সমস্যাটি নিয়ে তাদেরই সিদ্ধান্ত নিতে হবে এবং যুক্তরাষ্ট্র এমন কোন পদক্ষেপ গত কয়েক দশকের রাষ্ট্রীয় নীতিমালা লঙ্ঘন করবে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছে।
ট্রাম্প একতরফাভাবে ইসরাইলের রাজধানী হিসেবে জেরুসালেমকে স্বীকৃতি দিতে পারেন বলে সোমবার উদ্বেগ প্রকাশ করেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ।
যুক্তরাষ্ট্রের ডার্টমাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত সাবেক মার্কিন কাউন্টার-টেররিসম বিশেষজ্ঞ ডানিয়েল বেঞ্জামিন বলেন, ‘এমন সিদ্ধান্ত গ্রহণ আগুন নিয়ে খেলার সমতুল্য।’
ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাতের চূড়ান্ত নিষ্পত্তির আগে এ ধরনের পদক্ষেপ শান্তি প্রক্রিয়ার উপর বিরুপ প্রভাব ফেলবে বলে সোমবার জানায় সৌদি প্রশাসন। জর্দান ও তুরস্কের নেতৃবৃন্দ সহ আরব লিগের প্রধান সতর্ক করে দিয়ে বলেন, এই পদক্ষেপটি সহিংসতা তৈরী করবে এবং বড় বিপর্যয়ের দিকে টেনে নিয়ে যাবে।
এদিকে ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস বিশ্ব নেতাদের হস্তক্ষেপ করার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘মার্কিন প্রশাসনের এমন সিদ্ধান্ত শান্তি প্রক্রিয়া ধ্বংস করবে।’
মার্কিন প্রশাসনের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা গত সপ্তাহে রয়টার্সকে জানান, ট্রাম্প বুধবার জেরুজালেম’কে ইসরায়েলের রাজধানী ঘোষণা করতে পারেন। যদিও ট্রাম্পের জামাতা ও প্রশাসনিক উপদেষ্টা জারেড কুশনার রোববার বলেন, সিদ্ধান্তটি এখনও চূড়ান্ত নয়।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button