লন্ডনে হু হু করে বাড়ছে বাড়ি ভাড়া

UKমনিরুজ্জামান : লন্ডনে হু হু করে বাড়ছে বাড়ি ভাড়া। শহরের অধিকাংশ অধিবাসীরা বাড়ি ভাড়া মেটাতে হিমশিম খাচ্ছেন। তাদের মাসিক বেতনের অর্ধেক বাড়ির মালিককে দিয়ে দিতে হয়। সম্প্রতি ভ্যালুয়েশন অফিস এজেন্সি কর্তৃক প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ কথা জানা যায়।
বিষয়টি নিয়ে মতৈনক্য দেখা গেছে রাজনীতিবিদদের মধ্যে। তারা অনেকেই নিউ ইয়র্ক স্টাইলে ভাড়া নিয়ন্ত্রনের কথা বলেছেন। আবার কেউ কেউ মন্তব্য করা থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন।
ভ্যালুয়েশন অফিস এজেন্সির প্রতিবেদনে জানায়, লন্ডনের ৩৩টি শহরের মধ্যে ১৮টি শহরের এক কক্ষ বিশিষ্ট বাড়ির ভাড়া ১০০০ পাউন্ডের বেশী। গ্রেটার লন্ডনে বাড়ি ভাড়া গত পাচ বছরে ২২% বৃদ্ধি পেয়েছে।
এ বিষয়ে লন্ডনের মেয়র পদপ্রার্থী ডেভিড লাম্মি বলেন, বাড়ি ভাড়া নিয়ন্ত্রন না করলে আমাদের অবস্থা প্যারিসের ইহুদিপাড়ার মত হয়ে যাবে। বাড়ি ভাড়া নিয়ন্ত্রন বলতে বোঝায়, কন্ট্রাক্টের মাধ্যমে ভাড়া বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রন।
লাম্মি  আরো বলেন, আমি লন্ডন শহরকে নিয়ে খুব চিন্তিত। আমাদের এখনই বাড়ি ভাড়া নিয়ন্ত্রনে পদক্ষেপ নিতে হবে। তা না হলে আমরা পারসিয়ানদের মত ভাড়া দিতে দিতে নি:স্ব হয়ে যাব।
ভ্যালুয়েশন অফিস এজেন্সির প্রতিবেদনে আরো জানা যায়, গ্রীনউইচ এবং সাউথ ইস্ট লন্ডনে বাড়ি ভাড়া ৩০% এর বেশী বৃদ্ধি পেয়েছে। এক কক্ষ বিশিষ্ট বাড়ির ভাড়া ৭৫০ পাউন্ড থেকে বেড়ে দাড়িয়েছে ৯৭৫ পাউন্ড। নর্থ লন্ডনে ভাড়া বেড়েছে ২০%। এক কক্ষ বিশিষ্ট বাড়ির ভাড়া ১২১৩ পাউন্ড থেকে বেড়ে দাড়িয়েছে ১৪৫২ পাউন্ড। এছাড়া লন্ডনের প্রধান চারটি শহরে এক কক্ষ বিশিষ্ট বাড়ির ভাড়া ১১০০ পাউন্ডের বেশী।
অর্থনীতিবিদরা বলেছেন, লন্ডনবাসী গড়ে তাদের বেতনের ৩০% বাড়ি ভাড়া হিসেবে প্রদান করে। যা বিশ্বে সবচেয়ে বেশী।
ম্যাকিনসে গ্লোবাল ইনিস্টিটিউটের তথ্য মতে, লন্ডনের অনেকেই তাদের বেতনের অর্ধেক বাড়ি ভাড়া হিসেবে পরিশোধ করে।
চিত্রশিল্পী লুর‌্যা এবং টেনিস কোচ অলিভার বলেন, তাদের দুই জনের মোট বাৎসরিক বেতন ৩৫০০০ পাউন্ড। যা তাদের বাড়ি ভাড়া দিতেই শেষ। সন্তান জন্মের পর তারা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। এনএইসএস কর্মকর্তা জেনি বলেন, আমি আমার বেতনের ৯৫% বাড়ি ভাড়া পরিশোধ করি।
লন্ডনের সবচেয়ে শস্তা শহর বেক্সলীতে একজন কর্মকর্তার মাসিক বেতন ১৩৭৩ পাউন্ড। এক কক্ষ বিশিষ্ট একটি বারি ভাড়া ৭০০ পাউন্ড। ভ্যালুয়েশন অফিস এজেন্সির তথ্য মতে, সেখানকার নাগরিকরা তাদের বেতনের ৫০% বাড়ি ভাড়া পরিশোধ করে।
তবে ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টির রাজনীতিবিদরা ভাড়া নিয়ন্ত্রনের বিরুদ্ধে মত দিয়েছেন। ক্ষমতাসীন দলের রাজনীতিবিদ জ্যাক গোল্ডস্মিথ বাড়ি ভাড়া নিয়ন্ত্রন প্রসঙ্গে মন্তব্য করতে নারাজ।
এদিকে ক্যামডেন কাউন্সিলের লেবার লিডার সারাহ হেওয়ার্ড বলেন, ভবিষ্যতে লন্ডনের পরিণতির কথা ভেবে আমি আসলেই খুব চিন্তিত।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button