ব্রিটেনের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের দুই তৃতীয়াংশ এলাকা জুড়ে বন্যা

UKসৈয়দ শাহ সেলিম আহমেদ: সপ্তাহের শুরুতে সোমবার শুরু মাত্রাতিরিক্ত ঝড়, বৃষ্টি, অতি বৃষ্টি আর হেভি বাতাসের ফলে ব্রিটেনের জনজীবনে বিপর্যস্ত অবস্থা দেখা দেয়া শুরু হয়। সমগ্র ব্রিটেনের জনজীবন বলতে গেলে বাধাগ্রস্ত হতে থাকে। বাতাসের প্রচণ্ড গতি আর টেম্পারেচার ড্রপ করার ফলে বাস,ট্রেন, মোটর,বিমান সর্ব ক্ষেত্রেই তীব্র যানজট ও শ্লথ দেখা দেয়। হিথরো সহ সব কটা টার্মিনালে এবং আন্তঃনগর ট্রেনে ও দূরপাল্লার বাস যাত্রা কেনসেল হতে থাকে। এতে যাত্রীদের ভোগান্তি বাড়তে থাকে। যদিও আবহাওয়া অফিস আগেই থেকে সোমবার খারাপ ও বৈরি আবহাওয়ার প্রেডিকশন রেডিও টেলিভিশন ও স্যাটেলাইট চ্যানেলগুলোতে প্রচার করেছিলো।
বড়দিন ও ক্রিসমাস সামনে থাকায় রাস্তা ঘাটে ও দোকান পাটে মানুষের উপচে পড়া ভিড় লক্ষ্য করা যায় কিন্তু আবহাওয়া অনুকূলে না থাকায় এবারকার বড়দিন ও ক্রিসমাসের পার্টি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে  শপিং করতে আসা লোকজন ভোগান্তির শিকার হন।
তার উপর পরদিন মঙ্গলবার থেকে অতিরিক্ত বৃষ্টির ফলে নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে ব্রিটেনের দক্ষিণ পশ্চিমের শহর কেন্ট, সারে, সাসেক্স, হাম্পশায়ার, গেট উইক এয়ারপোর্ট, স্কটল্যান্ড প্রভৃতি শহর ও এলাকার পানিতে তলিয়ে যায়। মানুষের ঘর বাড়ী, ব্যবসা, দোকান, পাব, এয়ারপোর্টের ভিতর ও রানওয়েতে পানিতে তলিয়ে যাওয়ার ফলে এইসব এলাকার লোকজন পানিতে আটকা পড়েন। দোকান পাট বন্ধ হয়ে যায়।সিভিল এভিয়েশন অথরিটি গেট উইক এয়ারপোর্ট এর সকল ফ্লাইট কেনসেল করে দেন।
বন্যার পানির ফলে ঐ সব এলাকার প্রায় ২৪,০০০ ঘর বাড়ীতে বিদ্যুৎ সংযোগ একেবারেই বন্ধ হয়ে যায়।পরদিন বড়দিনের ছুটি থাকায়, ক্রিস মাস ডে আলোবিহীন অবস্থায় ঐ এলাকার জনগণ পালন করেন-মোমবাতির আলোতে।
স্থানীয় কাউন্সিল, ফায়ার ব্রিগেড, জরুরী সার্ভিস সমূহ দিন রাত উদ্ধার কাজ চালাতে থাকে।
বিদ্যুৎ বিভাগ দিন রাত কাজ করে পাওয়ার সাপ্লাই রিস্টোর করতে সক্ষম হলেও বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ১,২০০ বাড়ী ঘর তখনো পাওয়ার কাট অবস্থায় রয়ে যান। জরুরী বিদ্যুৎ ইঞ্জিনিয়ার বিভাগের লোকজন বলছেন, আগামী রোববার পর্যন্ত ঐ সব এলাকার বিদ্যুৎ সংযোগ পুরোপুরি চালু করা সম্ভব হবেনা।
বৃহস্পতিবার দিন থেকে গেট উইক এয়ার পোর্ট আবার চালু করা সম্ভব হয়। পানি আস্তে আস্তে নামতে শুরু করেছে। তবে আবহাওয়া বিভাগ আজ আবার রাত থেকে অতিরিক্ত বৃষ্টি ও খারাপ আবহাওয়া সহ ৫০টি উচ্চ ফ্লাড সতর্কতা সারাদেশব্যপী জারী করেছে।
যে সব এলাকায় পানি নামতে শুরু করেছে, নতুন ফ্লাড ওয়ার্নিং তাদের মনে আবার শঙ্কা এনে দিয়েছে। তাই লোকজন শেল্টার থেকে আবার ফিরে আসছেননা, যদিও কিছু কিছু জায়গায় লোকজন ফিরতে শুরু করেছিলেন।
হাম্পশায়ারের বৃদ্ধাশ্রমে গত তিনদিন থেকে বিদ্যুৎ সংযোগ না থাকার ফলে টেম্পারেচার শূন্য ডিগ্রির নীচে বৃদ্ধ ও ভুক্তভোগীরা ভোগ করতে হচ্ছে। লোকাল অথরিটি বিকল্প ব্যবস্থায় ওয়ার্মার ক্লথ ইত্যাদি সরবরাহ করে বৃদ্ধ, বৃদ্ধাদের সুস্থ রাখার চেষ্টা করছেন।
কেন্টের ৩০০০, সারের ১,২০০ আর সাসেক্স এর ১,৫০০ বাসা বাড়ীতে এখনো বিদ্যুৎ সংযোগ পুনরায় দেয়া সম্ভব হয়নি বলে প্রাপ্ত তথ্যে জানা গেছে।
স্কটিশ ও সাউথার্ণ এনার্জি জানিয়েছে তাদের এখনো ৫০০০ গ্রাহক পাওয়ার রিকানেকটেডের অপেক্ষায় রয়েছেন।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button