ইউরোপ জুড়ে সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি

Franceসন্ত্রাসী হামলার আশঙ্কায় ইউরোপ জুড়ে সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি করা হয়েছে। ফ্রান্সের পর বেলজিয়ামেও পুলিশের পাশাপাশি সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। সন্দেহভাজন সন্ত্রাসীদের গ্রেফতারে ফ্রান্স, বেলজিয়াম ও জার্মানিতে অভিযান শুরু হয়েছে। গত সপ্তাহে ফ্রান্সে শার্লি হেবদোর অফিসে সন্ত্রাসী হামলার পর থেকে বেশ কয়েকটি দেশে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।
সন্ত্রাসী কার্যকলাপ মোকাবিলায় বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসে জিউস মিউজিয়ামের সামনে শনিবার থেকে পুলিশের পাশাপাশি সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। এর আগে গত বছর ঐ জিউস মিউজিয়াম এলাকায় সন্ত্রাসী হামলায় মারা যায় চার জন। নাশকতা মোকাবিলায় বেলজিয়ামের বৃহত্তম শহর অন্তওয়ার্পেও সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। বেশকিছু রাস্তায় গাড়ি চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। বেলজিয়াম কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, জিউস মিউজিয়াম এলাকার নিরাপত্তার জন্য পুলিশের পাশাপাশি দেড় শতাধিক সেনা কাজ করছে।
ইউরোপের দেশগুলোতে মধ্যপ্রাচ্য থেকে যুদ্ধ ফেরত ইউরোপীয়ান তরুণদের নিয়েও উদ্বিগ্ন এসব দেশের নিরাপত্তা বাহিনী। সন্ত্রাসী কার্যকলাপের সাথে জড়িত থাকায় বেলজিয়ামে গত শুক্রবার পাঁচ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুই সন্দেহভাজনকে গুলি করে হত্যার পর দেশটিতে অন্তত ১৩ জনকে আটক করা হয়েছে। এসব ব্যক্তির নিকট থেকে বন্দুক, বিস্ফোরক, বিপুল পরিমাণ অর্থ, যুদ্ধে ব্যবহূত সরঞ্জাম এমনকি পুলিশের পোশাকও উদ্ধার করেছে নিরাপত্তা কর্মীরা। বেলজিয়ামের কৌঁসুলি দফতরের কর্মকর্তা ইরিক ভ্যান দার সিপ্ট বলেন, তদন্তে দেখা গেছে এদের পুলিশের ওপর হামলার পরিকল্পনা ছিলো। তারা রাস্তায় অবস্থানরত পুলিশ এবং থানায় হামলার চেষ্টা করছিলো। শনিবার দেশটির কৌঁসুলি অফিস থেকে জানানো হয়েছে, ১৩ জনকে আটক করা হলেও তাদের জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তিন জনকে ছাড়া বাকিদের ছেড়ে দেয়া হয়েছে।
বেলজিয়াম সরকারের পক্ষ থেকে ঘোষণা দেয়া হয়েছে, সন্ত্রাস দমনে তারা নতুন পদক্ষেপ নেবে। তবে শার্লি হেবদোর হামলার সাথে বেলজিয়ামে গ্রেফতারকৃতদের কোন সম্পর্ক খুঁজে পায়নি তদন্তকারী দল।
এদিকে ফ্রান্সের প্রধানমন্ত্রী ম্যানুয়েল ভালস বলেছেন, শার্লি হেবদোর ঘটনায় বেলজিয়ামে গ্রেফতারকৃতদের সম্পৃক্ততা পাওয়া না গেলেও উভয় দেশই সন্ত্রাসী হামলার হুমকির মুখে রয়েছে। উভয় দেশ একই ধরনের সমস্যার মুখোমুখি। সন্ত্রাসবাদ উভয় দেশের মূল্যবোধের প্রতি হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ফ্রান্স পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, গত সপ্তাহের হামলার ঘটনায় ১২ জন সন্দেহভাজনকে আটক করা হয়েছে। সন্ত্রাসবিরোধী অভিযানের অংশ হিসাবে ফ্রান্সের পাঁচটি শহরে চালানো অভিযানে তাদের গ্রেফতার করা হয়। অস্ত্র, গাড়িসহ নানা ধরনের রসদ দিয়ে সাহায্য করার অভিযোগে তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে। সন্ত্রাসী হামলার পর থেকে ফ্রান্সে উচ্চ সতর্কাবস্থা জারি করা হয়েছে। দেশটির কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, দেশ জুড়ে এক লাখ ২২ হাজার পুলিশ এবং সেনা মোতায়েন রয়েছে। শুক্রবার ফ্রান্সের জারে দি ইস্ট রেল স্টেশনে বোমাতঙ্কে স্টেশনের সবাইকে সরিয়ে নেয়া হয়।
ফ্রান্স এবং বেলজিয়ামে সন্ত্রাসী হামলার প্রভাব পড়েছে পার্শ্ববর্তী দেশগুলোতেও। জার্মানিতে পুলিশ দুই জনকে গ্রেফতার করেছে। এদের মধ্যে একজন তুরস্ক এবং রাশিয়ার উগ্রবাদী নাগরিকদের সমর্থন দিয়ে আসছিল।
পুলিশ জানায়, এরা ইসলামিক স্টেট আইএসের জন্য তহবিল ও কর্মী সংগ্রহের কাজ করছিল। তবে জার্মানিতে হামলার কোন পরিকল্পনা করছিল এমন কোন তথ্য তারা পায়নি। এছাড়া যুক্তরাজ্যেও সন্ত্রাস মোকাবেলার জন্য নিরাপত্তা রক্ষাকারী বাহিনীকে সতর্কাবস্থায় থাকার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button