ইউক্রেনে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে ৭ পুলিশসহ নিহত ২১

Ukraine crisisইউক্রেনে সরকারবিরোধী বিক্ষোভকারীদের সরাতে পুলিশী অভিযান শুরুর পর দেশটির রাজধানী কিয়েভে রক্তক্ষয়ী সংঘাত ছড়িয়ে পড়েছে। বুধবার শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত সংঘর্ষে কমপক্ষে ২১ জন নিহত হওয়ার কথা জানা গেছে। প্রেসিডেন্ট ভিক্টর ইয়ানুকোভিচ এই সংঘাতের জন্য বিরোধী দলকে দায়ী করেছেন। কিয়েভের স্বাধীনতা চত্বরে অবস্থান নেয়া প্রায় ২৫ হাজার বিক্ষোভকারীকে সরে যাওয়ার জন্য ইউক্রেনের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী মঙ্গলবার সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছিল। কিন্তু তারা অবস্থান চালিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে অনমনীয় থাকায় নির্ধারিত সময়ের কয়েক মিনিট আগে শুরু হয় পুলিশের ‘সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান’। স্বাধীনতা চত্বর ঘিরে ফেলে স্টান গ্রেনেড ফাটাতে ফাটাতে সাঁজোয়া যান আর জল কামান নিয়ে অগ্রসর হয় পুলিশ। বিক্ষোভকারীরা পেট্রোল বোমা ও হাতে তৈরি বিস্ফোরক দিয়ে পাল্টা জবাব দিতে শুরু করলে পুরো পুরো এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়।
এরপর কিয়েভের বিভিন্ন অংশে সংঘাত ছড়িয়ে পড়ে, সরকারবিরোধীদের আস্তানা হিসাবে পরিচিত একটি ভবন দূর থেকে জ্বলতে দেখা যায়। রাতভর বিস্ফোরণের শব্দে প্রকম্পিত হয় ইউক্রেনের রাজধানী, বিভিন্ন স্থান থেকে ধোঁয়া উঠতে দেখা যায়। সংঘর্ষে বুধবার সকাল পর্যন্ত সাত পুলিশসহ অন্তত ২১ জনের নিহত হওয়ার কথা জানা গেছে। এর আগে বিক্ষোভকারীরা মঙ্গলবার দিনের বেলায় প্রেসিডেন্ট ইয়ানুকোভিচের ক্ষমতা কমানোর দাবিতে মিছিল নিয়ে পার্লামেন্টের দিকে যেতে চাইলে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ বাধে। দুপুরে সরকারি দলের একটি কার্যালয়ে ভাংচুর ও লুটতরাজ চালানো হয় বলেও খবর পাওয়া গেছে। এদিকে কিয়েভের মেট্রো ট্রেন মঙ্গলবার রাত থেকেই পুরোপুরি বন্ধ রাখা হয়েছে। রাজধানীর প্রবেশপথগুলোতে বাইরে থেকে যানবাহন আসতেও বাধা দেয়া হয়।
প্রেসিডেন্ট ইয়ানুকোভিচ সংঘর্ষের জন্য বিরোধী দলকে দায়ী করেছেন। মঙ্গলবার রাতভর বিরোধী দলের সাথে বৈঠকের পর তিনি বলেন, ‘বিক্ষোভ বন্ধে যথেষ্ট দেরি হয়ে গেছে’। তবে বিরোধী দলের নেতা ভাইতালি ক্লিসকো স্থানীয় এক টেলিভিশনে বলেন, তিনি প্রেসিডেন্ট ইউনুকোভিচের সঙ্গে দেখা করে সঙ্কট উত্তরণে আলোচনার চেষ্টা করেছেন কিন্তু লাভ হয়নি। প্রেসিডেন্টের একটাই বক্তব্য, ‘বিক্ষোভকারীদের রাজপথ ছেড়ে বাড়ি ফিরে যেতে হবে’। ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন, যুক্তরাষ্ট্র ও জাতিসংঘ ইউক্রেনের এই সহিংসতার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। অবশ্য রাশিয়া এ পরিস্থিতির জন্য পশ্চিমা দেশগুলো ও ইউরোপিয়ান ইউনিয়নকে দায়ী করছে।
গত নভেম্বরে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে একটি বাণিজ্য চুক্তিতে না গিয়ে রাশিয়ার কাছ থেকে দেড় হাজার কোটি ডলার ঋণ নেয়ার পর ইউক্রেনে সরকারবিরোধী বিক্ষোভ শুরু হয়। পরে পার্লামেন্টে বিক্ষোভবিরোধী বিভিন্ন আইন পাসকে কেন্দ্র করে বিক্ষোভ সহিংস রূপ পায়। সম্প্রতি রাশিয়ার কাছ থেকে ইউক্রেন আরো দুইশ’ কোটি ডলার ঋণ নেয়ার পর নতুন করে বিক্ষোভ শুরু হয়।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button